খুলনার খবর || আজ মহান একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাঙালির জীবনে এক কালজয়ী দিন আজ। একুশের প্রথম প্রহর থেকেই কোটি কণ্ঠ গেয়ে উঠে সেই অমর গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি।’ ধর্ম-বর্ণ, পেশা-বয়স নির্বিশেষে সব মানুষ ভাষাবীরদের প্রতি ফুলের ভালোবাসা ও বিনম্র শ্রদ্ধায় প্রভাত ফেরি হয়।শহীদ মিনারে জমায়েত হয় লক্ষ জনতা। অঙ্গীকার করবে ভাষা, সংস্কৃতি এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার।
আজ একুশ শুধু বাঙালির নয়, গোটা বিশ্বের সব ভাষাভাষী মানুষের। ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণার পর থেকে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক পর্যায়েও দিবসটি পালিত হচ্ছে।
অমর একুশে উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি। এ দিনটি পালনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত জনপদেও চলছে নানা আয়োজন। আজ দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।
‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা’ দিবস উপলক্ষে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের অম্লান স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি রাজধানীর পল্টন ময়দানে তৎকালীন পূর্ববঙ্গের প্রধানমন্ত্রী নূরুল আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ঘোষণা দেন- ‘উর্দু এবং কেবল উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। ’
মূলত খাজা নাজিমুদ্দিনের এই ভাষণই ভাষা আন্দোলনের দাবানল সৃষ্টি করে। ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাঙলার ছাত্র-শিক্ষক-জনতাসহ আপামর মানুষ। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে গঠিত হয় সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ।
দেশের বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয় ধর্মঘটসহ বিক্ষোভ। একুশে ফেব্রুয়ারিতে পূর্ব পাকিস্তানজুড়ে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত হয়। এরই প্রেক্ষিতে ২০ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা জারি করে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার।
এক পর্যায়ে ছাত্রদের দৃঢ়তায় ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ঢাকার পলাশীর আমতলায় (বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনের সড়ক) এলে নির্বিচারে বিক্ষুদ্ধ ছাত্রদের ওপর গুলি চালায় পুলিশ।এতে নিহত হন রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার, সফিউরসহ নাম না জানা আরো অনেকে। এরপর সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে ভাষা আন্দোলন। অবশেষে বাংলা পায় রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই বাঙালি জাতির চরম জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটে। এর পথ ধরেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন দেশ হিসেবে জন্ম নেয় লাল-সবুজের বাংলাদেশ।
দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে সকল সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন, রেডিও এবং কমিউনিটি রেডিও ব্যাপক অনুষ্ঠানমালা প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জাতীয় দৈনিকসমূহে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দ্বীপসমূহ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে বর্ণমালা সম্বলিত ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হয়েছে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।