মোঃ আলমগীর হোসেন,নড়াইল প্রতিনিধি || নড়াইলের লোহাগড়ায় যৌতুক না দেওয়ায় মারধরের শিকার হয়ে মৃত্যু যন্ত্রনায় হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন এক নারী সিভিল ইন্জিনিয়ার। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার লোহাগড়া পৌরসভার রামপুর গ্রামে।
এলাকাবাসী ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে,গত ১৬ মার্চ ২০১১ইং তারিখে খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার ইস্ট লেন রোড সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার মোঃ আবদুর রহমান এর ছেলে মনিরুল হাসান এর সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহ সম্পন্ন হয় রামপুর গ্রামের মৃত আবুল হাসান এর কন্যা ফাহমিদা হাসানের সাথে। বিয়ের পর থেকে মনিরুলের পরিবার বিভিন্ন সময় যৌতুক দাবী করে আসছিল ফাহমিদার পরিবারের কাছে। ফাহমিদার ভাই সৌদি আরব থাকায় স্বামী মনিরুল এই সুযোগে বিভিন্ন সময় ব্যাবসার জন্য সর্বমোট ১০ লক্ষ টাকা যৌতুক নিয়েছে।যৌতুকের টাকা না দিতে পারলে স্ত্রী ফাহমিদার উপর চালানো হতো চরম ভাবে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার ও নির্যাতন।বিয়ের ৭ বছর পর ঐ দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় এক কণ্যা শিশু। কন্যা শিশু জন্ম নেওয়ায় নির্যাতনের মাত্রা আরো কয়েকগুন বেড়ে যায়। স্বামী মনিরুল এর মা,বাবা,ভাই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে স্ত্রী ফাহমিদাকে যৌতুকের টাকা আদায়ের জন্য মারধর করে বাবার বাড়ি রামপুর পাঠিয়ে দিতেন।
এর মধ্যে গত ১৫.১১.২০২০ ইং তারিখে ফাহমিদার পরিবারের উপার্জনক্ষম একমাত্র ভাই সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়।ভাইয়ের মৃত্যুর পর যৌতুক লোভী স্বামীর অত্যাচার ও নির্যতন আরো চরম আকার ধারন করে। তার উপর চালানো হয় চরম অমানুষিক নির্যাতন,স্বামী মনিরুলের পরিবার নির্যাতন করে ৩ দিন যাবত ঘরের রুমের মধ্যে আটকিয়ে রেখে নির্যাতন করলে পুলিশের এক ডিআইজির হস্তক্ষেপে উদ্ধার করে খুলনা সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ।
পুলিশের হস্তক্ষেপে আবার স্বমীর বাড়ি গেলে পরের দিন থেকে আবার শুরু হয় শারিরীক নির্যাতন এবং বলে বাবার বাড়িতে গিয়ে ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে আয় আমি কনস্ট্রাকশনের ব্যাবসা করবো এই বলে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় স্ত্রী ফাহমিদাকে। দাবীকৃত যৌতুকের টাকা না দেওয়ায় স্বামী মনিরুল,শ্বশুর আবদুর রহমান,শ্বাশুড়ি হাফিজা বেগম ও দেবররা সকলে মিলে গত ১২ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখে ফাহমিদার রামপুরের বাড়িতে এসে যৌতুকের ১০ লক্ষ টাকা দিতে বলেন।টাকা দিতে না পারায় স্ত্রী ফাহমিদাকে শারীরিক নির্যাতন করে বিভিন্ন স্থানে জখম করে। প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে ফাহমিদা হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পান্জা লড়ছে। ফাহমিদা এখন চোখে মুখে অন্ধকার দেখছে ৫ বছরের কণ্যা শিশু ও বিধবা মাকে নিয়ে কি করবে ভেবেই কান্নায় হাসপাতালের বেডের বালিশ ভেজাচ্ছে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।