জাহিদুল ইসলাম , কয়রা প্রতিনিধি ||খুলনার কয়রার বাগালি ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে আজ নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ মরহুম মাস্টার হাবিবুর রহমানের সুযোগ্যা সহধর্মিণী, সকলের শ্রদ্ধার পাত্রী মিসেস জাহানারা খাতুন (৮৫) আজ মঙ্গলবার সকাল নয়টায় খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
তাঁর প্রয়াণে শুধু একটি পরিবার নয়, গোটা এলাকাবাসী হারিয়েছে এক মমতাময়ী অভিভাবককে। পাঁচ সন্তানের জননী মিসেস জাহানারা খাতুন ছিলেন এক বিদ্যানুরাগী পরিবারের মধ্যমণি। তাঁর চার পুত্র ও একমাত্র কন্যা সমাজে নিজ নিজ ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত।
জ্যেষ্ঠ পুত্র জিএম মহিবুল্লাহ জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছেন রংপুর ক্যাডেট কলেজের সম্মানিত শিক্ষক হিসেবে। দ্বিতীয় পুত্র মোঃ ওলিউল্লাহ, যিনি ছাত্রজীবনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে সক্রিয় নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনি শুধু বাগালী ইউনিয়নের একজন সফল সাবেক চেয়ারম্যানই নন, বর্তমানে কয়রা কপোতাক্ষ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের গুরুভারও সামলাচ্ছেন।
তৃতীয় পুত্র মোঃ মাহমুদুল্লাহ কয়রা সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের দিশারি। কনিষ্ঠ পুত্র মোঃ সিফাত উল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র, যিনি সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছেন নিজ কর্মক্ষেত্রে। একমাত্র কন্যা মোছাঃ জামিলরা খাতুনের বিয়ে হয়েছে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে।
মরহুম মাস্টার হাবিবুর রহমান ছিলেন এলাকার শিক্ষা বিস্তারের এক কিংবদন্তী। তাঁর হাত ধরেই এই অঞ্চলে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা এবং রাস্তাঘাটের গোড়াপত্তন হয়েছে। বাগালি ইউনিয়ন পরিষদের ভবনটি একটি সুবিধাজনক স্থানে স্থাপনের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান ছিল অগ্রগণ্য।
এই মহৎ উদ্দেশ্যে তিনি দ্বিধা করেননি তাঁর মূল্যবান পৈত্রিক সম্পত্তি দান করতে। মাস্টার হাবিবুর রহমান ও মিসেস জাহানারা খাতুনের এই নিঃস্বার্থ অবদান এলাকার মানুষ চিরকাল গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ রাখবে।মিসেস জাহানারা খাতুনের প্রয়াণে এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এই গুণী মায়ের বিদায়ে শুধু তাঁর পরিবার নয়, গোটা এলাকাবাসী হারিয়েছে এক মমতাময়ী অভিভাবককে। আজ বাদ আসর ইসলামপুর জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে মরহুমার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা পূর্ব আলোচনায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর খুলনা অঞ্চলের সহকারী আঞ্চলিক পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, খুলনা জেলার জামায়াতের আমির মাওলানা ইমরান হোসেন, জেলা সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান, জেলা নায়েবে আমির মাওলানা গোলাম সারওয়ার, জেলা সহ সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা কর্ম পরিষদ সদস্য এস এম আমিনুল ইসলাম, কয়রা থানা আমীর মাওলানা মিজানুর রহমান, বিএনপির জেলা সদস্য এমএ হাসান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি মোঃ আবু জার গেফারি সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ মরহুমার জীবন ও কর্মের উপর আলোকপাত করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
পরে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।কয়রার মানুষ আজ একজন রত্নগর্ভা মাকে হারালো, যাঁর অবদান এলাকার শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
শিক্ষাবিদ পরিবারে নেমে আসা এই শোকের মাতম দীর্ঘ দিন ধরে অনুভূত হবে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।