সরদার বাদশা নিজস্ব প্রতিবেদক || দেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট করার জন্য ফ্যাসিবাদের দোসররা অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য কর্মতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের এই বিজয়কে দুষ্কৃতকারীরা যেন নস্যাৎ করতে না পারে এজন্য সাংবাদিকদেরকে সোচ্চার থাকতে হবে এবং যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা পালন করতে হবে। গতকাল ২৩শে আগস্ট শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে খুলনা সোনাডাঙ্গাস্থ আল-ফারুক সোসাইটিতে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলামপরওয়ার এসব কথা বলেছেন। তিনি আরো বলেছেন
প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের ঐক্যকে আরও দৃঢ়তার এবং মজবুত করতে হবে। আমরা একটা ষড়যন্ত্রের মধ্যে সময় অতিবাহিত করছি। তিনি বলেন, হাজারো প্রাণের বিনিময়ে আমরা এই দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছি। দেশ গড়ার কাজে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিয়োজিত রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি জনগণের ঐক্য সুদৃঢ় হবে এবং ছাত্র-জনতার সঙ্গে একাকার হয়ে যেকোনো ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্ত আমরা মোকাবিলা করব ইনশাআল্লাহ।
এ সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও অঞ্চল টিম সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন, মহানগরী নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান, জেলা নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা কবিরুল ইসলাম,মহানগর সেক্রেটারি এড. শেখ জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলাল, জেলা সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান,মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি এড. শাহ আলম ও প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম,জেলা সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম, এড. মোস্তাফিজুর রহমান,অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস,অধ্যক্ষ গওসুল আযম হাদী, মহানগরী ছাত্রশিবির সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন ও সেক্রেটারি মুহাম্মদ নুরুল্লাহ , জেলা সভাপতি মোঃ রিয়াদ হোসাইন বেলাল, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের মহানগরী সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অধ্যাপক মিয়া পরওয়ার সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলেন, আজ যেখানে বসে আমরা আপনাদের সাথে মতবিনিময় করছি সেখানে ১০/১২ বছর আগে এখানেই জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখার পর তৎকালীন সরকারের পেটোয়া বাহিনী এখানে হামলা করেছিল। তারা শুধু হামলা করেই ক্ষ্যান্ত হননি তাকেসহ আমাদের হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তারা এই আল ফারুক সোসাইটি ও মাদ্রাসাটি দখল করে তাদের নাম দিয়েছিল।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে তারা দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছে। আমাদের এটি ট্রাস্টের সম্পত্তি। এটা দখল করে রাখা যায় না। তারা এখান থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা লুটপাট করেছে। আমরা বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। তিনি অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, একটি অবৈধ সরকার একটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করতে পারে না। আমীরে জামায়াতের নির্দেশে দেশের জনগণ সে ব্যাপারে কোন আন্দোলন করেননি। তারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে গিয়ে তারাই দেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছে। আমরা আশা করি খুব শিগগিরই যে নির্বাহী আদেশে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল সেই নির্বাহী আদেশে আমাদের অধিকার ফিরে পাবো ইনশাল্লাহ। সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের এই বিজয়কে দুষ্কৃতকারীরা যেন নস্যাৎ করতে না পারে এজন্য সাংবাদিকদেরকে সোচ্চার থাকতে হবে এবং কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, হাজারো মানুষের তাজা প্রাণ ও রক্তের বিনিময়ে আজকে বাংলাদেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে। এ অর্জনের একমাত্র কৃতিত্ব শিক্ষার্থীদের, আমাদের সন্তানদের। আমরা যা গত ১৫ বছরে করতে পারিনি আমাদের সন্তানেরা তা করে দেখিয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে দ্বিতীয় বারের মতো স্বাধীন করার জন্য আপনাদের প্রিয়জন শহিদ হয়েছেন। শাহাদাৎবরণকারী এসব ছাত্র জনতা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। সরকারকেই সকল শহিদের পরিবারের ভরণপোষণের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রত্যেকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। যাদের রক্তের ওপরে আজকের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সে সব শহিদ পরিবারের সার্বিক প্রয়োজন পূরণে এগিয়ে আসতে হবে। যারা আহত হয়েছে এবং যারা এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছে তাদের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের সকলকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পুনর্বাসন করতে হবে। তিনি বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, কথিত বন্ধু ভারত ফারাক্কাসহ অভিন্ন ৫৪টি নদীতে বাঁধ দিয়ে বাংলাদেশের বিশাল এলাকা মরুভূতিতে পরিণত করেছে। ভারত শুকনা মওসুমে পানি আটকিয়ে রাখে,আর বর্ষায় মওসুমে রাতের আঁধারে একসাথে সব গেট খুলে দেয় তাহারি ধারাবাহিকতায় বন্যায় ফেনী,নোয়াখালী,লক্ষ্মীপুর,কুমিল্লা,চট্টগ্রাম,খাগড়াছড়ি, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জসহ দেশের পূর্বাঞ্চলের ১২টি জেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে এসব এলাকার বাড়িঘর, রাস্তা-ঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সবকিছু বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অর্ধকোটি মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তারা।
গ্রীষ্মে যখন আমাদের পানির প্রয়োজন হয়,তখন তারা আমাদেরকে পানি না দিয়ে শুকিয়ে মারে। পানির অভাবে হাজার হাজার একর জমির ফসল নষ্ট হয়। আবার বর্ষার মওসুমে যখন পানির প্রয়োজন নেই, তখন পানি ছেড়ে দিয়ে আমাদেরকে বন্যায় ভাসায়। ভারত সরকারের এহেন অমানবিক কর্মকান্ডে আমরা হতবাক। স্বভাবতই আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে ভারত আমাদের কেমন বন্ধু!
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।