মোঃ আলমগীর হোসেন, লোহাগড়া(নড়াইল) প্রতিনিধি // নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় মধুমতি নদীর ভাঙনে পাল্টে যাচ্ছে ইতনা,কোটাকোল, শালনগর ইউনিয়নের মানচিত্র। মধুমতি নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনের ফলে এই সকল ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম নদী গর্ভে বিলিন হতে চলেছে। এ বছরও নদী ভাঙ্গন অব্যহত রয়েছে। এ সমস্ত গ্রামের লোকজন নদীর ওপারে ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্দ ও বুড়াইচ ইউনিয়নে আশ্রয় নিয়েছে। মধুমতি নদীর তীরবর্তী শালনগর ইউনিয়নের রামকান্তপুর, শিয়েরবর গ্রাম, চর আজমপুর, মন্ডলবাগ, চর গোপালপুর খেয়াঘাট, চাকশী, নওখোলা মিয়াপাড়া, চরশালনগর, কাশিপুর, মাকড়াইল ও চর মাকড়াইল, রামচন্দ্রপুর, মল্ডলবাগ এলাকায় বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও পাকা রাস্তা মধুমতি নদীতে ভেঙে যাচ্ছে।
ভাঙ্গন কবলিত গ্রামের বসবাসকারী লোকজন নদী ভাঙ্গনের ভয়ে তাদের বাড়ীঘর ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের গাছপালা কেটে কম দামে বিক্রি করে দিচ্ছে। মাকড়াইল গ্রামের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাংশ ইতিমধ্যে নদীতে ভেঙ্গে গেছে এবং ওই গ্রামে অবস্থিত বাংলালিংকের মোবাইল টাওয়ার অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। শিয়েরবরের হাট রক্ষার জন্য নদীতে বালুর বস্তা (জিও ব্যাগ) ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া হলেও সম্প্রতি নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করায় ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী হাটটি। একই রকম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, মন্ডলবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মল্ডলবাগ আল-নুর জামে মসজিদ, নওখোলার আল-হেরা দাখিল মাদ্রাসা, চাকশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রামচন্দ্রপুর গ্রামের একটি মসজিদসহ শতাধিক বাড়ীঘর ও ফসলি জমি।
নদী ভাঙ্গনের শিকার মন্ডলবাগ গ্রামের নূর মোহাম্মদ ও কামরুল শেখ বলেন, এ বছর মধুমতি নদী ভেঙ্গে গ্রামের পাকা রাস্তা, বসতবাড়ী গাছগাছালী ও ফসলী জমি নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। চর খোলাবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা জিন্ন মিয়া, সাত্তার মিয়াসহ অনেকে জানান ওই গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী নওখোলা, চরশালনগর, চরকাশিপুর গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার বাড়ীঘর সরিয়ে নিয়ে নদীর ওপার বসবাস করছে। এই মুহুর্তে শিয়েরবরের হাট ও নদী ভাঙ্গন কবলিত প্রামগুলো রক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন না করলে এলাকার মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাবে।
কয়েক বছর যাবৎ মধুমতি নদী ভাঙ্গনের ফলে ইউনিয়নের কাতলাশুর, চরগোপালপুর, চাকশী, চরখড়কদিয়া, চরশালনগর, চরমাকড়াইল গ্রামের বেশির ভাগ মানুষের জমিজমা নদীর ওপার চলে যাওয়ায় তারা সেখানে ঘরবাড়ি বানিয়ে বসবাস করছে। অন্য ইউনিয়নে বসবাস করায় তারা সেখানকার ভোটার হয়ে গেছে। এভাবে ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম নদী ভাঙ্গনের ফলে ইউনিয়নের পুরানো মানচিত্র পাল্টে গেছে। কালিয়া উপজেলার নওয়াপাড়া, ইসলামপুর, বড়দিয়া-মহাজন, বারইপাড়া, শুক্তগ্রাম এলাকায় নতুন করে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী স্বপন কুমার জানান, জন-গুরুত্বপুর্ন স্থাপনা ঝুকির মধ্যে সেগুলো জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া নদী ভাঙ্গনের বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে নদী ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।