ইমরুল ইসলাম ইমন,খুলনা প্রতিনিধি || বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, শহিদ পরিবারের লোকজন ছাড়াও সব রাজনৈতিক দল ও গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ৩১ ডিসেম্বর শহিদ মিনারে জড়ো হবেন। ওইদিন নাৎসিবাদী সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগকে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা ঘোষণা করা হবে।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১২.০০ টায় রাজধানীর বাংলামোটর কার্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি জরুরি এ সংবাদ সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন।
আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, এরই মধ্যে ঘোষণাপত্রের খসড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠানো হয়েছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ৩১ ডিসেম্বর ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে।
সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, বিপ্লবের ঘোষণাপত্র আরও আগেই দেওয়া প্রয়োজন ছিল। তবে রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে বিভিন্ন সেক্টর থেকে সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, ঘোষণাপত্র বাংলাদেশের একটি দলিল হয়ে থাকবে, যা বিগত সিস্টেমগুলো যেগুলো মানুষ গ্রহণ করেনি এবং নতুন যে সিস্টেম চালু হবে তার পার্থক্য হিসেবে। নতুন যারা দেশ পরিচালনায় আসবে তাদের জন্য এ ঘোষণাপত্র একটি নির্দেশক হিসেবে থাকবে। এটি বাংলাদেশের সব মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র ৫ আগস্ট না হওয়ার কারণে বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে ফ্যাসিস্টরা। এটি গণ-অভ্যুত্থানের লেজিটিমেসিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। গণ-অভ্যুত্থানকে ঘিরে মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়েছে এবং ’৭২-এর সংবিধান যে মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে, তার একটি দালিলিক প্রমাণ হিসেবে ৩১ ডিসেম্বর জাতির সামনে মুজিববাদী ’৭২-এর সংবিধানের কবর রচিত হবে। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে মানুষের আকাঙ্ক্ষা ঘোষণার ৩১ ডিসেম্বর মানুষ শহীদ মিনারে জড়ো হবে।
সারজিস আলম জানান,আগামী ৩১ ডিসেম্বর বেলা তিনটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠান করে এ ঘোষণাপত্র দেবে তারা।
কী হতে চলেছে আগামী ৩১ ডিসেম্বর, কী থাকছে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রে?’ এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গতকাল থেকে শুরু হয় আলোচনার ঝড়।
‘৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনার’ একই ধরনের পোস্ট দিয়ে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যরা। গত শনিবার রাতে একযোগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ক্যাম্পেইন চালাচ্ছেন তারা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আকতার হোসেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ,সমন্বয়ক রিফাত রশীদসহ আরও অনেকেই।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ লিখেছেন,‘৩১ শে ডিসেম্বর শহীদ মিনার। ৩৬ জুলাই এসে মিলিত হোক ৩১ ডিসেম্বরে।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেছেন, ‘কমরেডস, ৩১ ডিসেম্বর! নাউ ওর নেভার।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম লিখেছেন, ‘৩১ ডিসেম্বর! শহীদ মিনার বিকাল ৩টা। এখনই সময়, বাংলাদেশের জন্য…’। সমন্বয়ক রিফাদ রশিদ লিখেছেন, ৩১ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এখন পর্যন্ত তাদের সবচেয়ে বড় বিপ্লবী স্টেপ নিতে যাচ্ছে।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, ‘৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ বিপ্লবীরা প্রস্তুত তো?’।
এছাড়া জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটওয়ারী তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘অল আয়েজ ওন শহীদ মিনার, ৩১ ডিসেম্বর, সময় বিকেল ৩টা।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সঙ্গে যুক্ত থাকা অন্যান্য সদস্যরাও একই বিষয় নিয়ে প্রত্যেকের ফেসবুকে পোস্ট করে যাচ্ছেন।
আগামী ৩১ ডিসেম্বর ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। শনিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন,শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী আমল থেকে কেন জুলাই বিপ্লবের রূপ নিলো, কীভাবে নিলো, ৯ দফা থেকে ১ দফায় আমাদের কেন আসতে হলো, ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষা কী ধরনের ছিল; এসব সামগ্রিক বিষয় নিয়ে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা দিবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।