মোঃ জসিম উদ্দিন তুহিন, যশোর প্রতিনিধি ||আমন মৌসুমে যশোরের সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহে চুক্তি না করায় ৬২টি চালকলের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে এবং চুক্তি অনুযায়ী চাল সরবরাহ না করায় অনেক মিলমালিকের জামানত কেটে নেওয়া হয়েছে।জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. সেফাউর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় চাল সরবরাহ করতে পারে এমন চুক্তি করার যোগ্য ১৬৩টি চালকল রয়েছে কেশবপুরে ৩৪টি, মণিরামপুরে ২৮টি, সদর উপজেলায় ২৬টি, অভয়নগরে ৮টি, ঝিকরগাছায় ৯টি, শার্শায় ২৩টি, বাঘারপাড়ায় ৭টি এবং চৌগাছায় ২৮টি।এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১১টি, মণিরামপুরে ১৫টি, কেশবপুরে ২৬টি, অভয়নগরে ৪টি, ঝিকরগাছায় ৭টি, শার্শায় ১৮টি, বাঘারপাড়ায় ৫টি এবং চৌগাছায় ১৫টিসহ মোট ১০১টি চালকল চুক্তি করেছে। বাকি ৬২টি চালকল চুক্তি করেনি।
চুক্তি না করা এসব মিলের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে—যার মধ্যে ১০টি অটো ও ৫২টি হাসকিং মিল রয়েছে।সূত্র জানায়, আমন মৌসুমে যশোরে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪ হাজার ২৪৭ টন। চুক্তি অনুযায়ী ১০১টি মিল থেকে সাত হাজার ৭৩৪ টন চাল সরবরাহের কথা থাকলেও তারা সরবরাহ করেছেন সাত হাজার ৩৭০ টন।চুক্তি অনুযায়ী, মূল্যমানের দুই শতাংশ জামানত রাখেন মিলাররা।
যারা অর্ধেকের বেশি চাল সরবরাহ করেছেন, তাদের জামানত আনুপাতিক হারে কাটা হয়েছে। যারা অর্ধেকের কম চাল সরবরাহ করেছেন, তাদের জামানত সম্পূর্ণ কেটে নেওয়া হয়েছে সার্বিকভাবে যশোর থেকে আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় অর্ধেক চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।যশোর খাদ্য অফিসের চুক্তিভুক্ত মিলমালিক রুহুল আমিন দাবি করেন, ‘সরকার প্রতি কেজি চাল কিনছে ৪৭ টাকা দরে। বাজারমূল্য আর সরকার নির্ধারিত দামের মধ্যে বিশাল ফারাক। বিদ্যুতের দাম বেশি, শ্রমিক খরচ বেড়েছে। আবার ধানের দাম বেশি হওয়ায় প্রতি কেজি চালের উৎপাদন খরচ সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে দুই থেকে তিন টাকা বেশি পড়ছে। সরকারের ধার্য করা দামে চাল সরবরাহ করলে মূল ধনই থাকে না।মিলমালিকরা বলছেন, তারা বহুবার খাদ্য অধিদপ্তরের কাছে সরকারের নির্ধারিত মূল্য কিছুটা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি।খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু নাসের স্বাক্ষরিত ৬ এপ্রিলের চিঠিতে বলা হয়েছে, যেসব মিলমালিক লাইসেন্স নিয়েছেন, তারা সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে নির্ধারিত পরিমাণ চাল সরবরাহ করতে বাধ্য থাকবেন।
আদেশ অনুযায়ী চুক্তি না করলে বা চাল সরবরাহ না করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সেফাউর বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ‘অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যশস্য সংগ্রহ, ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ আদেশ ২০২২’ এর ৭ ও ৮ ধারার আওতায় মিলমালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘চুক্তি না করায় যশোরের ৬২ জন মিলারের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। যারা চুক্তি অনুযায়ী চাল সরবরাহ করেননি, তাদের জামানত কেটে নেওয়া হয়েছে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।