ইমরুল ইসলাম ইমন,খুলনা প্রতিনিধি || বিএল কলেজ অভ্যন্তরের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া নামের ছাত্রীনিবাসের নামফলক ২০২০ সালে রাতের আঁধারে ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছিল নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ। অধ্যক্ষের পূর্বানুমতি সাপেক্ষে গত মঙ্গলবার দুপুরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলের নামফলকের স্থানে প্যানাসাইন টানাতে গেলে যৌথবাহিনী দিয়ে চরম অসৌজন্যমূলক ব্যবহার করেন অধ্যক্ষ সেখ মোঃ হুমায়ুন কবীর। ঐতিহ্যবাহী বিএল কলেজ অভ্যন্তরে নগ্ন দুর্ব্যবহার ও ফ্যাসিস্ট আচরণের বহিঃপ্রকাশ করায় ৭ দিনের মধ্যে অধ্যক্ষ সেখ মোঃ হুমায়ুন কবীরের পদত্যাগের জোর দাবি জানিয়েছে ছাত্রদল। অন্যথায় শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে দুর্বার আন্দোলনে যাবার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি। তারপর এ কর্মসূচিতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর দুর্ঘটনা ঘটলে তার জন্য একমাত্র দায়ী থাকবেন বিএল কলেজের অধ্যক্ষ সেখ মোঃ হুমায়ুন কবীর।
গতকাল বুধবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএল কলেজের অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্স শেষবর্ষের শিক্ষার্থী ও কলেক শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক ইয়াছিন গাজী।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন,গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে যেয়ে খুলনা মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম-আহবায়ক শেখ সাদী, বিএল কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও নগর ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ শাহেদ, কলেজ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।এসময় নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ কর্তৃক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছাত্রনিবাসের নামফলক অপসারণের ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়।
এর আগে,গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম-আহবায়ক মাসুদ পারভেজ বাবু ও শেখ সাদী, দৌলতপুর থানা বিএনপি’র আহবায়ক মুর্শিদ কামাল ও সদস্য সচিব ইমাম হোসেন, জাসাস নগর শাখার আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার নূর ইসলাম বাচ্চুসহ ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ অধ্যক্ষের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। গেল দু’দিনের সৌজন্য সাক্ষাতের অধ্যক্ষ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছাত্রনিবাসে নামফলকের স্থানে প্যানাসাইন টানাতে সানন্দে অনুমতি দেন।
গত মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে কলেজ ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছাত্রীনিবাসের নামফলক প্যানা টানাতে গেলে যৌথবাহিনী ডাকিয়ে নেতৃবৃন্দকে আটকের অপচেষ্টা চালিয়েছেন বিএল কলেজ অধ্যক্ষ সেখ মোঃ হুমায়ুন কবীর।
চরম ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করে ছাত্রদল নেতা আরও বলেন,অধ্যক্ষের এধরণের দ্বিমুখী আচরণ মনুষ্যত্ব বিবর্জিত। এ ধরনের মনুষ্যত্বহীন ব্যক্তি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ বিএল কলেজের সর্বোচ্চ পদে আসীন থাকতে পারে না। তাই আগামী সাতদিনের মধ্যে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর অধ্যক্ষ প্রফেসর সেখ মোঃ হুমায়ুন কবীরকে পদত্যাগ করে ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত দ্বিতীয় স্বাধীনতার স্বপক্ষের খাঁটি দেশপ্রেমিক শিক্ষককে দায়িত্ব অর্পণের জোর দাবি সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন,বিএল কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের পূর্বে তালা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ফ্যাসিবাদ সরকারের দোসর হিসেবে স্বাক্ষর রেখেছিলেন প্রফেসর সেখ মোঃ হুমায়ুন কবীর। শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে তালা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে তিনি পতিত আওয়ামী সরকারের বিশ্বস্ততার প্রমাণ দিয়েছেন। আড়াই বছর তালা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকলে সপ্তাহে এক/দু’দিনের বেশি কলেজে উপস্থিত থাকতেন না তিনি। বিএল কলেজের দায়িত্বভার গ্রহণ করেই শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে চরম অসৌজন্যমূলক দৃঢ়ব্যবহার শুরু করেন। অধ্যক্ষ সেখ মোঃ হুমায়ুন কবীরের দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে গত রবিবার বিএল কলেজের শিক্ষকরা অধ্যক্ষের দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে বৈঠক করেছেন। বিএল কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থী, শিক্ষকবৃন্দ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবিলম্বে অধ্যক্ষের পদত্যাগের জোর দাবি জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নগর ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক ইস্তিয়াক আহমেদ ইস্তি,সাবেক সদস্য সচিব তাজিম বিশ্বাস, নগর ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও বিএল কলেজ শাখার প্রাক্তন আহবায়ক রিয়াজ শাহেদ প্রমুখ।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।