আমজাদ হোসেন নওগাঁ থেকে।।মাতব্বর নেতৃত্বে জোরপূর্বক তালাকের পর প্রাপ্ত মোহরানা আদায় করতে এসে জীবনের শেষ বলি হলেন পাখি আক্তার (২৬) নামে এক মহিলা।
এমন ঘটনা ঘটেছে নওগার মান্দা উপজেলার দাওয়াইল গ্রামে।বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) উপজেলার পরানপুর ইউপির দাওয়াইল-হলুদঘর সীমান্ত এলাকায় এ রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
নিহত মহিলার রক্ত মাখা লাশ হলুদঘর মোল্লাপাড়া ব্রীজ সংলগ্ন পাকা রাস্তার পার্শ্বে থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত পাখি আক্তার উপজেলার ভারশোঁ ইউপি ও গ্রামের লবির উদ্দিন সরদারের মেয়ে।
স্হানীয়রা মহিলার মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।
স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে,নিহত পাখি আক্তারের তিন মাস পূর্বে মোবাইল ফোনের পরিচয়ের সুত্র ধরে দাওয়াইল গ্রামের জিয়ারুলের ছেলে তাইজুল ইসলাম (১৭) এর সাথে বিবাহ হয়। এরপর গত ২০-২৫ দিন পূর্বে মাতব্বর রাজ্জাকের নেতৃত্ব ১ লক্ষ টাকা মোহরানার পরিবর্তে মাত্র ২০ হাজার টাকায় তালাক দেওয়া হয়।ছেলে পক্ষের মাতব্বর সেজে মেয়েকে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে রফাদফা করেছেন মাতব্বর রাজ্জাক। ১লক্ষ মোহরানার পরিবর্তে মেয়ে দাবি ছিল ৮০ হাজার টাকা। সেই ৮০ হাজার টাকা হলে তালাকে রাজি হয়েছেন মেয়ে। কিন্তু মেয়ের পাওনাটা পূরণ হতে দেননি দাওয়াইল গ্রামের রাজ্জাক মাতব্বর। তিনি কৌশলে ছেলে পক্ষের মাতব্বর সেজে মাত্র ২০ হাজার টাকায় তালাক করান নিহত পাখিকে।সেই ২০ হাজার টাকাও থেকে মাতব্বর রাজ্জাক কর্তন করে মাত্র ১৫ হাজার টাকা দিয়েছেন।আর বাঁকী ৫ হাজার টাকা পকেস্থ করেছেন মাতব্বর রাজ্জাক।
মোহরানা বাঁকি ৫ হাজার টাকা আদায়ের জন্য প্রায়দিন অসহায় মহিলা মাতব্বর রাজ্জাকের সাথে দেখা করতেন।ঘটনার দিন রাতেও মাতব্বর রাজ্জাকের সাথে ঘোরাঘুরি করতে দেখেছেন স্থানীয়রা । এজন্য সন্দেহের তীর রাজ্জাক মাতব্বর ও নিহতের স্বামী পরিবারের দিকে।
গুঞ্জন আছে, ঘটনার দিন রাত ৩ টা পর্যন্ত ওই মহিলা মাতব্বরের সাথে ছিলেন।আর সকালে লাশ হয়ে পড়ে আছেন।
নিহত পাখির বাবা লবির উদ্দিন সরদার জানান,মৃত্যুর জন্য মাতব্বর রাজ্জাক ও নিহতের স্বামী পরিবারের লোকজন দায়ী। সাথে আরো কিছু স্থানীয় মাতব্বর। কয়েক আগে নিহতের শাশুড়ি আমার বাড়িতে গিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে এসেছেন।
এব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শী হলুদঘর গ্রামের রশিদুল ইসলাম কবিরাজ জানান,ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৯ টার দিকে ওই মহিলাকে মাতব্বর রাজ্জাকের সাথে ঘুরাঘুরি করতে দেখেছি।
ফেটগ্রামের মাসুদ নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী যুবক জানান,ওই রাতে রাজ্জাক মতববরের সাথে ঘুরতে দেখেছি। একই কথা জানান,হলুদঘর গ্রামের আলিমদ্দীন, গোপালপুর বাজার এলাকার সাইফুলসহ অনেকে।
এব্যাপারে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনসুর রহমান জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। হত্যার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।