অতনু চৌধুরী(রাজু)বাগেরহাট প্রতিনিধি || বাগেরহাট’সহ দক্ষিণাঞ্চল পৌষের শীতে কাঁপছে। ভোর থেকে চারদিক কুয়াশায় আচ্ছন্ন। সেই সাথে মাঝে মধ্যে ঠাণ্ডা বাতাস বয়ে যাচ্ছে। সূর্যের দেখা মিলছে না।
কনকনে ঠাণ্ডায় সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। বিশেষ করে দিনমজুর আর ছিন্নমূল মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে দুপুর পর্যন্ত শীতের তীব্রতা অনেকটা বেশি অনুভূত হচ্ছে। অনেকে খড়কুটা জ্বালিয়ে আগুনের তাপ নিচ্ছে।
রবিবার (০৫’জানুয়ারি) সকালে মোংলা উপজেলা মিঠাখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার সরজমিন ঘুরে বা কয়েকজন দিনমজুর ও ছিন্নমূল মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই শীতে তাদের প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে। জবুথুবু করে তাদের রাত কাটছে। সকালে প্রচণ্ড শীতের কারণে তারা কাজ করতে পারছেন না। তাদের আয় কমে গেছে। পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক কষ্টে তাদের দিন কাটাচ্ছেন।
এ বিষয়ে আরও জানা যায়,এতে শীতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন নিতান্ত দরিদ্র শ্রেণী পেশার লোকজন। শীতে গরম কাপড় কেনার কোনো সামর্থ্য না থাকলেও তারা চেয়ে থাকেন ত্রাণের (কম্বল সহায়তা) দিকে। অথচ এখনও পর্যন্ত তারা পাননি স্থানীয় প্রশাসন’সহ কোনো সংগঠনের পক্ষ থেকে কোনো সাহায্য সহযোগিতা।তা নিয়ে ক্ষুদ্ধ এসব শীতার্ত মানুষেরা।এদিকে ঠাণ্ডার কারণে বেড়েছে সর্দি,কাশি,জ্বর,শ্বাসকষ্ট’সহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে শুরু করেছে।
মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়,ঠাণ্ডায় বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় শীতজনিত রোগের প্রার্দুভাব বেড়েছে। ঠাণ্ডার কারণে পাতলা পায়খানা, সর্দি, কাশি, জ্বর, নিউমনিয়া ও শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে।
মোংলা উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্স সূত্রে আরও জানা যায়, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে শতকরা ২৫ ভাগ রোগী ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত। ঠাণ্ডা যেন না লাগে সেক্ষেত্রে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে বেশি সতর্ক থাকতে হবে। ফুটন্ত বা বিশুদ্ধ পানি পান করতে বলা হচ্ছে। পাতলা পায়খানা, সর্দি, কাশি, জ্বর, নিউমনিয়া ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেন এই চিকিৎসক। একই সাথে কেউ যদি খড়কুটা জেলে আগুনের তাপ নেয় সেক্ষেত্রে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়,শীতের তীব্রতা আরও কয়েকদিন থাকলে বোরো ধানের বীজতলা ক্ষতি হতে পারে। এখন পর্যন্ত বীজতলা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। শীত থেকে রক্ষা পেতে কৃষকদেরকে বোরো ধানের বীজতলায় প্রতিদিন সন্ধ্যায় পানি প্রবেশ করিয়ে সকালে ওই পানি বের করে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সূত্র মতে জানা যায়,এমন কুয়াশা আরও দু-তিন দিন থাকবে। এই সময়ে ঠান্ডা এখনকার মতোই থাকবে। এরপর কুয়াশা কেটে গেলে রাতের তাপমাত্রা ক্রমেই কমে শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে। জানুয়ারির ৬ থেকে ৭ তারিখের পর রাতের তাপমাত্রা কমে ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে আসতে পারে। আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, জানুয়ারিতে একটি থেকে তিনটি মৃদু থেকে মাঝারি এবং একটি থেকে দুটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।