খুলনা প্রতিনিধি || রূপসা ঘাট ঘিরে মালিকানা সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব আবারো নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের রায় থাকা সত্ত্বেও জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সেলিম রেজার নেতৃত্বে ঘাট দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে, যা প্রশাসনিক ও আইনি মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত ১৬ এপ্রিল সকালে, যখন জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের নিযুক্ত ইজারাদার খাস আদায়ের উদ্দেশ্যে রূপসা ঘাটে যান। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে হাজির হন আলী আকবর নামের একজন ব্যক্তি, যিনি নিজেকে বিআইডব্লিউটিএ’র ইজারাদার হিসেবে দাবি করেন এবং জানান ঘাটটির মালিকানা আসলে বিআইডব্লিউটিএ-র।
ঘটনাস্থলে তখনই উপস্থিত হন জেলা পরিষদের সিইও সেলিম রেজা ও অন্যান্য কর্মকর্তারা, পাশাপাশি বিআইডব্লিউটিএ’র প্রতিনিধিরাও সেখানে পৌঁছান। দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল বাকবিতণ্ডা ও উত্তেজনা শুরু হয়, যার ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শেষমেশ নৌবাহিনীর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হয়।
নৌবাহিনীর একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উভয় পক্ষের কাগজপত্র পরীক্ষা করে জানান, বিআইডব্লিউটিএ’র দলিলপত্র প্রাথমিকভাবে সঠিক ও বৈধ বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। সে অনুযায়ী, ঘাট পরিচালনার দায়িত্ব আপাতত বিআইডব্লিউটিএ’র ইজারাদারের হাতেই থাকবে বলে জানানো হয়।
তবে এ সিদ্ধান্তের পর জেলা পরিষদের সিইও সেলিম রেজা বলেন, “যদি জেলা পরিষদ কোর্ট থেকে নতুন কোনো ওয়ার্ডার আনতে পারে, তাহলে কি বিআইডব্লিউটিএ ঘাট ছাড়বে না?”—এই মন্তব্য অনেকের চোখে আদালতের আদেশ উপেক্ষার ইঙ্গিত হিসেবে দেখা দিয়েছে। তিনি আরও জানান, জেলা পরিষদের পক্ষে যদি আদালতের কোনো স্থগিতাদেশ (স্টে অর্ডার) আসে, তবে ঘাটের দখলে যাওয়া হবে। তার এই বক্তব্যে কিছুটা অস্থিরতা দেখা দিলেও উপস্থিত অন্যান্য কর্মকর্তারা এ প্রস্তাবে সম্মতি প্রকাশ করেন।
নৌবাহিনী ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করে স্পষ্ট বার্তা দেয়—আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হলে কোনো পক্ষকেই ছাড় দেওয়া হবে না। দুই পক্ষকে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছাতে উৎসাহিত করা হয়।
আইনি বিশ্লেষকরা বলছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষাপটে একটি প্রশাসনিক সংস্থা যদি নিজের পছন্দ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়, তা হলে তা বিচার বিভাগের অবমূল্যায়ন এবং শাসনব্যবস্থার ভারসাম্যে প্রভাব ফেলতে পারে।
ঘাটের মালিকানা নিয়ে চলমান এ বিরোধে সাধারণ জনগণ এবং নৌযান ব্যবসায়ীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। দ্রুত ও চূড়ান্ত আইনি নিষ্পত্তি ছাড়া এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান অসম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।