নড়াইল প্রতিনিধি ||নড়াইল সদর উপজেলার লস্করপুর গ্রামের চাঞ্চল্যকর ১মাস ২৭ দিন বয়সী শিশু হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটন এবং আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যার বর্ণনা ও দায় স্বাীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন শিশুটির মা মোসাঃ মৌসুমী খানম (২৪)।গতকাল বুধবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে নড়াইল জেলা পুলিশের মিডিয়া সেন্টার থেকে এক প্রেস রিলিসের মাধ্যমে গ্রেফতারের বিষয়টি জানানো হয়।
প্রেস রিলিস থেকে জানা যায়, গত ২৭ নভেম্বর নড়াইল সদর উপজেলার আউড়িয়া ইউনিয়নের লস্করপুর গ্রামের মোঃ মিলন মোল্যা ও মোসাঃ মৌসুমী খানম দম্পতির ১ মাস ২৭ দিন বয়সের শিশু সন্তান মোঃ আরাফ মোল্যার লাশ তাদের বসতবাড়ির উত্তর পাশে আলিম মোল্যার মেহগনি বাগানের মধ্যে ছোট পুকুরের পানিতে পাওয়া যায়। এ বিষয়ে গত ২৯ নভেম্বর মৃত শিশু সন্তানের বাবা মোঃ মিলন মোল্যা বাদী হয়ে নড়াইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হৃদয় বিদারক ও মর্মস্পর্শী এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে নড়াইল জেলার পুলিশ সুপার মোহাঃ মেহেদী হাসান এর নির্দেশনায় জেলা পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মামলার তদন্ত তদারককারী অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) তারেক আল মেহেদী এর তত্ত্বাবধানে জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সাব্বিরুল আলমের নির্দেশনায় ডিবি পুলিশের একটি চৌকস টিম নিজ শিশুসন্তান হত্যার দায়ে মোসাঃ মৌসুমী খানমকে (২৪) গ্রেফতার করেন। আসামি মোসাঃ মৌসুমী খানমকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামি বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।
মামলার তদন্তে জানা যায় , শিশু আরাপ জন্মের পর থেকেই তার শ্বাসনালী ছোট হওয়ায় শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হতো এবং দুধ খেতে গেলে বুকে দুধ বাঁধতো। মাঝেমাঝে বমিও করে দিতো। বাচ্চাটির অনেক ঠান্ডা জনিত সমস্যাও ছিল। যে কারণে তাকে সবসময় চিকিৎসকের চিকিৎসার মধ্যে রাখা হতো। ঘটনার দিন শিশু আরাপ তার মায়ের বুকের দুধ খাওয়ার সময় হঠাৎ তার মুখ হা হয়ে যায়, শিশুটি চোখ বড় বড় করে তাকায় এবং কিছুক্ষণ পর তার শরীর নীল হয়ে যায়। তখন আরাপের মা মৌসুমী ভেবেছিল তার বুকে মনে হয় দুধ বাঁধছে।এরপর তিনি তার বাচ্চাকে সোজা করে ঝাকাঝাকি করতে থাকেন। তার মাথায় ফুঁ দেন। কিন্তু শিশুটি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তখন তিনি শিশুটির পালস্ চেক করে দেখেন যে, শিশুটি মারা গেছে। শিশু আরাপের মা মৌসুমী খানম কি করবে বুঝে উঠতে পারেন না। তার স্বামী এবং শ্বশুর বাড়ির লোকজনদের কি বলবে এই ভেবে ভয় পেয়ে যায়। তারপর তিনি তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন এবং স্বামীর ভয়ে তার মৃত শিশু সন্তানকে রাতের আঁধারে সকলের অগচরে বাড়ির পাশে আলিম মোল্যার মেহগনি বাগানের মধ্যে পুকুরের ভিতর নিজ শিশু সন্তানকে ফেলে রেখে আসেন।
এরপর বাড়িতে এসে সবাইকে বলেন যে, তার ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না এবং ঘটনাটি অন্যদিকে নেওয়ার জন্য জীন-পরী শিশুটিকে নিয়ে গেছে বলে গল্প সাজায়।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।