পরেশ দেবনাথ,কেশবপুর,যশোর // কেশবপুরে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত-এর জন্মস্থান সাগরদাঁড়ি পরিদর্শন করলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ।
তিনি হেলিকপ্টারযোগে আজ ৪ নভেম্বর (শুক্রবার) সকালে মহাকবির জন্মস্থান সাগরদাঁড়ি (মধু মাঠে) আসেন। হেলিকপ্টার থেকে নেমে আসার সাথে সাথেই তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান কেশবপুর উপজেলা কমিশনার (ভূমি) মোঃ আরিফুজ্জামান, কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে ডা: অনুপম সরকার এবং সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত।
এরপর মধুপল্লীতে আগমনের সাথে সাথেই সাগরদাঁড়ি মধুপল্লীর কাস্টডিয়ান আইরীণ পারভীন ও ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটি, গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থা কেশবপুর উপজেলার সভাপতি শামীম আখতার মুকুল তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
পরবর্তীতে তিনি মাইকেল মধুসূদন দত্তের শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত (মধুপল্লী) পৈত্রিক বাড়ি, দেবালয়, মধুসূদন জাদুঘর ও কপোতাক্ষ নদ পাড় ঘুরে-ঘুরে দেখেন। এখানকার নান্দনিক সৌন্দর্য, পরিস্কার পরিছন্নতা ও মনোমুগ্ধকর পরিবেশ দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন। এছাড়াও কবির ব্যবহৃত আসবাপত্র দেখে খুশি প্রকাশ করেছেন।
পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি মনে করি যে, কবিদের কোন জাত থাকা উচিত না। সেই অতিতে আমরা দেখেছি মানুষের মধ্যে এমন একটা ভাব ছিলো যে, ব্রাহ্মণ অথবা নমঃশূদ্র এই ভাব, এইগুলোর কোন দরকার নেই। যার যতটুকু যোগ্যতা তিনি যদি সেই যোগ্যতা অর্জন পারে তবে তার কোন জাত থাকা উচিত না। মাইকেল মধুসূদন দত্ত যখন খ্রিষ্টান ধর্ম অবলম্বন করলেন, উনিতো একজন কবি ছিলেন। যার কবিতা আমাদেরকে সবসময় অনুপ্রেরণা দিয়েছে।
আমাদেরকে বলেছে যে, কিভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে,কিভাবে আন্দোলন করতে হবে,কিভাবে ভাষা শিখতে হবে, কিভাবে আমরা বাঙালীরা বিদেশিদের মতো হতে পারি, সবকিছু তার কাছ থেকে পাওয়া। উনি যখন খ্রিস্টান হয়ে গেলেন তখন তাকে তার পিতা ত্যাজ্যপুত্র করলেন। এইটা তার বাবার ইচ্ছা তখনকার যা ছিলো এই পরিপেক্ষিতে আমি বলতে চাই, সেটা না হলেও বোধ হয় আমরা তার কাছ থেকে আরো অনেক কিছু পেতে পারতাম। এ দেশের মানুষকে তথা সাগরদাঁড়ি, যশোর শুধু নয়, বাংলাদেশ আরও উপকৃত হতো। আজকের এই দিনে আমি মনে করি, উনার যে কীর্তিগুলো আমি দেখলাম, আর যারা এখানে আসেন তারা প্রত্যেকেই যদি কবির ঐতিহ্য ও তার চেতনা ধারণ করতে পারি তাহলে আমরা আমাদের দেশকে উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবো।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যিনি এই ধরনের প্রত্নতন্ত্র অধিদপ্তরের বিভিন্ন জায়গায় যা-যা আছে সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। যার ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আরো অনেক কিছু শিখতে পারবে। আজকে এখানে এসে মনে হলো যেখানে যেখানে অবহেলিত যে ঘর ও স্মৃতি চিহ্ন আছে, সবগুলোকে যেন সরকারের পক্ষ থেকে এমন করে করা হয়, যাতে সবাই অনেক কিছু শিখে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। পরিশেষে তিনি মহাকবির জন্মস্থান সাগরদাঁড়িতে একটি ১০ শষ্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণের জন্য সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন।
পরিদর্শনকালে আরো উপস্থিত ছিলেন, কেশবপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আরিফুজ্জামান, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোঃ বেলাল হোসেন, মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আবাসিক মেডিকেল অফিসার অনুপ কুমার বসু, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা: সমরেশ কুমার দত্ত, ডা: নাজিয়া নওরিন জিসান, ডা: জি এম এস কে ডালিম, ডা: ইমদাদ হোসেন, কেশবপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শুভ্র প্রকাশ দাস, ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটি, গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থা কেশবপুর উপজেলার শাখার যুগ্ন-সম্পাদক সাংবাদিক এনামুল হাসান নাঈম, প্রচার সম্পাদক মোস্তফা কামাল, ফটো সাংবাদিক মুফতি তাহেরুজ্জামান তাছু, সাংবাদিক কামরুজ্জামান রাজু, আক্তার হোসেন প্রমূখ।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।