ইমরুল ইসলাম ইমন, খুলনা খবর|| বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ঘোষণা করে ঈদের পর গেজেট প্রকাশ হতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ।
বৃহস্পতিবার ২৭ শে মার্চ নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। আদালত থেকে ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে ইসির করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, আদালতের রায়ের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল।
তাই আইন অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব। রায়ে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। রায়ের কপি পাওয়ার পর বিলম্ব করার কোনো অবকাশ নেই। সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন আমরা দ্রুতগতিতে তা বাস্তবায়ন করবো।’
এর আগে বৃহস্পতিবার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঢাকার প্রথম যুগ্ম-জেলা জজ মোঃ নুরুল ইসলাম ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ডিএসসিসি নির্বাচনের ফল বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করে রায় দেন। ইশরাক হোসেন অবিভক্ত ঢাকার সিটির মেয়র প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার ছেলে। এদিন রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন ইশরাক হোসেন।
রায়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে মেয়র হিসেবে সরকারের গেজেট বাতিল করা হয়। ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়।
জানা যায়, সিটি নির্বাচনে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অগ্রহণযোগ্যতার অভিযোগে ডিএসসিসি নির্বাচন ও ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেছিলেন মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন।
মামলায় তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা, রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ আবদুল বাতেন ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসসহ মোট আট জনকে বিবাদী করা হয়।
ইশরাকের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, “অনিয়ম, দুর্নীতি ও অগ্রহণযোগ্যতার অভিযোগে আমরা নির্বাচন বাতিল চেয়ে মামলা করেছিলাম। তাকে মেয়র হিসেব ঘোষণার আবেদন করেছিলাম। আদালত আজ আমাদের পক্ষে রায় দিলেন। ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন।”
ইশরাক হোসেন : রায় ঘোষণার পর আদালত চত্বরে উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি, এটা হলো মূল বিজয়। আমি মেয়র হতে পারবো কি না বা শপথ নেব কি না, সেটা সম্পূর্ণ দলীয় বিষয়।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ন্যায়বিচার ফিরে আসুক। ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার পতনের পর সাধারণ মানুষ যে ন্যায়বিচার পায়, সেটার ধারা শুরু হচ্ছে বা শুরু হয়েছে। এই ধারাটা অব্যাহত থাকুক। বাংলাদেশের সর্বস্তরে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা আমাদের মূল উদ্দেশ্য।
নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০২০ সালের ১ ফেব্র“য়ারি ধানের শীষ প্রতীকে মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। সেই নির্বাচনে দিন দুপুরে ভোট ডাকাতি হয়েছিল। নির্বাচনের প্রচারণার শুরু থেকেই আমরা অভিযোগ দিয়ে আসছিলাম।
তখন আমাদের প্রচারণাকে বিভিন্ন ভাবে বাধা দেওয়া হয়েছিল। তখনকার বিএনপি’র সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিনা মামলায় গ্রেফতার করা হয়। আমাদের প্রচারণার মাইক ভাঙচুর করা হয়েছে। পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে।
ইশরাক বলেন, প্রচারণার শেষ পর্যায়ে আমার মিছিলে হামলা করে আমাদের অংসখ্য নেতা-কর্মীদের মেরে রক্তাক্ত করা হয়েছে। নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতি ও ভোট কারচুপি করা হয়। আমরা তখন মামলা করেছিলাম। সব কিছু আইনগত নভাবে সম্পন্ন হয়েছে।’
এর আগে ২০২০ সালের ১ ফেব্র“য়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম উত্তরে ও ফজলে নূর তাপস দক্ষিণের মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচন কমিশন ২ রা ফেব্র“য়ারি ভোটের গেজেট প্রকাশ করেন। তারা শপথ গ্রহণ করে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তাদের মেয়র পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
অন্যদিকে গত বছরের ১ অক্টোবর নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল এবং যুগ্ম-জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ খাইরুল আমীনের আদালত বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী ডাঃ শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ঘোষণা করেন। চসিক নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ফলাফল বাতিল চেয়ে ২০২১ সালের ২৪ ফেব্র“য়ারি ফলাফল বাতিল চেয়ে মামলা করেছিলেন বিএনপি’র এ নেতা।
২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। যদিও ওই সময় ফলাফল জালিয়াতির অভিযোগ করেছিলেন বিএনপি’র প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ডাঃ শাহাদাত হোসেন।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।