পরেশ দেবনাথ,কেশবপুর,যশোর // কেশবপুরে স্বর্ণের দোকানে চুরির করতে যেয়ে আপন দুই বোনসহ ৩ নারীকে আটক করেছে জুয়েলার্সের মালিক ও স্থানীয় জনতা। রবিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে পৌরশহরের রেখা জুয়েলার্সে এ ঘটনা ঘটে। চুরির ঘটনায় রেখা জুয়েলার্সের মালিক গৌতম কর্মকার বাদী হয়ে থানায় একটি চুরির মামলা করেছেন। আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরা জেলার সদর থানার কাশিমপুর (এতিমখানা মাদ্রাসা সংলগ্ন) এলাকার মৃত ইউনুছ সরদারের দুই মেয়ে মোছাঃ পলি খাতুন ওরফে ফুলতুলি ওরফে ফুলটুলি (৩৬), মোছাঃ জলি খাতুন (২৮) ও রসুলপুর গ্রামের (সিটি কলেজের সামনে) মৃত আবুল হাসানের মেয়ে মোছাঃ রিক্তা খাতুন ওরফে রিতা খাতুন (২৫)।
থানা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে,কেশবপুর পৌরসভার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত হরিপদ কর্মকারের ছেলে গৌতম কর্মকার পৌরশহরের চিংড়া মোড় এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে জুয়েলার্সের ব্যবসা করে আসছে। চলতি বছরের গত ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে মুখে মাক্স পরিধান করে অজ্ঞাতনামা দু’জন মহিলা স্বর্ণের দোকানে এসে গৌতম কর্মকার বলে একজোড়া স্বর্নের কানের দুল কিনবো। আমাদের কানের দুল দেখান। দোকান মালিক তাদের কানের দুল দেখানোর পর ৩ রতি ওজনের একজোড়া স্বর্ণের কানের দুল ক্রয় করে। তারপর আরও স্বর্নালংকার ক্রয়ের জন্য বিভিন্ন অলংকার দেখানোর কথা বলে দোকান মালিককে ব্যস্ত রেখে সুকৌশলে মহিলারা দোকানের শোকেসের গ্লাসের উপর রক্ষিত জুয়েলার্সের মালিকের একমাত্র মেয়ে পূজা কর্মকারের ব্যবহৃত ৭ আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন এবং ৫ আনা ওজনের একটি স্বর্নের বেসলেট চুরি করে দোকান থেকে বেরিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্বর্নের দোকানে লাগানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অজ্ঞাতনামা দুইজন মহিলাকে সনাক্তকরণ ও তাদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহের চেষ্টা করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় গত রবিবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ১১.৩০ ঘটিকায় স্বর্ণের দোকানের সামনে ৩ মহিলার ঘোরাফেরা এবং গতিবিধি দেখে জুয়েলার্সের মালিকের সন্দেহ হওয়ায় উপস্থিত মহাদেব পাল, পিন্টু বিট এর সহযোগিতায় তাদের আটক করে। আটকের পর দোকানে গত ১৭ সেপ্টেম্বর মেয়ের চুরি হওয়া স্বর্নালংকার সংক্রান্তে দোকানের সংরক্ষিত থাকা সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে আকটকৃত মহিলাদের চেহারার সাথে মিলিয়ে দেখলে হুবুহু মিলে যায়। এছাড়াও তাদের ব্যবহৃত ভ্যানেটি ব্যাগ ও বোরকা দেখে হুবুহু মিল পাওয়ায় তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করার একপর্যায়ে দোকান থেকে চুরির ঘটনার কথা স্বীকার করে এবং ভিডিও ফুটেজে থাকা দুইজনের নাম পলি খাতুন ওরফে ফুলতুলি ওরফে ফুলটুলি (৩৬) ও তার আপন বোন জলি খাতুন (২৮)। তারা আরও জানান সঙ্গে থাকা অপর জনের নাম রিক্তা খাতুন ওরফে রিতা খাতুন (২৫)। স্বর্ণের দোকানে ৩ মহিলা চোর ধরা পড়ার সংবাদ প্রচার হওয়ায় তাৎক্ষনিকভাবে সেখানে অনেক লোকজনের সমাগম ঘটলে রেখা জুয়েলার্সের মালিক কেশবপুর থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আসামীদের হেফাজতে নেওয়ার পর থানায় নিয়ে আসেন। চুরির ঘটনায় রেখা জুয়েলার্সের মালিক গৌতম কর্মকার বাদী হয়ে থানায় একটি চুরির মামলা করেছেন। থানার মামলা নং-৪।
উল্লেখ্য, পলি খাতুন ওরফে ফুলতুলি ওরফে ফুলটুলির নামে বিভিন্ন থানায় ৬টি চুরির মামলা ও তার আপন বোন জলি খাতুন এর নামে দুইটি চুরির মামলা রয়েছে।
এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মফিজুর রহমান বলেন, স্বর্ণের দোকানে চুরির ঘটনায় ৩ নারী চোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।গ্রেফতারকৃত মধ্যে পলি খাতুনের নামে বিভিন্ন থানায় ৬টি ও তার বোন জলি খাতুনের নামে দুটি চুরির মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের সোমবার সকালে যশোর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।