খুলনার খবর।।সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে সরকার। বুধবার থেকে শুক্রবার তিন দিন রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালনের সিদ্ধান্ত জানিয়ে মঙ্গলবার গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদসচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ স্বাক্ষরিত ওই গেজেটে বলা হয়েছে, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনের আপসহীন নেত্রীর মৃত্যুতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গভীরভাবে শোকাহত। সরকার এই মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যে তার মৃত্যুতে আগামী বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত (৩১ ডিসেম্বর, ১ ও ২ জানুয়ারি) রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করা হবে।
এতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালনের কর্মসূচি হিসাবে উক্ত তিন দিন বাংলাদেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।গেজেটে আরও বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মাগফিরাতের জন্য আগামী শুক্রবার (২ জানুয়ারি ২০২৬) বাংলাদেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও তার আত্মার শান্তির জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।
মঙ্গলবার সকাল ৬টায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। তিনি তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নির্বাচিত নারী সরকারপ্রধান।
১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুর জেলায় ইস্কান্দার মজুমদার ও তৈয়বা মজুমদারের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর পিতা দেশভাগের পর ভারতের জলপাইগুড়ি থেকে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে চলে যান। তাদের আদি বাড়ি ফেনী জেলায়। তিনি দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে সুরেন্দ্রনাথ কলেজে অধ্যয়ন করেন।
১৯৬০ সালে তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে তিনি ফার্স্ট লেডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং এ সময় বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সফরে অংশ নেন। তিনি যুক্তরাজ্যের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার ও নেদারল্যান্ডসের রানী জুলিয়ানাসহ বিশ্বনেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
১৯৮১ সালে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন বেগম খালেদা জিয়া। ১৯৮২ সালের ২ জানুয়ারি তিনি বিএনপিতে সাধারণ সদস্য হিসেবে যোগ দেন। পরের বছর ১৯৮৩ সালের মার্চে ভাইস চেয়ারম্যান এবং ১৯৮৪ সালের আগস্টে দলের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন।রাজনৈতিক জীবনে বেগম খালেদা জিয়া একটি ব্যতিক্রমী রেকর্ডের অধিকারী। তিনি কখনো কোনো সংসদীয় আসনে পরাজিত হননি। ১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে তিনি পাঁচটি ভিন্ন আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা তিনটি আসনেই বিজয় লাভ করেন।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বেগম খালেদা জিয়ার ভূমিকা ও অবদান ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থাকবে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।