আমজাদ হোসেন নওগাঁ || নওগাঁর মান্দায় তেঁতুলিয়া ইউনিয়নে কৃষক লীগ নেতা হাবিবুর রহমানের দঃশাসন এখনো শেষ হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে হাবিবুর আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় তার ভতিজা তেতুঁলিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি জীবন, ইমন, সাজু্, সজিব, আব্দুস সাত্তার, কাজেম সহ ১০ থেকে ১৫ জন সদস্যের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট বাহিনী গড়ে তুলেন।
এই বাহিনী মূল কাজ হচ্ছে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে এলাকার হাট-বাজার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ, মাদ্রাসা, গভীর নলকূপ, ডিস ব্যবসা সহ পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চাঁদাবাজি দখলদারিত্ব হুমকিধমকি মারপিট সহ নানা অপরাধ সংগঠিত করলেও অদৃশ্য শক্তির বলে কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়নি তৎকাল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের এই অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তো দূরের কথা মুখ খোলার সাহস পাননি কেউ। ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণভ্যর্থনের মধ্য দিয়ে সারাদেশে ফ্যাসিস্ট মুক্ত হলেও মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন সবাই হট এলাকা এখনো ফ্যাসিজম মুক্ত হয়নি।
এই বাহিনীর ভয়ে এখনো আতঙ্কে নির্ঘুম রাত্রি যাপন করেছেন তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন বসবাসরত জনসাধারণ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কৃষকলী নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব ১৫ বছর ধরে তেতুলিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের পদে থেকে অর্থ আত্মসাধের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও তিনি সাবাইহাট বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে, পানিয়াল জামে মসজিদের সদস্য, তেঁতুলিয়া কামারপাড়া বরেন্দ্র গভীর নলকূপের অপারেটর দায়িত্বে থেকে অতিরিক্ত টাকা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।এছাড়াও ২০ বছর ধরে পানিয়াল ও কামারপাড়া দুইটি গ্রামে গভীর নলকূপের মাধ্যমে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু গেল দুই মাস ধরে হাবিবুর রহমান প্রভাব খাটিয়ে পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেন। এতে করে স্থানীয় মাদ্রাসা মসজিদসহ দুটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। স্থানীয় সমাজ সেবক মজিবুর রহমান জানান, প্রভাব খাটিয়ে রমজান মাসে বিশুদ্ধ পানির সাপ্লাই বন্ধ করে দেয় এতে করে এলাকার মসজিদ মাদ্রাসাসহ স্থানীয় জনগণ চরম দুর্ভোগের পড়েছেন। যারা রমজান মাসে বিশুদ্ধ খাবার পানি বন্ধ করে দিয়েছেন তারা এটা ঠিক করে নাই। ওই গ্রামের রবিউল, রফিকুল, মন্টু মিয়া জানান, অপারেটর হাবিবুর রহমান সঠিকভাবে পানি দেয় না কিন্তু বুরো মৌসুমের প্রতি বিঘায় ২৪০০ শত টাকা করে ভাড়া আদায় করেন।
স্থানীয় মর্জিনা ও নাদেরুজ্জামান বলেন আমরা গরীব মানুষ দীর্ঘদিন ধরে সাপ্লাইয়ের পানি দিয়ে আমাদের যাবতীয় কাজ কাম করে থাকি। আমাদের টাকা পরিশোধ রয়েছে এরপরেও হাবিবুর পানি বন্ধ করে দিয়েছেন, বর্তমানে আমরা চরম বিপাকে রয়েছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকেই জানান, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতেও হাবিবুর ক্ষমতার দাপটে নানা অপকর্ম করেছেন। বর্তমানেও হাবিবুর রহমান তার ছোট ভাই তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোখলেসুর রহমান কামরুলের দাপটে নানা কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছেন।
এ ঘটনায় তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোখলেসুর রহমান কামরুল জানান, আমার পরিবারের আগেও কখনো দাপট ছিল না বর্তমানে কোন দাপট নেই, পূর্বে আমার বড় ভাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রিয়, গত নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট না করায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর দ্বারা মারধর ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ ব্যাপারে কৃষক লীগ নেতা হাবিবুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।
তবে তিনি বলেন নাজমুল হক নাজু ভাই বললে আমি সব পথ ছেড়ে দিব। এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক নাজমুল হক নাজুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেউ আমার সম্বন্ধে কিছু বলতেই পারে। এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। কিন্তু তেঁতুলিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার সেক্রেটারি হিসেবে হাবিবুর রহমান আমার কাছে ভালো মনে হয়।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।