মোঃ আলমগীর হোসেন, নড়াইল প্রতিনিধি || সন্তান মকিদ মীর(১৬) এর দাবি আমার মায়ের মৃত্যুর জন্য ফাঁসির দন্ড প্রাপ্ত আমার পিতা দায়ী নয়। পারিবারিক সূত্র জানায়,২০০৭ সালে নড়াইলের লোহাগড়ার চরবকজুড়ি গ্রামের লায়েব আলী মীরের ছেলে লাবলু মীর এর সাথে বাকা গ্রামের ফটিক খন্দকারের মেয়ে মুক্তা(মনি)বেগম এর বিয়ে হয়। তাদের সংসারে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। নাম মকিদ মীর।বর্তমান বয়স প্রায় ১৬-১৭ হলেও মায়ের মৃত্যুর সময় বয়স ছিলো আনুমানিক ৬-৭ বছর।
মকিদ মীর জানান,২০১২ সালের ২১ মে বেলা ১২টার দিকে আমার মা আমাকে কোলে নিয়ে বাড়ির পাশে মধুমতি নদীতে গোসল করতে যান। আমাকে ঘাটের উপরে বসিয়ে রেখে মা নদীতে ডুব দেন কিন্তু মা দীর্ঘ সময় পার হলেও পানির নিচ থেকে উঠছিলেন না। আমি কান্না-কাটি করলে এলাকার লোকজনসহ আমার বাড়ির লোকজন ঘটনা শুনে পানিতে তালাস করে আমার মায়ের লাশ উদ্ধার করে।আমার মায়ের মৃগা রোগ ছিলো। পানিতে ডুবে মারা গেছে।আমার খালা আমার বাবাসহ চারজনের নামে মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের করেছে। যে মামলায় আমার বাবার ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। আমার বাবার মুক্তি চাই। আমার বাবা নির্দোষ। একই দাবি করেছেন মামলায় ফাঁসির দন্ড প্রাপ্ত লাবলু মীরের বাবা (মামলার আসামী) লায়েব আলী মীর(৬৫),মা লাভলী বেগম(৫৭),ভাই মামুন মীর ও স্ত্রী লিজা বেগম।
সূত্র আরো জানায়,প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন মোঃ লাবলু মীর। সে ঘরে স্ত্রীসহ দুটি সন্তান রয়েছে। দ্বিতীয় স্ত্রী চাম্পা বেগম বলেন,নদী ভাঙ্গনে জমিবাড়ি সবই হারিয়েছি।আমার গর্ভের দুটি সন্তান মেয়ে মাহেরা ৮ বছর, ছেলে হুসাইন মাত্র ৪ মাস বয়সী। স্বামী এখন জেলে। সংসার চালাতি পারছি না। পরের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাই।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে,মুক্ত(মনি) বেগমকে হত্যার দায়ে তার বোন সালেহা সুলতানা লোহাগড়া থানায় ২০১২ সালের ৪ জুন ৫জনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। যার নং-০৭।ওই মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নড়াইলের বিজ্ঞ বিচারক(জেলা ও দায়রা জজ) সানা মোঃ মাহরুফ হোসাইন ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর মামলার রায় ঘোষণা দেন।রায়ে মোঃ লাবলু মীর এর মৃত্যু দন্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেন। এছাড়াও মামলার আসামী লায়েব আলী মীর,লাভলী বেগম, মোঃ মামুন মীর ও মোসাঃ লিজা বেগমকে খালাস প্রদান করেন আদালত। রায়ের বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন। মকিদ মীরের(১৬) গর্ভধারিনী মা বেঁচে নেই আর মাকে হত্যার অভিযোগে জন্মদাতা পিতার মাথার উপর ফাঁসির দঁড়ি ঝুলছে!সন্তান মকিদসহ পরিবারটি মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সাধারণ ক্ষমা প্রার্থনা করছেন।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।