খুলনার খবর // গত তিন বছরের চেয়ে এবারের শীত হবে বেশি। আন্তর্জাতিক আবহাওয়াবিদগণ জানাচ্ছেন ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে নির্ধারিত সময়ের আগে শীত শুরু হয়ে থাকবে আগামী বছরের এপ্রিল পর্যন্ত। এবার শীত সেভাবেই শুরু হয়েছে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ অর্থাৎ কার্তিক মাসের মাঝামাঝিতেই শীত জেঁকে বসেছে হিমালয় পাদদেশীয় পঞ্চগড়সহ উত্তরের সকল এলাকায়। দিনে দিনে মারকারির লেভেল শুধু নিচেই নামছে।
এই সময়টায় হেমন্তের অগ্রহায়ণের মধ্যভাগে ঘন কুয়াশা ও শিশির ঝরছে শীত মৌসুমের মতো। গ্রামে সকাল-সন্ধ্যায় উত্তরের হুহু বাতাসে অনেক বাড়িতেই লেপ বের করতে হয়েছে। এখনই শীত কাবু করে তুলেছে। বেড়েছে শীতজনিত রোগব্যাধি।শহরাঞ্চলেও কাঁথা-কম্বল বের করতে হয়েছে। শহরাঞ্চলেও বেড়ে যাচ্ছে রোগ-ব্যাধি। এই সময়ে শহরে গোধূলি বেলা বেশিক্ষণ থাকছে না। সন্ধ্যার আগেই শীত জেঁকে বসে। হেমন্তকালের প্রকৃতির এই আলামত জানিয়ে দেয় শীত নেমেই গেছে। বড় নগরী ও মহানগরীর কংক্রিটের বনে শীতল বায়ু ধাক্কা খেয়ে কেবল শীতের আমেজ পড়েছে।
গত ক’বছরের শীতকাল ছিল উষ্ণ বলয়ের প্রভাবে শীত।সর্ব উত্তরের জেলাগুলো ছাড়া অন্যান্য এলাকায় শীত তেমন কাবু করতে পারেনি। তবে শীতের হাল্কা কাঁপুনি ছিল। গত নবেম্বর ডিসেম্বরে শীত জেঁকে বসতে পারেনি। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যভাগ পর্যন্ত শীত ছিল। এবার সেই অবস্থা থাকছে না। ডিসেম্বরেই শীতের তীব্রতা বেড়ে যাবে। যা এপিলে গিয়ে শেষ হবে। এমনটি বলছেন উপমহাদেশের আবহাওয়াবিদগণ।
বর্তমানে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, রংপুর, ঈশ^রদী, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর অঞ্চলে শীত দ্রুতলয়ে ধেয়ে আসছে। তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যাচ্ছে। প্রকৃতি জানান দিচ্ছে এবার ডিসেম্বরের শীত কাঁপিয়ে তুলবে। জানুয়ারি মাস সবচেয়ে বেশি শীতল থাকে। গত বছর জানুয়ারিতে স্বাভাবিকের চেয়ে এক ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রা ছিল। এবার এমনটি হবে না। ফেব্রুয়ারি মার্চ পেরিয়ে শীত ঠেকবে এপ্রিল পর্যন্ত। ওই সময়ের ফাল্গুনি হাওয়া তাপমাত্রা কমিয়ে দেবে।
আবহাওয়া বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা জানাচ্ছে বিশ্বের আবহাওয়া চক্রের এই সময়ের আচরণ স্বাভাবিক নয়। গত তিন বছর প্রশান্ত মহাসাগরে আবহাওয়া পরিমাপক লা নিনার প্রভাব ছিল না। চলতি বছর লা নিনার প্রভাব দেখা যোচ্ছে। লা নিনা থাকলে প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝ বরাবর তাপমাত্রা বেড়ে একটি উষ্ণ রেখা তৈরি করে।
বাতাস পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে বয়ে যায়। এতে বাতাস উষ্ণ ও পানি প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ভারত মহাসাগর হয়ে বঙ্গোপসাগরে চলে যায়। লা নিনার এ ধরনের আচরণের ফলে বাংলাদেশ ভারত অস্ট্রেলিয়াসহ বিস্তৃত অঞ্চলে শীতকালে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকে। ফলে শীত বেশি পড়ে। এবার লা নিনা সেই আলামত স্পষ্ট করে তুলেছে।
একই সংস্থা ভারত মহাসাগরে আবহাওয়ার আরেকটি ধরন চিহ্নিত করেছে যা ইান্ডিয়ান ওশান ডাইপল বা ভারত মহাসাগরে দ্বিচক্র (আইওডি)। এটি সক্রিয় না থাকলে বাংলাদেশ ভারত অস্ট্রেলিয়ায় শীতকাল তীব্র হয়। অর্থাৎ শীত বেশি পড়ে। এ বছর আইওডি সক্রিয় না থাকায় এই অঞ্চলে শীত বেশি পড়বে। এমনটি আভাস দিচ্ছে আন্তর্জাতিক সংস্থা।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।