মুহাম্মাদ ফরহাদ মোল্লা,খুলনা প্রতিনিধি// রূপসায় নৈহাটি ইউনিয়নে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন সড়ক হতে সিগমা সী-ফুডের পাশ দিয়ে বাগমারা দক্ষিণ পাড়া শাহজাহান হাজীর মৎস্য ঘের পর্যন্ত মদনার খালের পাশ ঘেঁষে ১৪ ফুট প্রশস্ত প্রায় ৯ শত ফুট দৈর্ঘ্য রাস্তাটি সংস্কারের অভাবে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর।ঐ এলাকায় প্রায় ৫ হাজার লোকের বসবাস। বর্ষা মৌসুম এবং জোয়ারের পানিতে বছরের অধিক সময় গৃহবন্দী থাকতে হয় শতশত পরিবারের শিশু,বয়স্ক নারী-পুরুষ সহ হাজার হাজার লোকের।
বর্তমান যুগে রাস্তা সংস্কারের অভাবে এরকম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যা অকল্পনীয়। ভুক্তভোগীদের দাবি জনপ্রতিনিধিরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের আশ্বস্ত করলেও রাস্তা সংস্কারে নেননি কোন পদক্ষেপ সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তির কাছে রাস্তা সংস্কারের দাবিতে গিয়ে ফলাফল না’পেয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন শতাধিক পরিবারের লোকজন। এলাকায় বসবাসকারী জনসংখ্যার ভেতরে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা গামী ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা আছে প্রায় ৫ শতাধিক। চলাচলের উপযোগি রাস্তা না’থাকায় এ সকল ছাত্র-ছাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভাগের কবলে পড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। এমনকি শিক্ষা উপকরণ নিয়ে পানিতে সাঁতরিয়ে চলাচল করতে হয়। শিশু ছাত্ররা পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ঘটনাও আছে। র্ভবতী মহিলা ও অসুস্থদের চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। মৃত ব্যক্তির সৎকার করতে গিয়ে ঘাম ঝরাতে হয় এ এলাকার অধিবাসীদের। এলাকার জনগণের জীবনযাত্রার মান অনুন্নত হওয়ায় অসংখ্য কাঁচা বাথরুম রয়েছে। সেগুলো পানিতে তলিয়ে দুর্গন্ধ ও জীবাণু প্রবাহিত হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। যারদরুন ডায়রিয়াসহ চুলকানি- পাঁচরা সকলের লেগেই থাকে। ভুক্তভোগী মৃত হানিফ হাওলাদারের ছেলে মোঃ খোকন হাওলাদার বলেন- রাস্তাটির এমন দুরবস্থা থাকায় কেউ মারা গেলে বা অসুস্থ হলে পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে হয়।
আক্ষেপ করে বাইতুর মামুর জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা আরিফুল ইসলাম বলেন- রাস্তাটির সংস্কারের অভাবে সবসময় পানিতে তলিয়ে থাকে ও কাঁদা হয়ে থাকায় মুসল্লিরা নামাজ পড়তে মসজিদে যেতে পারে না। অনেক সময় ইমাম হয়ে আমি একাই নামাজ আদায় করি। পাশাপাশি স্কুল- মাদ্রাসার ছেলেমেয়েরা বইয়ের ব্যাগ নিয়ে স্কুল ড্রেস পড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রওনা হলে মাঝে মাঝে আছাড় খেয়ে পড়ে যায়। তখন তারা ভিঁজে গিয়ে আর স্কুলে যেতে পারে না।
ঐ সময় খুলনা পাইনিয়ার কলেজের ছাত্রী তামান্না বলেন-এই পথ দিয়ে যাওয়া আসায় শুধু আমার না, সবারই অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। এখানে কেউ অসুস্থ হলে, গর্ভবতী নারীদের নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে অনেক অসুবিধা হয়।অনেক সময় আমাদের ভেঁজা জামাকাপড় ও স্যান্ডেল নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। আমরা দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চাই।নিউজ এর তথ্য অনুসন্ধান করতে সরেজমিনে গেলে নার্সারিতে পড়া শিশু আব্দুল্লাহ কাছে এসে ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলায় বলে এই রাস্তা দিয়ে যেতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। আমাদের বই খাতা ভিঁজে যায়। আমরা যেন স্কুলে যেতে পারি। সেজন্য এই রাস্তাটি ভালো করে দেবেন।
স্থানীয় দন্ত চিকিৎসক ইমাম হোসেন বলেন-এই রাস্তাটা নিয়ে আমরা যারা এই এলাকায় বসবাস করছি তারা খুবই দুর্ভোগ পোহাচ্ছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মেম্বার, মহিলা মেম্বার উনারা নির্বাচনের সময় এই এলাকায় এসে রাস্তার দুরবস্থা দেখে আমাদেরকে অনেক আশ্বস্ত করেছিলেন। এখন কোন খোঁজ খবর নেন না। তারা আমাদেরকে ন্যূনতম মানুষ মনে করেন না। এ রাস্তার ব্যাপারে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও আমাদের দুরবস্থা নিরাশনে তারা কোন পদক্ষেপ নেননি।
রাস্তাটির অবস্থা সম্পর্কে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ ইলিয়াছুর শেখের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন- আমার হাতেই প্রথম এই রাস্তাটি তৈরি হয়েছিল। একজন ইউপি সদস্য পরিষদ থেকে যে টাকা বরাদ্দ পায় তা’দিয়ে এই রাস্তার কাজ করা সম্ভব না। রাস্তাটি মেরামত করতে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা খরচ হবে। তাই উপজেলা থেকে ইঞ্জিনিয়ার এনে মাফঝোপ কমপ্লিট করে স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদীর দপ্তরে পাঠিয়েছি। আশা করছি অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।