শাহাবুদ্দিন মোড়ল,ঝিকরগাছা || যশোরের ঝিকরগাছার পল্লীতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আহত হওয়ার পরও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বাদির অসহায় পরিবার। আহতরা হলেন উপজেলার ৮নং নির্বাসখোলা ইউনিয়নের আশিংড়ী পূর্বপাড়া গ্রামে আশরাফুল আলম চাতক (৩০) ও তার স্ত্রী সাজেদা বেগম (২৫)। ঘটনার বিষয়ে চাতকের মাতা জাহানারা বেগম (৪৫) বাদি হয়ে ৪জনকে আসামী করে ঝিকরগাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। আসামীরা হলেন একই গ্রামের মৃত রেফেজ দফাদারের ছেলে আবু সাদ (৫০), আবু সাদের স্ত্রী লিলিমা বেগম (৪৫),আবু সাদের ছেলে ইসমাইল হোসেন বাপ্পী (৩০) ও ইব্রাহীম চাপ্পি (২৮)।
থানার মামলা সূত্রে জানা যায়, বাদী ও বিবাদীরা নিকটতম আত্মীয়। বিবাদীরা খুবই খারাপ ও উশৃংখল প্রকৃতির লোক। বাদির বসতবাড়ির পূর্ব পাশে একটি আতাগাছ রয়েছে। আতাগাছ নিয়ে বিবাদীগণ বাদীর পরিবারের সাথে বিভিন্ন সময় ঝগড়াঝাটি ও মারপিঠ করার হুমকি দেয়। যার কারণে শনিবার (০৭ অক্টোবর) অনুমান বিকাল সাড়ে ৫টার সময় ১ ও ২ নং বিবাদীরা বাদির বাড়ির সামনে এসে তার বৌমাকে আতাগাছটি কেটে নিতে বলে। তখন তার বৌমা ২নং বিবাদীর নিকট কারণ চাইলে ১ও ২নং বিবাদীরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
তখন বাদির ছেলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে আসামীগণ একত্রে পরিকল্পিত ভাবে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বসতবাড়িতে অনধিকারবলে প্রবেশ করে ৩নং বিবাদীর হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে বাদির ছেলের মাথার উপরে আঘাত করলে সে মাটিতে পড়ে যায়। পরে ৪নং বিবাদীর হাতে থাকা ধারালো দা দিয়ে মাথায় কোপ মারে।যার কারণে বাদির ছেলের মাথার বাম পাশে মাথাকাটা রক্তাক্ত জখম হলে ১নং বিবাদীসহ অন্যান্য বিবাদীরা বাদির ছেলেকে এলোপাতাড়ি মারপিঠ করতে থাকে। তখন বাদির বৌমা ঠেকাতে গেলে ১নং বিবাদী বাদির বৌমাকে চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে দোবাইয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফোলা জখম হয়। এছাড়াও ৩নং বিবাদীর হাতে থাকা ধারালো দা দিয়ে বৌমার মাথার ডান পাশে কোপ মারলে মাথাকাটা রক্তাক্ত জখম হয়। মারপিঠের একপর্যায়ে ৩ ও ৪নং বিবাদীরা বাদির বৌমার শরীরের কাপড়-চোপড় ছিড়ে শ্লীলতাহানী ঘটায়। বর্তমানে বাদির ছেলে ও বৌমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। ঘটনার বিষয়ে থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলা নং ১৩, তাং ০৮/১০/২০২৩ইং।
ঘটনা সম্পর্কে বাদির বৌমা সাজেদা বেগম জানান,আমি একজন অসহায় নারী বলে বিবাদীরা আমাদেরকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই কার্যক্রম পরিচালনা করে মাথায় দা দিয়ে কোপ মেরেছে, শরীরের কামড় দিয়েছে এবং আমাকে কাপড়-চোপড় ছিড়ে শ্লীলতাহানী করেছে। বিবাদীরা বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিনে এসে আমাদের উপর আরও চড়াও হয়ে গেছে। বর্তমানে আমার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। না জানি কখন আবারও তারা আমাদের উপর আবারও হামলা করে। আমার কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। আমি আপনাদের দ্বারা আমাদের উপর ঘটে যাওয়া ঘটনার সঠিক বিচার চাই।
মামলার ১নং বিবাদী আবু সাদ বলেন,আতাগাছের ডাল কাটা নিয়ে মারামারির একপর্যায়ে আমার বড় ছেলে আমার ভাইপোকে ইট দিয়ে ও তার বৌকে কাচি দিয়ে মারার পরে মাথা কেটে যায়। বর্তমানে আমরা সবাই জামিনে আছি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শিওরদাহ ফাড়ির আইসি দেবব্রত কুমার ঘোষ বলেন,থানায় মামলার বিষয়ে একজন আসামীকে আটক করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়।। আর অপর আসামীদেরকে আটকের পূর্বেই তারা বিজ্ঞ আদালতের ৩টি রিকল জমা দিয়েছেন।
থানার অফিসার ইনচার্জ সুমন ভক্ত বলেন,আশিংড়ী গ্রামে একটি মারামারির বিষয়ে মামলা হয়েছে। একজন আসামীকে আটক করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়। মামলার তদন্ত কর্যক্রম চলমান রয়েছে। কর্যক্রম পরিশেষে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।