এস.এম.শামীম দিঘলিয়া খুলনা // নদী বেষ্ঠিত দিঘলিয়া উপজেলা জুড়ে যোগাযোগের জন্য রয়েছে ১৭ টি খেয়াঘাট ও ২ টি ফেরিঘাট। এ সকল ঘাট থেকে সরকার বেশ মোটা অংকের টাকা রাজস্ব পায়, যা অত্র এলাকার ও দেশের উন্নয়ন এর জন্য ভুমিকা রাখে। দিঘলিয়া উপজেলার ১৭টি ঘাটের মধ্যে বারাকপুর ইউনিয়ন এর আড়ুয়া ও কামারগাতী খেয়াঘাট দুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, পার্শবর্তী তেরখাদা, গাজিরহাট ও কালিয়া উপজেলার সাথে দিঘলিয়া হয়ে খুলনার সাথে যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আচ্ছে। অত্র অঞ্চলের বসবাসকারী মানুষেরা দীর্ঘদিন ধরে ঘাট দুটির দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ জানালেও কতৃপক্ষ রহস্যময় আচারন করে আচ্ছে এবং ঘাটের ইজারাদারের বিরুদ্ধে কোনোরুপ ব্যাবস্হা নিতে দেখা যায়নি।
এবছর কোন এক অজানা কারনে কোন ইজারাদার ঘাট নেয়ার জন্য সিডিউল কেনেনি এবং পহেলা বৈশাখ হতে ভূমি অফিসের অধিনে রাজস্ব আদায় চলছে, যা খাস কালেকশন নামে পরিচিত। গত ১৪ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার সকালে মহেশ্বরপাশা কালিবাড়ি তহসিল অফিসের নায়েব বাবু জগন্নাথ ঘাট দুটিতে যায় এবং উক্ত ঘাটে আগে জারা নৌকার মাঝি ছিল তাদের উপর ঘাট চালানোর নির্দেশ দিয়ে চলে যান এযাবৎকাল তকে আর দেখাযায়নি। দিন শেষে মাঝিরা যে টাকা জমাদেন নায়েব বাবু সেটিই জমা করেন, কোন তদারকি ছাড়াই। এই সুযোগে কুচক্রী মহলটি তহশিল অফিস এর সাথে যোগসাজশে আদায় কম দেখিয়ে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। অথচ গতবার যে রাজস্ব সরকারী কোষাগারে জমা হয়েছিল, বর্তমান জমার গড় (প্রতিদিন) হিসাব করলে এখন তা অর্ধেকেরও কম। অথচ বতর্মানে যে টাকা কোষাগারে জমা হচ্ছে, তার থেকেও বেশি দিয়ে ঘাট নেয়ার মত ইজারাদার থাকলেও ইজারা দেওয়া হচ্ছে না।
এ বিষয়ে এলাকার কিছু মানুষ জানান, চালাকি করে একটি চক্রদ্বারা এ সকল ঘাট এ ভাবেই নিজেদের পকেট ভারি করার জন্য খাশ দেখানো হচ্ছে। এই ঘাট দুটি নিয়ে তদারকি করলেই বেরিয়ে আসবে, এর সাথে জড়িত রাঘব বোয়ালদের নাম সহ অজানা অনেক তথ্য। নিজস্ব স্বার্থে যারা সরকারী রাজস্ব ধংশ করেছে এখনি তাদের চিহ্নিত করে, জনগনের সামনে তাদের মুখশ খুলে দিতে হবে এবং আইনের কাঠগড়ায় এনে দেশ ও জাতির উন্নয়নকে তরান্বিত করতে সাংবাদিক সহ সুশিল সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
এবিষয়ে খোঁজ খবর করতে যেয়ে জানা যায়, প্রভাবশালী একটি গ্রুপ ঘাটের রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে অথবা কম দেখিয়ে নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করার পায়তারা করছে। এই গ্রুপের নেতৃত্বে আছে দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলাম, সাথে উপজেলা পরিষদের কিছু কর্মকতা এই সিন্ডিকেট এর সাথে জড়িত। তিনি ইতিমধ্যে দুটি গ্রুপের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন, ঘাটের ইজারা দেওয়ার কথা বলে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি গ্রুপের প্রতিনিধি এ প্রতিবেদককে জানান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলাম আমার কাছ থেকে সাড়ে পাঁচ লক্ষ (৫,৫০,০০০/=) টাকা নিয়েছে, আড়ুয়া ঘাটের ইজারা দেওয়ার কথা বলে। তিনি আমাকে ঘাট ও দিচ্ছে না, আবার আমার টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। আমি জানতে পেরেছি তিনি আরও একজন এর কাছ থেকে কামারগাতি ঘাট এর জন্য আট লক্ষ (৮,০০,০০০/=) ও আড়ুয়া ঘাটের জন্য সাত লক্ষ (৭,০০,০০০/=) টাকা নিয়েছে এবং বর্তমানে খাস কালেকশন এর আড়ালে মূলত তার লোকজনই ঘাট পরিচালনা করছে। এছাড়াও মহেশ্বরপাশা কালিবাড়ির তহসিল অফিসের নায়েব বাবু জগন্নাথ ঘাট দুটিতে যেদিন (১৪ এপ্রিল) এসেছিলেন, সেদিন তিনি পঞ্চাশ হাজার টাকা (৫০,০০০/=) উৎকোচক নিয়ে সরে পড়েন, এরপর থেকে তাকে আর দেখা যায়নি।
এবিষয় স্হানীয় এক আওয়ামী লীগের নেতার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এই ঘাট দুটির অনিয়ম ও দূরর্নীতি নিয়ে ঐ এলাকার মানুষের অনেক গুলো অভিযোগ এর প্রেক্ষিতে আমি স্হানীয় সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদীর কাছে বিষয়টি উপাস্হাপন করলে তিনি স্হানীয় প্রশাসন কে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে নির্দেশদেন। কিন্তু আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি খাস আদায়ের নামে ঐ মহলটি গোপনে ঘাট দুটি নিয়ন্ত্রণ করছে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ঘাট দুটি ভূমি অফিসের নিয়ন্ত্রনে পরিচালিত হচ্ছে (খাস কালেকশন হচ্ছে), ব্যাক্তি কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। আর ঘাটের নাম করে যদি কেহ আর্থিক লেনদেন করে থাকে তবে সেটা তার ব্যাক্তিগত বিষয়, আমি এ বিষয়ে অবগত নই।
কিন্তু খবর নিয়ে জানাযায়, এই ঘাটের সম্পূর্ণ দেখভালের দায়িত্ব ইউএনওর দপ্তরের আওতায়, তিনি বিষয়টি না জানার ভান করে দায়িত্ব এড়িয়ে যান।
উল্লেখ্য এ বিষয়ে সরেজমিনে সাংবাদিকদের একটি দল তথ্য সংগ্রহ করতে ঘটনাস্থল ও বিভিন্ন দপ্তরে গেলে, তন্মধ্যে এক সাংবাদিক কে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলাম মুঠোফোনে হুমকি-ধমকি দেন এবং আজকের মধ্যে তাকে চেয়ারম্যান এর দপ্তরে দেখা করতে বলেন।এলাকাবাসী এবিষয়ে উদ্ধোতন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।