মোঃ রফিকুল ইসলাম,বেনাপোল প্রতিনিধি || নিয়ন্ত্রহীন যশোরের শার্শা উপজেলার হাট বাজার গুলো। লাগামহীন হয়ে পড়েছে কাচাবাজারের তরকারির দাম । সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে,কাচা মাল সহ নিত্য পন্য। কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীদের যোগসোজে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।শার্শা উপজেলার বড়,বড় বেনাপোল,নাভারন, বাগআচড়া,শার্শা সহ গ্রামগঞ্জের হাট বাজার গুলো ঘুরে দেখা গেছে, কাচা তরিতরকারীর দাম আকাশ ছোয়া।
অধিকাংশ কাচা তরকারি দাম ৫০ টাকার উর্দ্ধে,যেমন সজনের ডাটা ২০০ টাকা,টমেটো ১৮৯ টাকা,বেগুন ১৪০ টাকা,উচ্ছে ১৬০ টাকা,কলা ৭০/৮০ টাকা, ঝুবী কচু ৮০ টাকা,মানকচু ৬০ টাকা,পুশি ৫০ টাকা,কাচা মরিচ ২৪০ টাকা, রশুন ২৪০ টাকা,পিয়াজ ৯০ টাকা,আলু ৫৫/৬০ টাকা। ৫০ টাকার নিচে আছে মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা,পুইশাক ২০ টাকা,শাকের ডাটা ২০ টাকা, পেপে ৪০ টাকা। পটল ৪০ টাকা,ঢেড়শ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এত মূল্য দিয়ে বাজার করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ ক্রেতারা। বিশেষ করে খেটে খাওয়া দিন মজুর ও শ্রমিকদের জন্য দূর্সাদ্ধে পরিনত হয়েছে। কারণ খেটে খাওয়া একজন দিন মজুরের প্রতিদিন সকাল ৮ থেকে ১২ ও ৪ টা পযর্ন্ত শ্রম দিয়ে পারিশ্রমিক পান ৩/৫শ টাকা। এই আয়ে বাজার করতে গিয়ে দেখা যায়,দশটির মধ্যে সাতটি পন্য ক্রয় করা যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় আরো ৩টি পন্য অনাদায় থেকে যাচ্ছে।বতর্মান সময়ে উর্দ্ধগতির বাজারে নুন আনতে পান্তা ফুরানো অবস্থা চলছে সর্বদা।
বাজার করতে আসা নাভারন বাজারে এক দিনমজুর ক্রেতা হানিফ জানান, সারাদিন খেটে ৫শ টাকা উপার্জন করে বাজার করতে এসে, চাহিদা অনুযায়ী পন্য কিনতে ব্যর্থ হচ্ছি। সাংসারিক অন্যান্য প্রয়োজন কিভাবে মেটাব সেটা ভেবেই দিশেহারা হয়ে পড়ছি।
বাজার করতে শিকার পুর থেকে আসা এক ক্রেতা ঝন্টু বলেন, থানা সদরের বড় বাজারে জিনিসপত্রের এই দাম হলে, আমাদের গ্রাম গঞ্জের হাট বাজারগুলোতে তাহলে কি অবস্থা হবে। এই উর্দ্ধগতির ছোবল থেকে রক্ষা পাব কবে তা আল্লাহ্ পাকই জানেন, এই সীমাহীন উর্দ্ধগতির ছোবল থেকে আমরা খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ গুলো বাচতে চাই।
নাভারন বাজারের খুচরা কাচা ব্যবসায়ী আজিম এর কাছে তরি তরকারির এই আকাশ ছোঁয়া মূল্য কেন? জানতে চাইলে বলেন, আমরা স্থানীয় ভাবে আঅৎ থেকে যেভাবে কিনি সেভাবে বেচাকেনা করি এবং সীমিত কেজিতে ৫/১০ টাকা লাভ রেখে বেচাকেনা করি।
বাজারের আরৎদার দুদু মিয়া বলেন,স্থানীয় ভাবে চাষ কম হওয়ায় বাজারে আমদানি কম। তরকারি চাষিরা পছন্দনীয় ও চাহিদা অনুযায়ী দাম দেওয়া না হলে,তারা বেজার হন এবং বেশি লাভের আশায় অন্যত্র কাঁচামাল বেচাকেনা করেন এবং দেশের বিভিন্ন জেলা যেমন বগুড়া,রাজশাহী,কুষ্টিয়া থেকে বিভিন্ন কাঁচামাল আসে। এত দূরদূরান্ত থেকে আশা যাতায়াত খরচ সহ লাভ না পাইলে সেখানকার ব্যবসায়ীরা আমাদের এখানে কাঁচামাল পাঠাবে কিভাবে, তারা তো লাভের আশায় দূর দূরান্ত থেকে এই কাঁচামাল আনে কিছু অতিরিক্ত লাভের আশায়। তরকারি চাষী আব্দুস সবুর এর কাছে এত চড়া মূল্য আড়ৎদারের কাছে চান কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, তরকারি চাষে যে পরিমাণ সার, কীটনাশক লাগে তার দাম আগে তুলনায় অনেক বেশি হওয়ায় এবং দ্বিগুণ খরচে আমরা এই ফসল উৎপাদন করি, আমরা চাষি মানুষ ফসলের ন্যায্য মূল্য না পাইলে,আমরা চাষাবাদ করব কেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নয়ন কুমার রাজবংশী সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
প্রশাসনিক ভাবে বাজার তদারকি কোন ব্যবস্থা না থাকায়, বাজারের ব্যবসায়ীরা যেনতেন ভাবে ইচ্ছা মাফিক কাঁচা মালের মূল্য নির্ধারণ করে বিক্রি করছে এবং আকাশ ছোঁয়া দামে পরিণত করেছে। যা সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে।দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির লাগাম টানতে সরকার সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।