মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন তুহিন, যশোর জেলা প্রতিনিধি // যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যবিপ্রবি ছাত্র নাইমুল ইসলাম রিয়াদ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রওশন ইকবাল শাহীকে আটক করেছে র্যাব যশোরের সদস্যরা। নিজ এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। শাহী কাজীপাড়া তেতুল তলা এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৬ যশোরের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ নাজিউর রহমান।আজ শনিবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, রিয়াদ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে যায় ছাত্ররা। ওই ঘটনার জের ধরে ২০১৪ সালের ১৪ জুলাই দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে রিয়াদ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে ১৫ জুলাই রিয়াদের মামা রফিকুল ইসলাম রাজু বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২/৩ জনকে আসামি করে কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। প্রথমে থানা পুলিশ পরে সিআইডি মামলাটির তদন্ত করে।মামলার চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। ২০১৪ সালের ১৬ মে কেন্দ্রীয় কমিটি সুব্রত বিশ্বাসকে সভাপতি ও শামীম হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করে।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটিতে পদবঞ্চিতরা এর বিরোধিতা করতে থাকে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে। রিয়াদ পদবঞ্চিত গ্রুপের কর্মী ছিলেন। ১৩ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি ক্যাফেটরিয়ায় ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। ইফতার পার্টিতে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা অনুপস্থিত ছিল। এ নিয়ে কমিটির নেতাদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনার জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয় ফটকে পদবঞ্চিত কয়েকজনকে মারপিট করা হয়। এ নিয় উত্তেজনা চলতে থাকে। ১৪ জুলাই দুপুরে নাইমুল ইসলাম রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয় ফটকে বন্ধুদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিল। এসময় ডিকু, ভুট্টো, শাহী, জাবের, জিসান, সজীব শহরের দিক থেকে কয়েকটি মোটরসাইকেলে এসে তাদের ঘিরে ফেলে। এসময় সুব্রত ও শামীমের নির্দেশে শাহী ফাঁকা গুলি করলে ছাত্ররা ছোটাছুটি শুরু করে। এর মধ্যে সজীব তার হাতে থাকা ছুরি দিয়ে প্রথমে রিয়াদকে আঘাত করে। এরপর অন্যরা তাকে কুপিয়ে জখম করে ফেলে পালিয়ে যায়। হাসপাতালে নেয়ার পর রিয়াদ মারা যায়।মামলার তদন্ত শেষে আসামিদের দেয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকায় ওই ১১জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
অন্যরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক শামীম হাসান, যবিপ্রবির ছাত্র ফয়সাল তানভীর ও আজিজুল ইসলাম, যশোর শহরের পুরাতন কসবা এলাকার আজিজুল হক খোকনের ছেলে সজিবুর রহমান, শহরের মিশনপাড়ার হাফিজ আহমেদের ছেলে সালসাবিল আহমেদ জিসান, পুরাতন কসবা কাজীপাড়া এলাকার মৃত আবদুল খালেকের ছেলে ইয়াসিন মোহাম্মদ কাজল, ঝুমঝুমপুর চান্দের মোড়ের এসএম নাসির উদ্দিনের ছেলে এসএম জাবেদ উদ্দিন, শহরের খড়কি কামার দীঘিরপাড় এলাকার মতিয়ার রহমানের ছেলে কামরুজ্জামান ওরফে ডিকু এবং কারবালা এলাকার মফিজুল ইসলামের ছেলে ভুট্টো।এছাড়া হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল ও খুলনার বাবুখান রোড়ের হাফিজুর রহমানের দুই ছেলে মফিজুর রহমান ও মোস্তাক হোসনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।