মোঃ জসিম উদ্দিন তুহিন,যশোর জেলা প্রতিনিধি।।যশোরের চৌগাছায় গ্রেপ্তারের পর বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজিয়ে ইসলামী ছাত্র শিবিরের দুই নেতাকে গুলি করার অভিযোগে দায়ের হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় কনস্টেবল সাজ্জাদুর রহমানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে সাজ্জাদুরকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম জানান, এর আগের দিন (৯সেপ্টেম্বর) একই মামলায় চৌগাছা থানার তৎকালীন ইন্সপেক্টর মো. আতিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া দুজনই ২০১৬ সালে যশোর চৌগাছা থানায় কর্মরত ছিলেন।
প্রসিকিউশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে মোটরসাইকেলে যাওয়ার পথে ইসলামী ছাত্রশিবিরের দুই নেতাকে আটক করা হয়। প্রথমে তাদের থানায়, পরে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর আদালতে হাজির করার কথা থাকলেও চুক্তি ভঙ্গ করে আগের রাতেই চোখ বেঁধে তাদের অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হাঁটুতে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করা হয়।পরদিন আদালতে হাজির করে বলা হয়, তারা ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও শেষ পর্যন্ত দুই ছাত্রশিবির নেতারই পা কেটে ফেলতে হয়।প্রসিকিউটর তামিমের মতে, এটি ছিল রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর সুপরিকল্পিত নির্যাতনের অংশ। তিনি বলেন, সেই সময় বাংলাদেশে নানা জায়গায় এ ধরনের ঘটনা ঘটতকারও হাঁটুতে, কারও হাতে গুলি করে আজীবনের জন্য বিকলাঙ্গ করে দেওয়া হতো।
যশোর চৌগাছার ঘটনাটি সেই ধারাবাহিকতারই অংশ, তাই এটি মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিচার করা হচ্ছে। আইনজীবীরা মনে করছেন, এই মামলাটি কেবল দুই ব্যক্তির ওপর হামলার বিচার নয়—বরং বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিংসতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে সামনে নিয়ে আসছে।
মানবাধিকার কর্মীদের দাবি, এ ধরনের মামলার সুষ্ঠু বিচার হলে ভবিষ্যতে রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের সংস্কৃতি কমবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।