ইমরুল ইসলাম ইমন,খুলনার খবর || বেশ কয়েক দিন ধরে যশোরে দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার সেই তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যা এ দিন দেশের ও এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
বিকেল ৩টার দিকে এ তাপমাত্রা রেকর্ড করে যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণাধীন আবহাওয়া অফিস।
তীব্র দাবদাহের কারণে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিশেষ করে, এ দিন ঈদের কেনাকাটা করতে আসা মানুষের গরমে নাভিশ্বাস উঠে যায়। তবে দাবদাহে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন রিকশাচালকেরা।
চাইলেই গরমে বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ নেই তাদের। জীবিকার তাগিদে এই তীব্র গরমের মধ্যে কষ্ট করতে হয়। আর গরমের কারণে কমেছে তাদের আয়ও। শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে এ দিন দুপুরে লোকজনের উপস্থিতি গত কয়েক দিনের চেয়ে কম দেখা গেছে। রেলগেট এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, ১০টার পর থেকে রোদের তাপ বেশি বোঝা যায়। দুপুরে সেই তাপমাত্রা দ্বিগুণ হয়।
আব্দুর রহমান নামের আরেকজন বলেন, ‘দুপুরে জুমার নামাজ পড়তে বাইরে এসে গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। মসজিদের সিঁড়িতে পা রাখা যাচ্ছে না, এমন গরম ছিল।’
বিকেল ৪টা পর্যন্ত শহরের মানুষের চলাচল কম দেখা গেলেও ঈদুল ফিতরের কেনাকাটা উপলক্ষে বিকেল ও সন্ধ্যার পরে শহরে মানুষের উপস্থিতি বাড়তে থাকে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গত বছরের ৩০ জুনে ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠে তাপমাত্রা। এর আগে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৯৭২ সালের ১৮ মে। সেদিন রাজশাহীতে তাপমাত্রা ছিল ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চুয়াডাঙ্গা : মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গা। জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জেলার জনপদ। সব থেকে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন রোজাদাররা।
কৃষক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশা চালকরা গরমে অস্থির হয়ে পড়ছেন। শুক্রবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ। যা চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
এদিকে তাপপ্রবাহের কারণে অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতেও পরামর্শ দিচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। ঈদে মার্কেটগুলোতে কেনাকাটা জমে উঠলেও ভ্যাপসা গরমের কারণে বেলা বাড়ার সাথে সাথে লোকজন সীমিত আকার ধারণ করছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আওলিয়ার রহমান পরামর্শ দিয়ে বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে।
অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতেও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। রোজাদারদের সন্ধ্যার পর থেকে বেশি বেশি পানি ও ফলমূল খেতে বলা হচ্ছে। শিশু, কিশোর ও যারা রোজায় থাকছে না তাদেরকে শরবত পান করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, আর কয়েকদিন পর পবিত্র ঈদুল ফিতর। কেনাবেচা জমে উঠলেও অতিরিক্ত গরমের কারণে বেলা ১২টার পর থেকে বিকেল পর্যন্ত মার্কেটগুলোতে লোকজনের আনাগোনা খুবই সীমিত।
চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যৈষ্ঠ আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আজ রেকর্ড করা হয়েছে। চলমান তাপ প্রবাহ আরও বিস্তার লাভ করতে পারে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।