পরেশ দেবনাথ কেশবপুর,যশোর || কেশবপুরে নদীর বুকে ভাসমান বেডে সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষক-কৃষাণীরা। উপজেলার মধ্যকুল রাজবংশি পাড়া এলাকায় একদল কৃষক-কৃষাণী হরিহর নদীর বুকে ভাসমান বেডে সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
যাদের বসতভিটা ছাড়া কোনো কৃষি জমি নেই, তাদের মধ্যে অধিকাংশ কৃষক-কৃষাণী কৃষি অফিস কতৃক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে ওই নদীর শেওলা দিয়ে ধাপ তৈরি করে তার ওপর বিভিন্ন ধরনের সবজি আবাদ করেছেন। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঐ সবজি বেডে চাষ করা হয়েছে লালশাক,সবুজশাক, পুঁইশাক,ডাটাশাক,পালংশাক,মিষ্টি কুমড়া,কচুশাক,পেঁয়াজ, রসুন এবং ভাসমান বেডের ওপর মাচা (বান) তৈরী করে লাউ ও চাল কুমড়ার চাষ করা হয়েছে। সবজি বেড পরিচর্যা করার জন্য কৃষি বিভাগ তাদের ২টি ডোঙ্গা নৌকা দিয়েছে।
কৃষক নীল রতন বিশ্বাস জানান,বেডে যে সবজি হয় তাতে সংসারের প্রয়োজন মিটিয়েও অতিরিক্ত সবজি বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছি। ভাসমান বেডে সবজি চাষ প্রকল্পটি উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। জানা গেছে, হরিহর নদে শেওলায় পরিপূর্ণ হয়ে রয়েছে। ওই নদীর তীরবর্তী মধ্যকুল রাজবংশি পাড়ার জেলেরা নদীতে মাছ শিকার করতে ব্যর্থ হয়ে বেকার হয়ে পড়েন। এ সময় হরিহর নদের শেওলাকে কাজে লাগিয়ে সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি বিভাগ একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। কৃষি বিভাগ ভাসমান বেডে সবজি চাষের ওপর মধ্যকুল রাজবংশি পাড়ার শতাধিক কৃষক- কৃষাণীকে মাঝে-মধ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং তদারকি করা হয়। ভাসমান বেডে শাক-সবজি তরিতরকারি লাগানো যায় এটা তারা আগে কখনো জানতেন না।
মধ্যকুল ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অনাথ বন্ধু দাস জানান, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কৃষকরা নদীর শেওলা প্রথমে স্তূপ করে রাখেন। শেওলা পচে ধাপ তৈরি হলে তার ওপর দেয়া হয় ভার্মি কম্পোস্ট। এরপর সবজির বীজ বপণ করা হয়। প্রতিজন কৃষক ৩৬টি বেড তৈরি করে তার ওপর সবজি চাষ করেছেন। পর্যায়ক্রমে আরও সবজি বেড তৈরি করার প্রস্তুতি চলছে।
মধ্যকুল রাজবংশি পাড়ার পারুল বিশ্বাস জানান, তিনি ওই নদীতে তিনটি ভাসমান বেড করেছেন। যার উপর লালশাক, সবুজশাক, পুঁইশাক, ডাটাশাক এবং ভাসমান বেডের ওপর মাচা (বান) করে লাউ ও চাল কুমড়ার চাষ করা হয়েছে। এতে তিনি সংসারের প্রয়োজন মিটিয়ে অতিরিক্ত সবজি বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
কেশবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার বলেন, যাদের কৃষিজমি নেই তারা এই পদ্ধতিতে সবজি আবাদ করলে লাভবান হবেন।কোনো ধরনের কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়াই তিনি বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করছেন। মধ্যকুল রাজবংশিপাড়ায় হরিহর নদীর বুকে সবজি আবাদের লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি বিভাগ ভাসমান বেডে সবজি ও মশলা চাষ গবেষণা, সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ শীর্ষক একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। সরকারীভাবে এ উপকার পেয়ে এলাকার কৃষক-কৃষাণীরা অত্যন্ত খুশি।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।