খুলনার খবর || আজ ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। বাঙালি জাতির গৌরবময় বিজয়ের দিন। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বরে এসেছিল চুড়ান্ত বিজয়। এই বিজয়ে আনন্দে উদ্বেলিত হয়েছিল গোটা বাঙালি জাতি। আজ বাঙালি জাতি পালন করছে ৫৩তম মহান বিজয় দিবস।
১৯৭১ সালের এই দিনে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে বাঙালি জাতি স্বাধীনতা সংগ্রামের গৌরবগাঁথা বিজয় অর্জন করেছিল। ঢাকায় দখলদার পাক হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে এই দিনেই স্বাধীনতার রক্তিম সূর্যালোকে উদ্ভাসিত হয়েছিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
৭১’র ২৫ মার্চ কালো রাতে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরা মেতে উঠেছিল ইতিহাসের জঘণ্যতম গণহত্যাকাণ্ডে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশেই নির্বিচারে চালানো হয়েছিলো হত্যাকাণ্ড। সেই গণহত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষের ভাগ্যাকাশে নেমে এসেছিল ঘোর অমানিশা। তবে গণহত্যার মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে সেদিন দমিয়ে রাখতে পারেনি পাক হানাদার বাহিনী। বরং ওই হত্যাকাণ্ডের শোককে তারা শক্তিতে পরিণত করে ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে অবশেষে এদেশের আকাশে উদিত হয় স্বাধীনতার নতুন সূর্য।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর অবশেষে ঘনিয়ে আসে বিজয়ের সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়াদী উদ্যান) পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজির নেতৃত্বে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্থানী হানাদার সেনা। বিকেল ৪টা ৩১ মিনিটে মুজিবনগর সরকারের পক্ষে গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকারের উপস্থিতিতে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল জ্যাকবের তৈরি করা আত্মসমর্পণ দলিলে সই করেন পাকিস্তানের পক্ষে লে. জেনারেল নিয়াজি এবং মিত্রবাহিনীর পক্ষে লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা। আর অবিস্মরণীয় সেই মুহূর্তেই বিশ্ববাসীকে অবাক করে পৃথিবীর মানচিত্রে জন্ম নেয় বাংলাদেশ নামে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র।
আজ সেই ঐতিহাসিক বিজয়ের দিনে কৃতজ্ঞ জাতি বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে দেশের পরাধীনতার ঘানি মোচনে প্রাণ উৎসর্গ করা বীর সন্তানদের।
দিবসটির তাৎপর্য্য তুলে ধরে পত্রিকাগুলো প্রকাশ করেছে বিশেষ সাময়িকী এবং টেলিভিশনে প্রচারিত হবে বিশেষ অনুষ্ঠান। আর দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে নানা অনুষ্ঠান। বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে পৃথক পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।আজ সরকারি ছুটির দিন। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। রাজধানীসহ দেশের বড় বড় শহরগুলোতে রাতে গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনায় করা হবে আলোকসজ্জা। হাসপাতাল, কারাগার ও এতিমখানাগুলোতে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হবে। বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।