অতনু চৌধুরী(রাজু)বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি || বাগেরহাটে মোংলায় সপ্তাহের ব্যবধানে হু হু করে বাড়ছে সব ধরনের সবজি ও মাছের দাম। দাম বাড়ায় সাধারণ ক্রেতাদের নাভিশ্বাস। কম কিনে ব্যয় কমানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা।
সপ্তাহের ব্যবধানে হু’হু করে মাছের দাম আকার ও প্রকারভেদে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে। সবজির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত। তবে গরু, খাসি, মুরগি, ব্রয়লারের দাম রয়েছে আগের মতোই।
বুধবার (১৭’জুলাই) মোংলার কাঁচা বাজারের সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮০০ থেকে ১ হাজার ৩০০, মেইদ প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১ হাজার ৩০০, জাভা ৩৫০ থেকে ৫০০, তুলার ডাঁটি ৪৫০, রুপচাঁদা ১ হাজার ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে হরিনা চিংড়ি, চামি চিংড়ি, টেংড়া, ফাইস্যার দাম ছিল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। বর্তমানে এসব মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। চাষের পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত।
গরুর মাংস ৬৮০, খাসি ৯০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ২২০, সোনালি ৩০০ এবং দেশি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব মাংসের দাম গত এক মাস আগেও এরকমই ছিল।
এ বিষয়ে মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন নামের এক সবজি বিক্রেতা বলেন, সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে সবজির দাম। আলু প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭৫, বেগুন ১০০-১৭৫, টমেটো ১৫০-২৫০, করলা ১০০, কাঁচা মরিচ ৩৫০-৪০০, লাউ ৪০-৬০, কচুমুখীঁ ১০০ থেক ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাউ প্রতিটি ২০-৩০ টাকা থাকলেও, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকায়।
এ বিষয়ে সবজি বিক্রেতা মোঃ আমজাদ খান বলেন, পুঁইশাক, লালশাক, কলমিশাক, লাউশাক প্রতি আঁটি আগে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ২০-৩০ টাকা। মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ এবং পটোল ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে মাছ ক্রেতা কুলসুম বেগম বলেন, আমি মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ। সন্তানদের মুখে আমিষ তুলে দেওয়ার জন্য একটি পাঙাশ মাছ কিনছি ২৫০ টাকায়। কিন্তু সেই পাঙাশ মাছের দামও বেড়েছে কেজিতে ৭০-৮০ টাকা। ১৮০ টাকা কেজি দরের সিলভারকার্প মাছ আজ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়। তেলাপিয়া ১২০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। এভাবে দ্রব্যমূলের দাম বাড়তে থাকলে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের কপালে আর কিছুই জুটবে না।
এ বিষয়ে মাছ বিক্রেতা সোহাগ শেখ বলেন, সাগরে মাছ ধরা বন্ধ, তাই মাছের সরবরাহ কম। এ জন্য দাম বেড়েছে। সাগরের মাছ চলে আসলে মাছের দাম অর্ধেকে নেমে আসবে।
এ বিষয়ে সবজি বিক্রেতা মোঃ আব্দুল ছত্তার হাওলাদার বলেন, বাজারের সবকিছুর দাম দ্বিগুণ। মানুষের পকেটে টাকা নেই। এভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম বাড়লে আমাদের বেঁচে থাকা কষ্ট হয়ে যাবে। তাই সরকারের কাছে আকুল আবেদন করছি যে আমাদের দিকে তাকিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম একটু কমিয়ে দেন।
এ বিষয়ে মাংস বিক্রেতা মোঃ সোহাগ শিকদার বলেন, মাংসের দাম বাড়েনি আগের থেকে আরও দাম একটু কমেছে । তবে ঈদের পরে বেচাকেনা অনেক কম। আগে দুই-তিনটা গরু জবাই দিতাম এখন একটা জবাই দিয়ে থাকি, তবু চলে না। কারণ এখন মানুষের পকেটে টাকা নেই, আবার বৃষ্টির জন্য লোকজন আসে কম।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বাগেরহাট জেলার সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান বলেন, নিয়মিত নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার মনিটরিং করছি। কোথাও অসংগতি পেলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।