সাগর কুমার বাড়ই ,তেরখাদা প্রতিনিধি||কলহ প্রবণ এলাকা নামে খ্যাত খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার বারাসাত এলাকার পরিবেশ খানিকটা শান্ত হলেও এলাকাবাসীর মধ্যে কাটেনি আতংক , আশংকা এবং উদ্বেগ।
এদিকে প্রশাসনের রয়েছে কড়া নজরদারি , বারাসাত এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায় , পূর্ব শত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তার কে কেন্দ্র কবে গত ২ এপ্রিল দুপুর ১২টার দিকে তেরখাদা উপজেলার বারাসাত এলাকায় বিবদমান দু’টি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দেশী তৈরী অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এবা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
গোটা বারাসাত জুড়ে দুই পক্ষের লোকজন খন্ড খন্ড সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষের পাশাপাশি বসতবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
প্রায় ২ ঘন্টা ধরে তান্ডব চলে। এতে কমপক্ষে ৭/৮জন আহত হয়। ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন , আওয়ামী গ্রুপের লোকেরা নেতৃত্ব দিয়ে বারাসাত ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি শাফায়েত মোল্যার বসতবাড়ি , নর্থ খুলনা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি সিঙ্গাপুর প্রবাসী মোঃ মিজানুর রহমান মোল্যার পাকা ঘর ভাংচুর , মনির মোল্যার পানির ড্রাম এবং লাইন বিচ্ছিন্ন , ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি সৈয়দ মোল্যার পুত্রের দোকান ভাংচুর ও লুটপাট , সোহাগ মোল্যার বৃসতঘর ও পানির ট্যাংকি ভাংচুর এবং ছোট একটি শিশুর উপর অস্ত্র উচিয়ে ভীতি সঞ্চার , মহব্বত শেখ ওরফে দানার বসতঘর ও রান্নাঘর ভাংচুর এবং লুট , বাজা মোল্যার বাড়ি ভাংচুরসহ লিটন মোল্যা , দীন মোল্যা ও আরিফুল শেখের বাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
দুর্বৃত্তরা এছাড়া মিজানুর রহমানের বাড়ির সামনে থাকা একটি ধান ছাটাই ম্যাশিন খালের মধ্যে ফেলে দেয়। এ ঘটনার খবর শুনেই যৌথ বাহিনীর একটি টিম ও থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনার সাথে জড়িত কাছেদ মোল্যা ও ইলিয়াছ মোল্যাসহ ৬জনকে আটক করে। গ্রেফতারের ভয়ে সংঘর্ষে অংশগ্রহণকারীরা বিলের মধ্যে গিয়ে আত্মগোপন করে।
অনেকেই বলছেন , তাৎক্ষণিকভাবে বারাসাত এলাকার পরিবেশ শান্ত হলেও গোটা এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
পক্ষ প্রতিপক্ষের মধ্যে প্রতিশোধের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। এলাকাবাসী বলছে , বারাসাত এলাকায় বিবদমান দু’টি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ , সংঘাত ও লুটপাটের ঘটনা নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার।
প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রতি বছর কয়েকদফা সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এরা।
যুগ যুগ ধরে বিবদমান দুই গ্রুপের মধ্যে দাঙ্গা হাঙ্গামা চলে আসলেও পরিবর্তনের সম্ভাবনা ক্ষীণ।
থানা পুলিশ কোনোমতে সংঘর্ষ সংঘাত দমিয়ে রাখলেও নির্মূল করতে পারেনি আজও।
ফলে প্রতিবছরই অতীতের ঐতিহ্য ধরে রেখে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে এরা।
মুখোমুখি সংঘর্ষের মত জীবন বিধবংশী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ায় কোমলমতী সন্তানদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। স্বপ্নের বারাসাত এখন ধবংশের দ্বার প্রান্তে পৌছে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে।
বারাসাত ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি শাফায়েত মোল্যা বলেন , আওয়ামী লীগের কতিপয় সন্ত্রাসী মসিয়ার মোল্যা , তরিক মোল্যা , টুটুল মোল্যা , কচি মোল্যা , তাকিদ মোল্যা , কাছেদ মোল্যা , আলমগীর হোসেন তাদের পৌষ্যদের লেলিয়ে দিয়ে বিএনপি পন্থীদের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে।
লুটপাট করেছে দোকানপাট। তাদের হামলায় আহত হয়েছেন কয়েকজন। তিনি সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এদিকে গত ৩ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে উপজেলা বিএনপির এক জরুরী সভায় বারাসাত গ্রামের বর্বোরচিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। উপজেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভাপতি চৌধুরী কাওছার আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় বক্তারা বারাসাত গ্রামে আইন শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যক্রম নির্মূল করতে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জোর দাবি জানানো হয়।
এ ব্যাপারে তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ মেহেদী হাসান বলেন , এ পর্যন্ত ৬জনকে আটক করা হয়েছে এবং দেশী তৈরী অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন , থানা পুলিশ এবং নৌবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে না গেলে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে যেত। বর্তমানে বারাসাত এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি বলেন , এখন বারাসাত এলাকার পরিবেশ পরিস্থিতি শান্ত।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।