মোঃফয়সাল হোসেন,কয়রা || খুলনার কয়রা উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৬৮ লাখ টাকা প্রাক্বলিত মূল্যের একটি উন্নয়ন কাজ মূল ঠিকাদার থেকে তিন হাত বদল হয়েছে।প্রতিবার হাত বদলে চুক্তি মূল্যে থেকে ৫ লাখ টাকা করে কমে ৪৭ লাখ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া কাজের প্রাক্বলন অনুযায়ি বরাদ্দের ১০ শতাংশ কম মূল্যে দরপত্র দাখিল করায় আরও ৭ লাখ টাকা কমেছে। ফলে মান সম্মত কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার মানুষ।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে কয়রা উপজেলা সদর থেকে হায়াতখালি জিসি সড়কের জালালের মোড় থেকে দেউলিয়া বাজার পর্যন্ত ৫৬০ মিটার ড্রেন নির্মাণ কাজ চলছে। দরপত্রে উল্লেখিত বরাদ্দের ১০ শতাংশ কম দরদাতা হিসেবে চুয়াডাঙ্গার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জাকাউল্লাহ ব্রাদার্সকে এ বছরের ১০ মার্চ কার্যাদেশ দেওয়া হয়। আগামী ৩০ জুন কাজের মেয়াদ শেষ হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জানে আলম ওরফে জন্নুন সানা নামে স্থানীয় এক ঠিকাদার ১০ লাখ টাকায় কাজটি কিনে নেন। পরে কামরুল ইসলাম ও রবিউল নামে দুই শ্রমিক সরদারের কাছে ৫ লাখ টাকা লাভে কাজ বিক্রি করে দেন। বর্তমানে দুই শ্রমিক সরদার নির্মাণ কাজের দায়িত্বে রয়েছেন। এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জাকাউল্লাহ ব্রাদার্সের মালিক জাকাউল্লাহর দাবী কাজ বিক্রি করা হয়নি। ব্রাইট নামে এক ব্যাক্তি তার হয়ে কাজ দেখাশুনা করছেন। তবে কাজের সাইটে এ নামে কাউকে পাওয়া যায়নি।
কাজের সাইটে গিয়ে দেখা গেছে, শ্রমিকরা রাস্তার পাশে প্রায় সাড়ে ৩ ফুট মাটি খুড়ে ড্রেন নির্মাণের জন্য সিসি ঢালাইয়ের কাজ করছেন। গত ১৫ মে উপজেলার সুন্দরবন বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে বেজ ঢালাইয়ের কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। ওই সময় সেখানে দায়িত্বরত কোন কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। শ্রমিকরা জানান, ছোট-খাটো ঢালাইয়ের সময় কোন ইঞ্জিনিয়ার লাগে না। তারা আরও জানান, কামরুল ও রবিউলের নির্দেশনা অনুযায়ি তারা কাজ করছেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ি তোফাজ্জেল হোসেন তোফা বলেন, আমার দোকানের সামনে দিয়ে ড্রেন নির্মাণ কাজ চলছে। সেখানে কাজের শ্রমিক ছাড়া ঠিকাদার অথবা কোন ইঞ্জিনিয়ারকে আসতে দেখেনি। শ্রমিকরা তাদের সরদারের কথা মতো নির্মাণ কাজ করে যাচ্ছেন।
স্থানীয় সুন্দরবন বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খায়রুল আলম বলেন,এভাবে একটি উন্নয়ন কাজ হাত বদল হতে থাকলে সেখানে মানসম্মত কাজ হওয়া নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। কারণ সর্বশেষ দামে যারা কাজটি নিয়েছেন তারাও লাভ করার চেষ্টা করবে।
কাজের সাব ঠিকাদার জানে আলম বলেন, মূল ঠিকাদারের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা লাভে কাজ কিনে কামরুল ও রবিউল নামে দুই শ্রমিক সরদারকে নিয়ে এক সাথে করছি। তারা এ কাজে অভিজ্ঞ থাকায় তাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে কয়রা উপজেলা প্রকৌশলী দারুল হুদা বলেন,কাজটি হাত বদল হয়েছে কিনা জানা নেই। আমরা দেখব প্রাক্বলন ও নক্সা অনুযায়ি কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা।কে কাজ করলো তা আমাদের দেখার বিষয় না।কাজ ভাল না হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।