আল-হুদা মালী,শ্যামনগর প্রতিনিধি || সরকারিভাবে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের স্বার্থে রাসমেলা ২০২১ সাল থেকে স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়েছে।তবে রাস পূর্ণিমার সময়ে শুধুমাত্র তীর্থযাত্রী বা সনাতন ধর্মাবলম্বীরা (২৫-২৭ নভেম্বর,২০২৩) রাসপূজা ও পুন্যস্নানে অংশগ্রহণ করতে পারবে বলে জানান বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা এবি এম হাবিবুল ইসলাম।
তিনি আরো বলেন,অন্য কোন ধর্মের মানুষ কোনভাবেই অংশগ্রহণ করতে পারবেনা। বনবিভাগ সূত্রে আরো জানাযায় সুন্দরবন সুরক্ষায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে সাতক্ষীরা রেঞ্জ এলাকার রাস পূজা উপলক্ষে যে রুট চলাচলের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে,সেসমস্ত রুটে বসানো হবে কঠোর নিরাপত্তা।তাছাড়া পূজা চলাকালীন সময়ের এক সপ্তাহ আগেই বন্ধ করা হচ্ছে সুন্দরবনের সকল ধরনের জেলেদের পাস পারমিট,যাহাতে কোন ধরনের বন অপরাধ করার সুযোগ না পায়।
শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বীগণ রাস পূজা ও পুণ্যস্নান গমন করতে পারবেন।সুন্দরবনে দুবলার চরে (আলোরকোল) রাসপূর্ণিমা উপলক্ষে পুণ্যার্থীদের রাসপূজা ও পুণ্যস্নান ২০২৩ রাসপূর্ণিমার রাসপূজা ও পুণ্যস্নান উপলক্ষে ২৫ হতে ২৭ নভেম্বর,২০২৩ তারিখ পর্যন্ত ৩(তিন) দিনের জন্য সুন্দরবনে প্রবেশ ও অবস্থানের অনুমতি দেয়া হবে বনবিভাগ থেকে।যাতায়াতের রুট,ঢাংমারী চাঁদপাই ষ্টেশন তিনকোনা আইল্যান্ড দুবলার চর (আলোরকোল),বগী বলেশ্বর সুপতি ষ্টেশন, কচিখালী,শেলারচর দুবলার চর(আলোরকোল),বুড়িগোয়ালিনী কোবাদক বাটুলা নদী বল নদী, পাটকোষ্টা খাল হংসরাজ নদী দুবলার চর (আলোরকোল), কয়রা কাশিয়াবাদ খাসিটানা বজবজা আড়ুয়া শিবসা নদী, নলিয়ান ষ্টেশন শিবসা নদী মরজাত নদী দুবলার চর (আলোরকোল), মরজাত নদী দুবলার চর (আলোরকোল)।
রাসপূর্ণিমার রাসপূজা ও পুণ্যস্নান উপলক্ষে পুণ্যার্থীদের জন্য কিছু দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে।সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী পুণ্যস্নান অনুষ্ঠানে শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বীরাই সুন্দরবনের দুবলার চরে গমন করতে পারবে, অন্য কোন ধর্মের লোক পুন্যস্নান অনুষ্ঠানে গমন করতে পারবেন না। পুণ্যার্থীদের অবশ্যই নিজ নিজ জাতীয় পরিচয়পত্রের মূলকপি সাথে রাখতে হবে। পুণ্যার্থীগণ সুন্দরবনে প্রবেশের সময় সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের অফিসে জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটো কপি জমা দিতে হবে।
সাথে সকলকে বাধ্যতামূলকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।সাথে পুণ্যার্থীদেরকে প্রবেশের সময় অনুমতির জন্য প্রতিটি এন্ট্রি পয়েন্টে আইডি কার্ডের ফটোকপি প্রদান করে লঞ্চ বা ট্রলার কিম্বা নৌকার প্রবেশ মূল্য, অবস্থান ফি, ক্যামেরা ফি এবং পুণ্যার্থীর সংখ্যা অনুযায়ী বিধি মোতাবেক রাজস্ব দাখিল করে পাশ অথবা অনুমতি গ্রহণ করতে হবে। কেবলমাত্র পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্ণালয়ের লিখিত অনুমতি সাপেক্ষে রাজস্ব প্রদান পূর্বক ড্রোন ব্যবহার করা যাবে। পুণ্যার্থীদেরকে ২৫ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিঃ তারি খে দিনের ভাটিতে (ভোর ৬ ঘটিকার পর) দুবলার রাসপূর্ণিমার পূণ্যস্নানস্থলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে হবে।
