সোহেল হোসেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি// নির্বাচন হয়েছিল ২০১১ সালে। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি।দীর্ঘ ১১ বছর আগে নির্বাচিত হয়েই ইউনিয়ন পরিষদ চালাচ্ছেন চেয়ারম্যানরা। প্রায় এক যুগ ধরে একই চেয়ারে বসে তাদের কর্ম সম্পাদন করে চলেছেন। তবে সীমানা জটিলতার কারণকে দায়ী করছেন চেয়ারম্যানরা।
জানা গেছে, সীমানাসংক্রান্ত জটিলতার মামলার কারণে লক্ষ্মীপুরের আটটি ইউনিয়ন পরিষদ ১১ বছর ও একটিতে ছয় বছর ধরে নির্বাচন হচ্ছে না। এসব ইউনিয়ন পরিষদে দায়িত্ব পালন করছেন আগের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানেরা। দীর্ঘ সময়ে নির্বাচন না হওয়ায় এসব ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা নাগরিকদের সঙ্গে স্বেচ্ছাচারী আচরণ করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের তথ্যমতে, নির্বাচন না হওয়া ইউনিয়ন পরিষদগুলোর মধ্যে রয়েছে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়ন পরিষদ, দালাল বাজার ইউনিয়ন পরিষদ, দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়ন পরিষদ, বাংগাখাঁ ইউনিয়ন পরিষদ, লাহারকান্দি ও তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ এবং কমলনগরের তিন ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে রয়েছে সাহেবের হাট, চরকালকিনি ও পাটওয়ারী হাট ইউনিয়ন পরিষদ।
সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জে ২০১৬ সালে সর্বশেষ নির্বাচন হয়। এছাড়া অন্য আটটি ইউপিতে সর্বশেষ নির্বাচন হয় ২০১১ সালে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘ সময়ে ভোট না হওয়ায় এসব ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা একক আধিপত্য বিস্তার করেছেন। আবার কোনোটিতে জনপ্রতিনিধির মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান থাকলেও ঠিকমতো পরিষদে আসেন না। ফলে এলাকার উন্নয়ন কার্যক্রম থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মকাণ্ডে পদে পদে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এসব ইউনিয়নের কয়েক লাখ নাগরিককে।
৩নং দালাল বাজার ইউপির বাসিন্দা আবদুর রশিদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যান ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানরা দায়িত্ব পালন করায় তাদের জবাবদিহির সুযোগ কম থাকছে। ফলে এসব এলাকার নাগরিকরা প্রত্যাশিত সেবা পাচ্ছে না। হয়রানির শিকার হন সেবা গ্রহীতারা।
৬নং বাংগাখাঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, সীমানা জটিলতার কারণে নির্বাচন বন্ধ রয়েছে। তবে এতে নাগরিক সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে না। সব সময় নাগরিকদের সেবা দেওয়ার জন্য নিয়োজিত রয়েছি।
৪নং চররুহিতা ইউপির বাসিন্দা মো. ফারুক বলেন, এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন তো হচ্ছেই না, এমনকি সন্তানদের জন্মনিবন্ধন নিতেও ভোগান্তি পোহাতে হয়। বিভিন্ন উৎসব কিংবা দুর্যোগের সময় অন্য ইউনিয়নের মতো সরকারি সহায়তা থেকেও আমরা বঞ্চিত হই।
দালাল বাজার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সোহেল বলেন, আমরাও নির্বাচন চাই। নির্বাচন হলে কোনো সমস্যা নেই। তবে সীমানা জটিলতায় নির্বাচন বন্ধ রয়েছে। এখানে আমার কোনো হাত নেই।
৪নং চররুহিতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কবির পাটওয়ারী বলেন, দীর্ঘ সময় নির্বাচন না হওয়ায় আমরা নিজেরাও বিরক্তবোধ করছি। সীমানা জটিলতার মামলা নিষ্পত্তি না হলে নির্বাচন হওয়া অসম্ভব। তবে নির্বাচন না হলেও কোনো মানুষ ভোগান্তিতে নেই।
কোনো কোনো স্থানে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা তাদের চেয়ার ধরে রাখতে মামলা করে জটিলতা বাড়িয়েছেন। এজন্য সরকারকেই মামলা নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিতে হবে। নির্বাচন না হওয়ায় নাগরিকরা অধিকার বঞ্চিত হচ্ছেন।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।