অতনু চৌধুরী(রাজু)বাগেরহাট প্রতিনিধি || বাগেরহাটের মোংলায় উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের ০৬’নং ওয়ার্ডের দামেরখন্ড এলাকার নিউটন মজুমদার(৪৫) নামের স্থানীয় এক মৎস্য ঘের মালিককে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখানো’সহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদান করে দামেরখন্ড মৌজার এস এ ১৩৮নং খতিয়ানের ৩.১৯ একর জমি ৪ আনা অংশের.৮০’একর আয়তনের একটি মাছের ঘের দখল করে পানি সেচ দিয়ে প্রায় ৩’লক্ষাধিক টাকার মাছ লুট করার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার(১৫’জানুয়ারি) রাতে মোংলা উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের ০৬’নং ওয়ার্ডের দামেরখন্ড এলাকায় এই মাছের ঘের দখল ও মাছ লুটের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ঘের মালিক নিউটন মজুমদার (৪৫) স্থানীয় ইউপি মেম্বার অজিত মজুমদার, বিকাশ মহালদার ও চিরঞ্জিত মহালদার এবং মুরাদ সরদার’সহ কয়েকজনকে আসামি করে বাংলাদেশ পুলিশ সেবা ৩৩৩ নম্বর’সহ চটেরহাট পুলিশ ক্যাম্প ও মোংলা থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ করে তাদের ঘের দখল ও মাছ লুট থেকে রক্ষাতে সেবা চান কিন্তু আইনি কোনো পদক্ষেপ পাইনি ওই ভুক্তভোগী পরিবার।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ওই মৎস্য ঘের মালিক নিউটন মজুমদার বলেন, তিনি মোংলা উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের কুদ্দুস ইজারাদারের কাছ থেকে দামেরখন্ড মৌজার এস এ ১৩৮’নং খতিয়ানের ৩.১৯’একর জমি ৪’আনা অংশের .৮০’একর আয়তনের একটি জমি ক্রয় করে দীর্ঘ ৪০’বছর ধরে বিভিন্ন প্রকারের মৎস্য চাষ করি। বুধবার রাতে সুন্দরবন ইউনিয়নের ৬’নং ওয়ার্ডের দামেরখন্ড এলাকায় স্থানীয় ইউপি মেম্বার অজিত মজুমদার, বিকাশ মহালদার ও চিরঞ্জিত মহালদার এবং মোঃ মুরাদ সরদারের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২’জন সন্ত্রাসী তাকে দেশীয় অস্ত্র দেখিয়ে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রথমে মাছের ঘেরটি দখল করে মাছের ঘেরের পানি সেচ দিয়ে প্রায় আনুমানিক ৩’লক্ষাধিক টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায়। ওই ইউপি মেম্বার অজিত মজুমদার দীর্ঘ দিন ধরে আমার স্ত্রীকে বিভিন্ন ধরনের বাজে কথা ও তার সাথে বাজে কাজে লিপ্ত হওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে কিন্তু তিনি রাজি হন না বা স্থানীয় ওই ইউপি মেম্বার অজিত মজুমদারের বিরুদ্ধে আমার স্ত্রী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানায় অভিযোগ দায়ের করার কথা বললে। ওই অজিত মজুমদার তার মেম্বারিত বা ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমার মৎস্য ঘের জবরদখল করে লুটপাট চালায়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নিউটন মজুমদার কান্না জনিত কন্ঠে আরও বলেন, আমি বিভিন্ন জায়গায় থেকে ধার দেনা করে ওই মৎস্য ঘেরে বিভিন্ন প্রকার মাছ ছাড়ছি কিন্তু এখনো এই ধার দেনা কি করে পরিশোধ করবো যানি না। আমি এই অজিত মজুমদার, বিকাশ মহালদার ও চিরঞ্জিত মহালদার এবং মুরাদ সরদারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি ও আমার ল্যায্য দাবি বুঝে পাওয়ার জন্য