মোঃ তাজমুল ইসলাম,লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি ||
বাড়ির আঙিনার চারদিকে সবুজের সমারোহ। সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে ড্রাগন ফল গাছ। গাছে সবুজ পাতা সৌন্দর্যের ডালি সাজিয়েছে কাজলা নদীর তীরে। ড্রাগন ফল মানেই ভিন্ন আমেজের রঙিন রসাল ফল।স্বপ্নিল পরিপাটি এ বাগানটি গড়ে তুলেছেন নড়াইল সদর উপজেলার শিল্পী মিনা।নিজ আঙিনায় বিদেশি ফলের চাষ করে সফলতা বীজ বপন করেছেন তিনি। ড্রাগন ফল নিয়ে ইউটিউব ও সংবাদমাধ্যম দেখে শখের বশে তিনি এই ফলের চাষ শুরু করেন।
কথা হলে শিল্পী মিনা জানান, ২৩ শতক জমিতে ১২০ পিলার-এ ১১৬৫ ড্রাগনের চারা লাগিয়ে তার যাত্রা শুরু করেছি।৩ মাস পর গাছগুলোতে ফল আসবে। আশা করছি ৩ লাখ টাকার ফল বিক্রি করতে পারব এই বছরে।
সরেজমিন ড্রাগন ফলের বাগান ঘুরে দেখা গেছে,গাছের অবলম্বন হিসেবে একটি কংক্রিটের ছয় ফুট পিলার পুঁতে দেয়া হয়েছে। পিলারের মাথায় বসিয়ে দেয়া হয়েছে মোটরসাইকেলের পুরনো টায়ার। চেইন ক্যাকটাসের মতো দেখতে ড্রাগন গাছগুলো পিলার বেয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। প্রতি পিলারের পাশে দুই থেকে তিনটি চারা বা কাটিং লাগানো হলে প্রতি কাটিং থেকে ১২ থেকে ১৪টি ফল পাওয়া যায়। আকারভেদে ফলের ওজন ৩০০ থেকে ৩৫০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে বলে জানান তিনি। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে ড্রাগন ফলের চাষপদ্ধতি জেনে নেন তার কাছ থেকে।
শিল্পী মিনা জানান,সামাজিক ও শিক্ষামূলক সমাজসেবায় সম্পৃক্ত রয়েছি। টাকা আয়ের জন্য স্থায়ী একটা আর্থিক খাত তৈরির চিন্তা করি।এই চিন্তার আলোকে আমার পতিত জমিতে এই ড্রাগন চাষ শুরু করি।
আমাদের দেশের মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন ফল চাষের উপযোগী–ইউটিউব ও সংবাদমাধ্যমে এসব খবর দেখে আমি উদ্বুদ্ধ হই।৭ মাসে ২২সালে পরীক্ষামূলক।ড্রাগনের চারা লাগিয়ে চাষ শুরু করিছি।পুষ্টিগুণ,আকার-আকৃতি ও দামের কারণে বাজারে ড্রাগন ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ক্যাকটাস জাতীয় গাছ হওয়ায় রোগবালাইও কম। তাই চাষীরা সহজেই এই ফল চাষ করতে পারেন।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, অন্য ফসলের তুলনায় ড্রাগন ফল চাষ লাভজনক। চারা লাগানোর এক বছরের মধ্যে ফল আসতে শুরু করে।আগদিয়া শিমুলিয়ার শিল্পী মিনার সফলতা দেখাদেখি এখন অনেকই এই ড্রাগন চাষ শুরু করছেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে যারা এই চাষে আগ্রহী তাদের সঠিক পরামর্শ দেয়া হবে।ড্রাগন ফল চাষ এই অঞ্চলের কৃষকদের জন্য বিরাট সম্ভাবনা নিয়ে আসবে। আমরা শিগগিরই ড্রাগন ফল চাষের কলাকৌশল কৃষককে জানিয়ে চারা বিতরণ করব।আশা করছি,অচিরেই ড্রাগন ফল এ জেলার অর্থকরী ফসল হিসেবে বিবেচিত হবে।
তিনি আরো বলেন,সব ধরনের মাটিতে ড্রাগন চাষ হয়। তবে উঁচু জমিতে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তিন মিটার পরপর গর্ত করে চারা রোপণ করতে হয়। বছরের যেকোনো সময় চারা রোপণ করা যায়। তবে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে হলে ভালো। সিমেন্ট অথবা বাঁশের খুঁটিতে গাছ বেঁধে দিতে হয়। গাছে ফুল আসার ২০-২৫ দিনের মধ্যে ফল ধরে। প্রতিটি ফলের ওজন হয় ২০০-৬০০ গ্রাম। ১২-১৮ মাস বয়সী একটি গাছে ৫-২০টি ফল ধরে। পরিপক্ব একটি গাছে সর্বোচ্চ ৮০টি ফল পাওয়া যায়।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।