ফাহাদ হোসেন,মোরেলগঞ্জ || বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিনের উপকূলীয় উপজেলা মোরেলগঞ্জ, পানগুছি নদীর দুপাশ ঘেষা ১৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত দেশের অন্যতম বৃহত্তম উপজেলায় উৎপাদিত সুপারি দেশের চাহিদা মিটিয়ে ভারতেও রপ্তানি করা হচ্ছে। এখানকার সুপারি মানে ভালো হওয়ায় দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ভারতেও এর চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে ভারতের কলকাতা, হুগলি জেলার চুঁচুড়া ও চন্দননগর এলাকায় মোরেলগঞ্জের সুপারির বেশ চাহিদা রয়েছে। তাই এখান থেকে শত শত মণ সুপারি ভারতে চালান দেওয়া হয়।
চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় প্রায় শতকোটি টাকার সুপারি বেচাকেনা হয়। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলাটি একটি ব্যবসাসমৃদ্ধ এলাকা। এখানকার উৎপাদিত ডাব,তাল, পেয়ারা,আমড়া,সুপারিসহ নানা ধরনের পণ্যের সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে। এই এলাকায় উৎপাদিত এসব পণ্যের ব্যবসায়ের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে।
এই এলাকায় বছরজুড়েই সুপারির ব্যবসা চলমান থাকলেও মূলত বছরের আশ্বিন,কার্তিক ও অগ্রহায়ণ এই তিন মাস সুপারির ভরা মৌসুম।
এ সময় উপজেলার সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন যেমন,চিংড়িখালী,রামচন্দ্রপুর,বনগ্রাম,তেলিগাতী,হোগলাপাশা ইউনিয়ন সহ অন্তত ১৫টি হাটে সুপারির বেচাকেনা হয়। এছাড়াও উপকূলে সুপারির সবচেয়ে বড় মোকাম মোরেলগঞ্জ। সুন্দরবনের উপকূলের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন থেকে ব্যবসায়ীরা সুপারি নিয়ে বিক্রির জন্য মোরেলগঞ্জ শহরে গড়ে ওঠা সুপারির হাটে আসেন।
হাটে তিন ধরনের সুপারি বেচাকেনা চলতে দেখা গেছে। এগুলো হলো কাঁচা, পাকা, শুকনা ও খোসা ছাড়ানো। এর মধ্যে কাঁচা ও পাকা সুপারি কুড়ি হিসেবে বিক্রি করা হয়। ২১০টি সুপারিতে এক কুড়ি হয়, যার বর্তমান মূল্য ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা।
ছাড়া শুকনা সুপারি প্রতি মণ ১২-১৩ হাজার টাকা এবং খোসা ছাড়ানো সুপারি প্রতি মণ ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। স্থানীয় আড়তদাররা এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা এক শ্রেণির দূরাগত বেপারীরা এখান থেকে সুপারি ক্রয় করে সেগুলো ঢাকা, চট্রগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, গৌরনদী, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যান। খুলনা, বাগেরহাট,পিরোজপুর, আশপাশের সীমান্তবর্তী অনেক ব্যবসায়ী এখান থেকে সুপারি ক্রয় করে ভারতের হুগলি,কলকাতা সহ কয়েকটি এলাকায় চালান দেন।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, মাটি এবং আবহাওয়া সুপারি চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এ কারণে এখানকার সুপারি আকারে অনেক বড় এবং সুস্বাদু হয়।
তিনি বলেন, বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে সুপারি গাছে ফুল আসে। সেই ফুল থেকে সুপারি হয়। এ বছর উপজেলার সুপারি বাগানের মালিকরা সঠিক সময়ে সঠিক পরিচর্যা করায় সুপারির এমন ফলন হয়েছে। এ উপজেলায় ৬০০ থেকে ৭০০ টন সুপারি উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং এর বাজারমূল্য ১৮-২০ কোটি টাকার বেশি হবে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।