প্রশাসন’সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সু-দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এ বিষয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, নিউটন মজুমদার ওই জমি সুন্দরবন ইউনিয়নের কুদ্দুস ইজারাদারের কাছ থেকে ক্রয় করে দীর্ঘ ৪০’বছরের মতো সে জমিতে মাছও চাষ করছিলেন। এবং প্রতিনিয়ত নিউটন মজুমদারকে এই ঘের থেকে মাছ ধরতে বা বিভিন্ন ধরনের মাছের পোনা ছাড়তে দেখি কিন্তু হঠাৎ নিউটন মজুমদারের সঙ্গে এমনটা হলো এটা আমরা মেনে নিতে পারছি না। আমাদের সঙ্গেও আগামীতে হবে কিনা তার ভয়ে আছি। গত বুধবার রাতে স্থানীয় ইউপি মেম্বার অজিত মজুমদার, বিকাশ মহালদার ও চিরঞ্জিত মহালদার এবং মুরাদ সরদার’সহ তাদের দলবল নিয়ে এসে ঘেরটি দখলে নিয়ে পানি সেচ দিয়ে মাছ ধরে নিয়ে গেছে।
আমরা এমন ন্যাক্কারজন ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূল শাস্তি দাবি করছি।
এ অভিযোগের ব্যাপারে বিকাশ মহালদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিউটন মজুমদার যে জমিতে মাছ চাষ করছিল সেই জমি আমাদের এবং আমার বাবদাদার ক্রয়কৃত জমির। সে অবৈধভাবে এতদিন আমাদের জমিতে মাছ চাষ করছিলেন আমরা কোট থেকে রায় পেয়েছি তাই আমাদের জমি আমারা বুঝে নিয়েছি। তবে নিউটন মজুমদারে তার ওপর কোন হামলা বা মাছ লুটের ঘটনা ঘটেনি। যে মাছ ধরেছি তা যদি নিউটন মজুমদারের হয় তবে স্থানীয় ইউপি মেম্বার অজিত মজুমদার,মুরাদ সরদার’সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের মাধ্যমে তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
এ অভিযোগের বিষয়ে স্থানীয় ইউপি মেম্বার অজিত মজুমদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,নিউটন মজুমদার আমার বিরুদ্ধে আপনাদের কাছে যে অভিযোগ করেছে এইটা একেবারেই ভিত্তিন ও বানোয়াট। আর নিউটন মজুমদার একটি ফালতু প্রকৃতির লোক। এবঙ আপনারা নিউটন মজুমদার ও চিরঞ্জিত মহালদারের ঘেরের বিষয় টা কেন্দ্র করে আপনারা আমার কাছে আসছে কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে ওই ঘেরটা নিয়ে মামলা মোকদ্দমা চলছে এবং অনেক বার গ্যাঞ্জাম ও মারামারি হয়েছে ওদের মধ্যে। আর নিউটনে ঘেরের কাছে ওই ঘেরটি হওয়ায় লেট কেটে দিয়ে মাছ নিয়ে গেছে এবং ভিডিও করা আছে আমাদের কাছে বা আমার কাছে। কিন্তু দীর্ঘ ১’মাস হলো চিরঞ্জিত মহালদাররা কোট থেকে জমি টা বুঝে পাইছে এবং সকল কাগজ পত্র মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সাহেব কেও দেখাইছে বা আমাদের এখানের ক্যাম্পের আই সি স্যার রফিক সাহেব তাকেও দেখায়ছে এবং রফিক সাহেব সেই প্রথম থেকে এই পর্যন্ত সকল কিছু জানেন। আর যেহেতু ঘেরের সিসিন তো শেষ তাই ঘেরে মাছ গুলো রাখলে ঘেরের প্রসেসিং চলে না তাই দুই পক্ষ যাতে মারামারি না হয় তাই রফিক সাহেবকে বলেছি যে আপনি থেকে মাছ গুলো ধরেন আর ধরার পরবর্তীতে মাছ গুলো বিক্রি করে একখানে টাকা জমা রেখে দুই পক্ষের মধ্যে যে খরচা টা হয় রেখে দিয়ে দিতে আর সেই ভাবেই এই মাছ গুলো ধরা হয়েছে।
কিন্তু ওই ইউপি মেম্বার অজিত মজুমদার যে ভিডিও গুলোর কথা বলছেন তা দেখাতে পারে নাই।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানা বা কোথাও কোনো অভিযোগ বা মামলা দায়ের করেন নি ওই ভুক্তভোগী পরিবার তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।