খুলনার খবর || ১৯৭৫ সালের আজকের দিনে তৎকালিন শেখ মুজিবুর রহমান সরকার অনুগত ৪টি মাত্র সংবাদপত্র রেখে সকল খবরের কাগজ বন্ধ করে দেয়। হাজার হাজার সাংবাদিক মুহূর্তে বেকার হয়ে পড়ে।
মিডিয়া শিল্পে বিনিয়োগকারিরা হয়ে পড়ে দেউলিয়া। জনগন বঞ্চিত হয় সত্য খবর থেকে। মোর্দা কথায় গোটা দেশকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়া হয়। সংবাদপত্র না থাকায় লুটেরা গোষ্ঠী আনন্দে মেতে উঠে।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ইতিহাসে এমন কলঙ্কময় দিন আর আসেনি। তাই ১৯৭৬ সাল থেকে সাংবাদিক সমাজ এ দিনটিকে সংবাদপত্রে কালো দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র তিন বছর পার হতে না হতেই ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সংসদে আনা হয়েছিল সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সম্পূর্ণ পরিপন্থী এই সংশোধনীর ফলে জাতির ঘাড়ে চেপে বসে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশালের জগদ্দল পাথর।
এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছর ১৬ জুন বিতর্কিত বাকশাল সরকার সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়। সরকারি প্রচারপত্র হিসেবে চারটি পত্রিকা সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রকাশ করা হয়। এতে হাজারো সাংবাদিক রাতারাতি বেকার হয়ে দুঃসহ জীবনে পতিত হন। সংবাদমাধ্যম ও বাক-স্বাধীনতা হরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি একটি কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত। জাতীয় ইতিহাসের অন্যতম কলঙ্কজনক দিন এটি।
এ জন্য সাংবাদিকসমাজ প্রতি বছর এ দিনটিকে ঘৃণা ও ধিক্কারের সাথে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে।
আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ’৭৫ সালের নভেম্বরে সিপাহি-জনতার বিপ্লবে ক্ষমতাসীন হয়ে সংবিধানে এ দেশের কাঙ্ক্ষিত বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করে বাকশাল সরকারের সব প্রকার অগণতান্ত্রিক কালো ধারা বাতিল করেন এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।
এ সুবাধে সংবাদপত্রে শতফুল ফুটতে থাকে। কিন্তু মিডিয়ার এ স্বাধীনতা বেশি দিন টিকে থাকে নি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে আবারো প্রথম টার্গেট করে সংবাদমাধ্যমকে। সর্বশেষ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসেও একই পথে হাঁটছে দলটি।
গত প্রায় ১৩ বছরে জনপ্রিয় সংবাদপত্র, বেসরকারি টেলিভিশন, অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করে কয়েক হাজার সাংবাদিককে বেকারত্বের মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে।
দৈনিক আমার দেশ শুধু বন্ধই করে নি, অফিসটি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, সিএসবি সহ দুই শতাধিক মিডিয়া। হামলা চালানো হয় দৈনিক নয়া দিগন্ত ও দৈনিক সংগ্রাম অফিসে। সরকারি রোষানলে পড়ে অনেক সাংবাদিককে দেশান্তরি হতে হয়।
১৯৭৫ সালের মতো শেখ হাসিনার শাসনামলেও গণমাধ্যমের কন্ঠরোধ করা হয়।অগণতান্ত্রিক সরকারের কালো থাবায় সংবাদমাধ্যম ছিল পুরোপুরি শৃঙ্খলিত। সরকারের রক্তচক্ষুর সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে সাংবাদিক ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সিকিউরিটি আইনের কারণে বস্তুনিষ্ঠ ও সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল সে সময়।
শেখ হাসিনার শাসনামলে ৫৮ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়।কথায় কথায় সাংবাদিকদের গুম ও জেলে পুরে রাখা হয়।আমার দেশ, দিনকাল, চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টেলিভিশন, ইসলামিক টিভিসহ বহু গণমাধ্যম বন্ধ করে দেয়া হয়।
ভিন্নমতের সাংবাদিকদের গণহারে চাকরিচ্যূত করা হয়। অকল্পনীয় হুমকির মুখে পড়তে হয় সাংবাদিকদের জীবন ও জীবিকা।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।