অতনু চৌধুরী(রাজু)বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি || সিবিএ নির্বাচন নিয়ে উত্তাপ্ত হয়ে উঠছে মোংলা বন্দর। ঘোষিত খসড়া ভোটার তালিকায় পদোন্নতি পাওয়া ৩ কর্মকর্তার নাম থাকায় উদ্ভুদ পরিস্থিতর সৃস্টি হয়েছে। সংকট নিরসনে গতকাল বুধবার হা’-না, ভোটের আয়োজন করা হলেও তা হয়নি। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এদিন সকাল ১১ টায় বন্দর জেটিতে শ্রমিক-কর্মচারীদের সভায় হা’-না, ভোট স্থগিত এবং ঘোষিত ভোটার তালিকায় সংঘের (সিবিএ) দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন ঘোষণা দিলে শ্রমিক-কর্মচারীরা দ্বিধা-বিভক্তি হয়ে পড়েন। ক্ষমতাসীন সিবিএ নেতা-কর্মীরা কেসিসি মেয়রের দেয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাখানসহ বন্দর এলাকা সংঘের সামনের সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেন। অপর দিকে কর্মকর্তা হয়েও শ্রমিক-কর্মচারীদের তালিকায় নাম থাকা সাবেক সিবিএ নেতা এস এম ফিরোজ, মো. মোশারফ হোসেন এবং মো. অকিচ আলীর পক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের সমর্থিত একাংশ পথসভা করে বন্দরের শহীদ মিনার সংলগ্ন এলাকায়। এ অবস্থায় দু’গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যা সংঘাত ও সহিংসতায় রুপ নেয়ার আশংকা করছেন শ্রমিক-কর্মচারীরা। অপর দিকে ৩ কর্মকর্তা ইস্যুতে আইনী লড়াই করার ঘোষনা দিয়েছেন ক্ষমতাসীন সিবিএ নেতারা। ফলে তফসিল অনুযায়ী আগামী ৯ মার্চ মবক’র শ্রমিক-কর্মচারী সংঘের নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
জানায় যায়, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের অধিনস্থ প্রায় সহস্রাধিক শ্রমিক-কর্মচারীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদী নিয়ে সরকার সহ মবক’র সঙ্গে কাজ করে থাকে সিবিএ। সিবিএ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে নেতৃত্ব ও ক্ষামতায় যাওয়ার তৎপরতা থাকে শ্রমিক নেতাদের। তাই আঞ্চলিকতার পাশাপাশি বছর জুড়ে চলে নানা মেরুকরন। এতে কেউ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় টিকেছেন আবার অনেকে সটকেও পড়েছেন।
নব্বই দশক হতে কর্তৃপক্ষের অধিনে কর্মচারী হিসেবে যোগদান করন এস এম ফিরোজ, মো. মোশারফ হোসেন এবং মো. অকিচ আলী। তাদের মধ্যে ফিরোজ ও অকিচ বিভিন্ন সময় তারা কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রানাধীন সিবিএ সংগঠনের বিভিন্ন পদে নির্বাচন ও কর্মচারীদের নেতৃত্বেও ছিলেন। কিন্ত বিগত প্রায় ২ বছর আগে কর্তৃপক্ষের পদোন্নতি সভায় কর্মচারী থেকে জুনিয়ার কর্মকর্তা হিসেবে পদায়ন হয়। কর্মচারী থেকে কর্মকর্তা হওয়ায় গত ২৩ সালের ২ জানুয়ারি সিবিএ’র সাধারণ সভায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম ফিরোজ, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মো. অকিচ আলী ও মো. মোশারফ হোসেনের সদস্য পদ বাতিল করা হয়।
কিন্তু গত ৯ ফেব্রুয়ারি এ সংগঠনটির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনী তফসিল ঘোষনা পরবর্তী প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় নাম ওঠে পদোন্নতি পাওয়া ওই তিন কর্মকর্তার। আর এ নিয়ে আপত্তি তোলেন সাধারণ শ্রমিক-কর্মচারীরা। খুলনা শ্রম পরিচালকের কার্যালয় ও নির্বাচন পরিচালনা কর্তৃপক্ষের কাছে গনস্বাক্ষরিত লিখিত আবেদন ও আপত্তি জানান শ্রমিক-কর্মচারীদের একাংশ । এ সংকট নিরসনে শ্রম অধিদপ্তর ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটি বুধবার ২৮ ফেব্রয়ারী হ্য,-না’ ভোটর আয়োজন করলেও তা ভেস্তে যায়। এতে দুটি পক্ষে-অবস্থান নিয়েছেন শ্রমিক-কর্মচারীরা। তাদের মধ্যে বাড়ছে উত্তাপ ও উত্তেজনা।
উদ্ভুদ্ধ পরিস্থিতি বিষয় সিবিএ’র সাবেক নেতা মতিয়ার রহমার সাকিব বলেন, কর্মচারী থেকে কর্মকর্তায় পদোন্নিতি পাওয়ারা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কর্মচারী সংঘের সদস্য থাকার সুযোগ নেই। তারা অবৈধ সুযোগ পেয়ে সদস্য থাকলে এবং নেতৃত্বে পৌছালে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে শ্রমিক-কর্মচারীর ভবিষাতে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
এ প্রসঙ্গে সিবিএ’র বর্তমান সাধারণ সম্পাদক কাজী খোরশেদ আলম জানান, তাদের সংঘের সাবেক নেতা এস এম ফিরোজ সহ অপর দু’জন কর্মকর্তা হয়েও কর্মচারির তালিকায় থাকতে আগ্রহী। কারন তারা সিবিএ’ নেতৃত্বে গিয়ে সাধারণ শ্রমিক-কর্মচারীদের শাসন ও শোষন করতে চাইছেন। গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কর্মকান্ডের জন্য তিনি খুলনা অঞ্চলিক শ্রম অধিদপ্তরের কর্তা-ব্যক্তিদের দোষারুপ করছেন। আর এ নিয়ে আইনী লড়াই করার ষোষনা দেন তিনি।
এদিকে সিবিএ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক(পদায়িত কর্মকর্তা) এস এফ ফিরোজ বলেন, সিবিএ’ নির্বাচনী মেয়াদ অনেক আগে শেষ হলেও ক্ষমতা অপব্যবহার করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বর্তমান ক্ষমতাসীন নেতারা। শ্রমিক-কর্মচারীরা তাকে চাইছেন এবং আসন্ন নির্বাচনে অংশ গ্রহনের প্রস্তুতি কথাও জানান তিনি।
এ অবস্থায় খুলনাঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তর এ সিবিএ সংগঠনটির নির্বাচন নিয়ে প্রতি দু’বছর পর পর শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা থাকলেও এখন বাড়ছে হতাশা।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।