নিউজ ডেস্ক || প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় খাদ্য সামগ্রিকে সুগন্ধযুক্ত করতে কর্পূরের ব্যবহার হয়ে আসছে। কর্পূর একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ।
জানা যায় এই কর্পূর গাছের কাণ্ড পাতা ডাল সব কিছুতেই কর্পূর রয়েছে। গাছের কাঠ থেকে পাতন পদ্ধতিতে কর্পূর বের হয়।এক একটি গাছে ৪/৫ কেজি কিংবা তার ও বেশি কর্পূর পাওয়া যায়। পুরনো গাছ থেকে মোমের মত এক ধরনের রস বেরোয় তা থেকে এই কর্পূর তৈরি করা হয়।
এছাড়াও কর্পূর গাছের কাণ্ড, পাতা কিংবা ডাল যে কোনও অংশ কেটে নিয়ে পাত্র গরম করে। গরম বাষ্পের সংস্পর্শে আনলে এর মধ্যের কর্পূর বেরিয়ে আসে। এই কর্পূর মেশানো বাষ্প এসে কঠিন হয়ে জমে যায় পাত্রের ঠান্ডা অংশে।
এছাড়াও এই কর্পূর গাছের কাঠ সংগ্রহ করে ছোট ছোট টুকরো করে এই কাঠ দিয়েই তৈরি করা হয় কর্পূর এর তেল । অস্ট্রেলিয়া, চীন, জাপান, কোরিয়া সহ বিভিন্ন জায়গায় এই কর্পূর গাছ জন্মায়।
তবে এই প্রথম উত্তর দিনাজপুর জেলাতেও এই কর্পূর গাছের চারা এনে এই গাছের চাষ করা হচ্ছে। কুমুদ দেব বাবু কলকাতা থেকে এই গাছ এনে উত্তর দিনাজপুরে তাদের নার্সারিতে এই কর্পূর গাছ লাগিয়েছেন।
জানা যায় এই গাছ যত পুরনো তত বেশি কর্পূর একটি গাছে পাওয়া যাবে। এই কর্পূর গাছের চারা তৈরি ও এই গাছের পরিচর্যার নিয়ম হলো,প্রথমে বীজ থেকে চারা তৈরি করে তাতে ভার্মি কম্পোস্ট,ডিএমপি,জৈব সার দিতে হয়।এরপর চারা বড় হলে সেটাতে অনত্র ১ হাত চওড়া ও ১ হাত প্রস্থ করে ১৫ সে.মি. গভীর করে চারা রোপন করতে হবে।এবং নিয়মিত জৈবসার দিয়ে পানি দিয়ে সেটার পরিচর্যা করতে হবে।মুলত সাধারন যেকোন গাছের মতই এর পরিচর্যার নিয়ম।কর্পূর গাছের চারা সাধারণত গ্রীষ্মকালে তৈরি করতে হয়।
বছরের ফাল্গুন-চৈত্র মাস এ গাছে ফুল আসে এবং পরে ফল।এক একটি কর্পুর চারাগাছের পাইকারি দাম হলো ১০০ টাকা।
কর্পুরের উপকারিতা : আপনার ঘরে যদি পিঁপড়ের উপদ্রব বাড়ে তাহলে এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য পানি সঙ্গে কর্পুর মিশিয়ে ঘরের কোনায় কোনায় ছড়িয়ে দিন। সমস্যার সমাধান হবে।
ছারপোকা তাড়াতে কর্পুর অত্যন্ত কার্যকরী। ছারপোকার সমস্যা থেকে মুক্ত পেতে বিছানার চাদর ধুয়ে তোষক, ম্যাট্রেস রোদে দিন। এরপর একটি বড় কর্পুরের টুকরো কাপড়ে মুড়ে বিছানা ও ম্যাট্রেসের মাঝামাঝি রেখে দিন। এতে বিছানা ছারপোকার উপদ্রব মুক্ত হবে।
আপনার যদি ত্বকে চুলকানি ও র্যাশের সমস্যা হয়, তাহলে এক্ষেত্রে কর্পুর অত্যন্ত কার্যকরী। এক টুকরো ভোজ্য কর্পুর নিন এবং সামান্য জলের সঙ্গে মেশান। আক্রান্ত স্থানটিতে এই দ্রবণ দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। চুলকানি ও র্যাশের সমস্যা কমে যাবে। কিন্তু কখনোই কাটা বা ক্ষত স্থানে কর্পুর ব্যবহার করবেন না।এবং মুখে খাবেন না। কারণ কর্পুর রক্তের সঙ্গে মিশে গেলে শরীরে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হতে পারে।
কর্পুরের ট্যাবলেট ঘরের কোনায় কোনায় ছড়িয়ে দিন। এটি শুধু মশাই তাড়াবে না, কাজ করবে রুম ফ্রেশনারেরও।
শিশুর বুকে কফ জমে গেলে, সর্দিতে নাক বন্ধ হয়ে গেলে সেই সমস্যা কাটাতে সাহায্য করে কর্পুর। সরষের তেল বা নারিকেল তেলের সঙ্গে সামান্য কৃত্রিম কর্পুর মিশিয়ে সামান্য গরম করে নিন। উষ্ণ অবস্থায় এই তেলের মিশ্রণটি শিশুর বুকে ও পিঠে মালিশ করুন। দ্রুত সমস্যা কমে যাবে।
নিয়মিত মাথায় যে তেল ব্যবহার করেন তার সঙ্গে কর্পুর এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করলে চুল ঝরার পরিমাণ কমে যায়। চুলে শ্যাম্পু করার আগে এই তেলের মিশ্রণ মাথার তালুতে ও চুলে মাখলে এটি খুশকির সমস্যা কমাতেও সাহায্য করবে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।