অদিতি সাহা, খুলনার খবর ।। খুলনার দিঘলিয়ার হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ঘনিয়ে আসতেই রঙ, তুলির আঁচড়ে সাজছে দেবী দুর্গা। কল্পনার আকাশ থেকে নেমে আসা দেবীর অনিন্দ্যসুন্দর রূপ ফুটিয়ে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় মৃৎশিল্পীরা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে তাদের শিল্পসাধনা।উপজেলার প্রতিটি পূজা মণ্ডপে এখন সাজসজ্জা, আনন্দ আর প্রস্তুতির জোয়ার। কয়েক দিনের মধ্যেই ঢাক-ঢোলের তালে পূজার ঘণ্টাধ্বনি বেজে উঠবে।
ভক্তদের ভক্তিময় স্তুতি আর উৎসবের আমেজে মুখরিত হয়ে উঠবে গোটা দিঘলিয়া।পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে মোট ৬১টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ২০ সেপ্টেম্বর (শনিবার) সরেজমিনে বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ ও প্রতিমা কারখানায় ঘুরে দেখা যায়— বাঁশ, কাঠ, সুতলি, খড় আর কাদামাটি দিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে দেবী দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশের প্রতিমা। এখন চলছে রঙতুলির ছোঁয়ায় সাজসজ্জার চূড়ান্ত কাজ।প্রতিমা তৈরির কারিগর বিকাশ পাল, দিলীপ পাল ও তাপস পাল জানান, উপকরণের দাম বেড়েছে অনেক। ফলে লাভ কম হলেও উৎসবকে ঘিরে আনন্দে ভরপুর তারা।
পূজার আয়োজনের ব্যয় বেড়েছে আয়োজকদেরও, তবু ভক্তদের উচ্ছ্বাসে ঘাটতি নেই।সেনহাটি শিব মন্দির পূজা কমিটির সভাপতি অমিত ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক বাবু তন্বয় মুস্তাফী ও কোষাধ্যক্ষ বাবু উত্তম দাস বলেন, প্রতিমা শিল্পীদের মজুরি এবার কিছুটা বাড়লেও পূজার খরচ সামলাতে চেষ্টা করছেন তারা। সরকারি বরাদ্দ হিসেবে প্রতিটি মণ্ডপে ৫০০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে বলেও জানান তারা।দিঘলিয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সৌমিত্র দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার বিশ্বাস বলেন, “খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলায় এ বছর ৬১টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
আমরা চাই, পূজার সময় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকুক এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকুক।”এদিকে দিঘলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এইচ এম শাহীন জানান, পূজা উপলক্ষে মন্দিরকেন্দ্রিক গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপে আনসার সদস্য মোতায়েন করা হবে, পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিটি মন্দিরে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, নৌবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা সার্বক্ষণিক তৎপর থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সবমিলিয়ে, দিঘলিয়ায় আসন্ন দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে এখন প্রাণের স্রোতে ভাসছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। মৃৎশিল্পীদের হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় গড়ে উঠছে দেবীর প্রতিমা, আর ভক্তদের হৃদয়ে জেগে উঠছে আনন্দ, শ্রদ্ধা ও ভক্তিময় প্রত্যাশা।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।