এস.এম.শামীম,দিঘলিয়া খুলনা || ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বেলা ১১ টায় দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব জনাব শেখ হারুনুর রশীদ।
সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ তাঁর বক্তব্যে বলেন,
বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসের শৌর্য বীর্যের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন আজ। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন আজ। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের নাম জানান দেওয়ার দিন আজ। অন্য যেকোন দিনের চেয়ে আজকের দিনটি সম্পূর্ণ আলাদা। ভিন্ন আমেজের, ভিন্ন অনুভূতি ও ভিন্ন স্বাদের আমাদের এই প্রিয় স্বাধীনতা দিবস।
তিনি আরোও বলেন,কোনো দেন দরবার নয়,সাগর সমান রক্তের দামে বাংলাদেশ অর্জন করেছে স্বাধীনতা। রক্ত সাগর পেরিয়ে বাঙালি জাতি পৌঁছেছে তার বিজয়ের সোনালী তোরণে। আজ বাংলাদেশের এই মহা বিজয়ের মহানায়ক হচ্ছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্রষ্টা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম,এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। স্বাধীনতার অমর কাব্যের এই পংক্তিটি দৃঢ়তায় বলীয়ান করে তোলে।নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের শেষে জন্ম নেয় একটি নতুন দেশ,সার্ভভৌম বাংলাদেশ।
সভাপতি তাঁর বক্তব্যে আরো উল্লেখ করেন,বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৪৮ সালের মাতৃভাষার অধিকারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের পথ বেয়ে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে জয়লাভ,১৯৫৬ সালের সংবিধান প্রণয়ন আন্দোলন,১৯৫৮ সালের মার্শাল ল বিরোধী আন্দোলন,১৯৬২ সালের শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন,১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন,১৯৬৮ সালের আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা,১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুথান,১৯৭০ সালে ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরস্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন,১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ ও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন প্রভৃতি ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জনের চুড়ান্ত লক্ষ্যে ঐকবদ্ধ হয়ে ওঠে বাঙালি জাতি।১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লক্ষ শহীদ ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেন্বর পাক সেনাদের আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়ে চুড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাড. জনাব সুজিত অধিকারি।
এ্যাড.সুজিত অধিকারি তার বক্তব্যে বলেন,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙ্গালি জাতি ছিনিয়ে আনে বিজয়, লাল-সবুজের পতাকা সংবলিত স্বাধীন-সার্ভভৌম বাংলাদেশ।বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে নেয় একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে। ৫৫ হাজার বর্গমাইলের এই সবুজ দেশে, ৫২ বছর আগে আজকের এই দিনে উদয় হয়েছিল এক নতুন সূর্যের। সেদিনের সেই সূর্যের আলোয় ছিল নতুন নিদের স্বপ্ন। যে স্বপ্নে অকাতরে প্রাণ দিয়েছিল এ দেশের ৩০ লক্ষ্য মানুষ। তিনি দুঃখ নিয়ে বলেন, এখনো শেষ হয়নি মুক্তিকামী মানুষের সংগ্রাম। স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও একাত্তরের পরাজিত শত্রুরা মাঝে মধ্যেই ফানা তোলার চেষ্টা করছে। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে “তলা বিহীন ঝুড়ির” দেশ বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে।
তিনি আরোও বলেন,বঙ্গবন্ধু আজ শুধু সর্বলকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালীই নন, বিশ্বের শোষিত বঞ্চিত নিপীড়িত মানুষের মুক্তির অনুপ্রেরণা হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। তাঁরই নির্দেশিত পথে তাঁরই জ্যৈষ্ঠ কন্যা দেশরত্নের হাত ধরে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের বিস্ময়। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রাণ শক্তি। সারা বিশ্বের উন্নয়নের রোল মডেল।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এবং উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রীতিম সংগঠনের নেতৃবৃন্দ যথাক্রমে বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড এম এম মুজিবর রহমান, এ্যাড.রবিন্দ্রনাথ মন্ডল, বি এম এ সালাম,মোঃ সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু, মোঃ কামরুজ্জামাল জামাল,সরদার আবু সালেহ,খালেদীন রশীদী সুকর্ন,জোবায়ের আহম্মেদ খান জবা, শ্রীমন্ত অধিকারি রাহুল,রকিব প্রমুখ।
এছাড়া ২৬ মার্চ সূর্যোদয়ের পরপরই ভোর সাড়ে ৬ টায় গল্লামারি স্মৃতি সৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাড. জনাব সুজিত অধিকারির নেতৃত্বে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন; এবং সকালে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করা হয়।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।