খুলনার খবর।।খুলনা জেলার ফ্রিল্যান্সার ও শিক্ষিত বেকার যুবকদের পরিচালিত পাঠদান কেন্দ্রগুলো নির্বিঘ্নে চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন, খুলনা। সোমবার (৭ অক্টোবর ২০২৫) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির আহ্বায়ক ও মুখপাত্র কে. এম. জলিল এ দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, খুলনা জেলা প্রশাসকের সাম্প্রতিক নির্দেশনা অনুযায়ী বিদ্যালয় চলাকালীন সময় অর্থাৎ সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কোনো কোচিং কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না। ওই নির্দেশে বলা হয়েছে, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা–২০১২” কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে এবং নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফ্রিল্যান্সার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন মনে করে, এই সিদ্ধান্তে জেলার শত শত শিক্ষিত বেকার যুবক নতুন করে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন। তারা বলেন, “আমরা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নই। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সার হিসেবে পাঠদান করার অধিকার আমাদের রয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে কে. এম. জলিল ২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের নির্দেশনার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, “মহামান্য হাইকোর্ট স্পষ্টভাবে বলেছেন—যারা কোনো সরকারি বা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরিরত নন, তারা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কোচিং করাতে পারবেন। সুতরাং আমাদের পাঠদান কেন্দ্রগুলো কোনোভাবেই নীতিমালা লঙ্ঘন করে না।”
তিনি আরও বলেন, এই পাঠদান কেন্দ্রগুলো শুধু শিক্ষিত বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগই সৃষ্টি করেনি, বরং শিক্ষার্থীদের পাঠদক্ষতা বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের কোচিং কার্যক্রম বিদ্যালয়ের নিয়মিত সময়সূচির বাইরে—ভোর, সকাল বা বিকেল-সন্ধ্যায় পরিচালিত হয়। ফলে এটি কোনোভাবেই স্কুল বা কলেজের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে না।
সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করে বলা হয়: ১. স্কুল ও কলেজের স্বাভাবিক সময়ের বাইরে পরিচালিত ফ্রিল্যান্সারদের পাঠদান কেন্দ্র যেন নির্বিঘ্নে চলতে পারে—জেলা প্রশাসক এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
২. বৈধ ফ্রিল্যান্সার কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে “কোচিং বাণিজ্য” শব্দটি যেন বিভ্রান্তিকরভাবে ব্যবহার না করা হয়।৩. ফ্রিল্যান্সারদের উদ্যোগে পরিচালিত পাঠদান কেন্দ্রগুলোকে নিয়মিতকরণে প্রশাসনিক সহযোগিতা প্রদান করা হোক।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে কে. এম. জলিল বলেন, “আমরা শিক্ষার প্রসার চাই, সংকোচন নয়। আমাদের এই উদ্যোগ হাজারো শিক্ষিত যুবকের জীবিকা নিশ্চিত করছে এবং শিক্ষার্থীদেরও সহায়ক ভূমিকা রাখছে। খুলনা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে আমরা বিনীতভাবে আবেদন করছি—আমাদের পাঠদান কেন্দ্রগুলো যেন বৈধভাবে চালু রাখতে পারি।”
সংবাদ সম্মেলনে খুলনার বিভিন্ন এলাকায় পরিচালিত কোচিং কেন্দ্রের শিক্ষক ও পরিচালকরাও উপস্থিত ছিলেন। তারা বলেন, প্রশাসনের সদয় দৃষ্টি ও সহযোগিতা পেলে এই উদ্যোগ খুলনার শিক্ষাক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।