পুণ্যার্থী ও জলযানের জনবলসহ মোট জনবলের তিন দিনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ দেশি জ্বালানী কাঠ বাধ্যতামূলকভাবে সাথে নিতে হবে।প্রতিটি অনুমতি পত্রে রুট উল্লেখ থাকবে এবং পূণ্যার্থীরা পছন্দমত একটিমাত্র রুট ব্যবহার করতে হবে।রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে পুণ্যস্নান অনুষ্ঠানে আগত পুণ্যার্থীরা খাবার বা অন্যান্য দ্রব্যাদির প্যাকেট অথবা খাদ্যদ্রব্যের উচ্ছিষ্ট নিজ নিজ জলযানে বা নির্দিষ্ট স্থানে রাখতে হবে। রাস পূর্ণিমা শেষে অর্থাৎ ভ্রমণ শেষে ফেরার সময় একই রুটে ফিরতে হবে এবং যে স্টেশন হতে পাশ ইস্যু করা হয়েছে, সেই স্টেশনেই পাশ সমর্পন করে সার্টিফিকেট নিতে হবে।পুণ্যার্থীদের জন্য সরকারি ভাবে বর্জনীয়,দুবলার চরের আলোরকোলে রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে পূজা ও পুণ্যস্নান চলাকালীন রাসমেলা হবে না। এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কীর্ত্তন করা যাবেনা।
দুবলার চরে স্থাপিত কন্ট্রোল রুমে রিপোর্ট করা ব্যতীত পুণ্যস্নানস্থলে বা সুন্দরবনের কোথাও অবস্থান করা যাবে না।পুণ্যস্নানের উদ্দেশ্যে গমনকারী কোন জলযানে পঞ্চাশ জনের বেশি কোনো অবস্থাতেই পরিবহন করা যাবেনা, তাছাড়া রাতে কোন জানবাহন চলাচল করা যাবে না।কোনো অবস্থাতেই সুন্দরবনের ভিতর হতে জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ করা যাবে না এবং বন্যপ্রাণী শিকার করা ও মাছ ধরা যাবে না।।রাস পূর্ণিমার পুন্যস্নানে গমনের সময় কোন দেশীয় অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য, হরিণ ধরার ফাঁদ, দড়ি, গাছ কাটার কুড়াল, করাত ইত্যাদি ব্যবহার বা বহন করা যাবে না।আলোরকোল (দুবলা) যাওয়ার পথে মাইক বাজানো, কোনরুপ পটকা, বাজি ইত্যাদি ফুটানোসহ কোনো প্রকার শব্দ দূষণ করা যাবে না।
রাস পূর্ণিমার পুণ্যস্নান অনুষ্ঠানে আগত পুণ্যার্থীরা গৃহপালিত হাঁস অথবা মুরগী ছাড়া অন্য কোন প্রাণীর মাংস বহন বা রান্না করতে পারবেন না। কোন ভাবে পুণ্যার্থীরা সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ২৭ নভেম্বর২০২৩ খ্রিঃ তারিখের পর অবস্থান করতে পারবেন না। রাসপূর্ণিমা উপলক্ষে পুণ্যস্নান অনুষ্ঠানে আগত পুণ্যার্থীরা খাবার পানির বোতল বা অন্যান্য দ্রব্যাদির প্যাকেট অথবা খাদ্যদ্রব্যের উচ্ছিষ্ট নদীতে যত্রতত্র ফেলতে পারবেন না। নিজ নিজ জলযানে প্লাষ্টিক বোতলসহ সকল আবর্জনা সংরক্ষণকরতঃ সুন্দরবনের বাহিরে নিয়ে আসতে হবে।রাস পূর্ণিমার পুণ্যস্নান অনুষ্ঠানে আগত পুণ্যার্থীরা রাতে পুণ্যস্নান অনুষ্ঠানের বাইরে কোন স্থানে অবস্থান করতে পারবেন না।১৫০ ফুট এর বেশি দৈর্ঘ্যের কোনো লঞ্চ সুন্দরবন প্রবেশ করতে পারবে না।
কোন অবস্থাতেই অপচনশীল দ্রব্য যেমন-প্লাষ্টিক পণ্য, এ্যালুমিনিয়াম ফয়েল, পানির বোতল, বিচকিট, চানাচুরের প্যাকেট ইত্যাদি নদীতে বা শুকনো জায়গায় ফেলা যাবে না। বন বিভাগ কর্তৃক প্রতি পুণ্যার্থী তীর্থযাত্রীকে প্রদত্ত টোকেন সর্বদা নিজের নিকট রাখতে হবে। কোনো অবস্থাতেই হস্তান্তর বা অন্যের নিকট রাখা যাবে না।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।