কয়রা প্রতিনিধি ||খুলনার কয়রা উপজেলার মদিনাবাদ গুচ্চ গ্রামে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন হলো। সোমবার (২১শে এপ্রিল) যোহরের নামাজের পর এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দৃষ্টি নন্দন নবনির্মিত রহিমিয়া জামে মসজিদ, মাদ্রাসা ও ইয়াতিমখানার শুভ উদ্বোধন করা হয়।
এই প্রতিষ্ঠানটি শুধু একটি উপাসনালয় নয়, বরং ইসলামী শিক্ষা ও মানবিক মূল্যবোধের বিকাশে এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোহরের নামাজের পর এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয় বিশিষ্ট আলেম মাওঃ আশরাফুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং তরুণ বক্তা মাওঃ মোস্তাকিম বিল্লাহর প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় সভাটি জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় মুখরিত ছিল। অনুষ্ঠানে প্রধান মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কয়রা উপজেলা আমীর ও কয়রা ইমাম পরিষদের সভাপতি মাওলানা মিজানুর রহমান। ইসলামী শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মসজিদ নির্মাণ করবে, মহান আল্লাহ তায়ালা তার জন্য জান্নাতে অনুরূপ একটি ঘর তৈরি করে দেবেন।” একইসাথে তিনি এই নবনির্মিত প্রতিষ্ঠানটিকে ইসলামী জ্ঞান চর্চা ও প্রসারের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে দেখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে কালনা আমিনিয়া কামিল মাদ্রাসার সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল মাওঃ মাহফুজুর রহমান তাঁর বক্তব্যে ইসলামী শিক্ষার নৈতিক ও আধ্যাত্মিক তাৎপর্য বিশদভাবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “ইসলাম কেবল একটি ধর্ম নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। এই মাদ্রাসা এবং ইয়াতিমখানা শিক্ষার্থীদের সেই পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার জ্ঞান দান করবে।”অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে খুদ্দামুল কুরআনের আঞ্চলিক প্রধান মুফতি আব্দুল কুদ্দুস কুরআন শিক্ষার গুরুত্ব এবং উত্তর বেদকাশী ইউপি সদস্য আবু হাসান এলাকার উন্নয়নে এই প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা নিয়ে আলোকপাত করেন। এছাড়াও উপজেলা জামাতের শুরা সদস্য হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম, সদর আমীর মিজানুর রহমান, মাওঃ হাবিবুল্লাহ বাহার, মাওঃ জাকারিয়া হোসাইন, মাওঃ ফরহাদ হোসেন, হাফেজ মইন উদ্দীন এবং কয়রা বাজার কমিটির সভাপতি সরকার জুলফিকার আলম অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। সকলেই এই মহতী উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং প্রতিষ্ঠানের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন।
অনুষ্ঠানের শেষভাগে অত্র প্রতিষ্ঠানের স্বপ্নদ্রষ্টা আলহাজ্ব আব্দুল গনী সমাপনী বক্তব্যে এই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো একটি আদর্শ ইসলামী সমাজ গঠন করা, যেখানে জ্ঞান, নৈতিকতা ও সহানুভূতির আলো প্রতিটি মানুষের জীবনে পৌঁছে দেওয়া যায়।” অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল হাফেজ মাওঃ নূর মোহাম্মদের আবেগপূর্ণ দোয়া ও মোনাজাত। তাঁর মোনাজাতে এলাকার শান্তি, সমৃদ্ধি এবং প্রতিষ্ঠানের উন্নতি কামণা করা হয়।
নবনির্মিত এই রহিমিয়া জামে মসজিদ, মাদ্রাসা ও ইয়াতিমখানা শুধু একটি ইবাদতের স্থান নয়, এটি ইসলামী জ্ঞান অর্জন, নৈতিক মূল্যবোধের বিকাশ এবং অসহায় এতিমদের আশ্রয় ও শিক্ষার একটি সম্মিলিত প্রয়াস। এই প্রতিষ্ঠানটি কয়রা অঞ্চলে ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রসারে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং একটি আলোকিত সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।