পরেশ দেবনাথ,কেশবপুর,যশোর // মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মস্থান সাগরদাঁড়িতে মধুসূদন সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে কেশবপুরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শণিবার (১৪ জানুয়ারি) বিকালে শহরের প্রধান সড়কের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা দৌলত বিশ্বাস চত্বরে সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন কমিটি ওই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন কমিটি সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুবকর সিদ্দিকী-এর সভাপতিত্বে এবং সাংবাদিক দিলীপ মোদকের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন,সদস্য সচিব কবি খসরু পারভেজ,কেশবপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আশরাফ-উজ-জামান খান,সাধারণ সম্পাদক জয়দেব চক্রবর্তী,সাংবাদিক আবু সাইদ,কেশবপুর উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক রমেশ দত্ত,কেশবপুর নিউজ ক্লাবের সভাপতি আশরাফুজ্জামান, সিপিবি সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান নান্নু, অধ্যাপক তাপস মজুমদার,সাংস্কৃতিক কর্মী সমীর দাস,বেগমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন মন্ডল, উদীচী সংগঠনের সভাপতি অনুপম মোদক, পাঁজিয়া সমাজ কল্যান সংস্থার পরিচালক বাবুর আলী গোলদার, দলিত পরিষদের সভাপতি সুজন দাস, বন্ধুসভার সভাপতি শরিফুল ইসলাম প্রমূখ। মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেণী পেষার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কপোতাক্ষ অববাহিকা বিস্তৃত বিশাল এলাকাজুড়ে খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা এমনকি কুষ্টিয়ার অংশবিশেষ এ অববাহিকা প্রভাবিত এলাকা, যার আয়তন প্রায় ১১ হাজার বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা প্রায় দেড় কোটি।
কপোতাক্ষ অববাহিকার সঙ্গে মানুষের জীবনযাত্রা, সুখ-দুঃখ, আর্থ-সামাজিক অবস্থা গভীরভাবে সম্পৃক্ত। এ এলাকাটি অনেকটা ত্রিভুজ আকৃতির, যার কেন্দ্রে রয়েছে সাগরদাঁড়ি। মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের সাগরদাঁড়ি গ্রাম। বস্তুত মাইকেল মধুসূদন দত্ত, কপোতাক্ষ নদ ও সাগরদাঁড়ির পরিচিতি দেশের সীমানা ছাড়িয়েছে অনেক আগেই। এ অবস্থায় এই অঞ্চলের কপোতাক্ষ নদীর তীরে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতিবিজড়িত সাগরদাঁড়িতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করলে এলাকায় প্রাণ ফিরে পাবে বলে মনে করেন এ অঞ্চলের শিক্ষানুরাগী মহল।
এ ছাড়া বছরে ১০ থেকে ১৫ লাখ পর্যটকের আগমন ঘটতে পারে। মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মস্থান এবং কপোতাক্ষ নদ এদেশের মানুষের মানসপটে স্থান করে নিয়েছে। বাংলা সাহিত্যে নদ-নদী নিয়ে যত কবিতা রচিত হয়েছে, তার মধ্যে মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটি শ্রেষ্ঠ কবিতা।
তাই সাগরদাঁড়িতে এলে বা কপোতাক্ষ নদের তীরে গেলে আপনা থেকেই পথিক বা পর্যটকের হৃদয় থেকে উত্থিত হয় সেই শ্রেষ্ঠ কবিতার কয়েকটি চরণ : ‘সতত হে নদ তুমি পড় মোর মনে/সতত তোমারই কথা ভাবি এ বিরলে।/বহুদেশ দেখিয়াছি বহু নদ দলে/কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মেটে কার জলে/দুগ্ধস্রোতরূপী তুমি মাতৃভূমি স্তনে। বিদেশি সাহিত্যে মগ্ন থেকেও কবি মুহূর্তের জন্য ভোলেননি বাংলার জল-মাটি-আকাশ-মানুষকে। আমৃত্যু তার স্মৃতিতে ছিল যশোরের সাগরদাঁড়ি, কপোতাক্ষ নদ। নিজের সমাধিফলকে তাই আহ্বান করেছেন বাঙালিকে। বলেছেন, ‘দাঁড়াও, পথিক-বর, জন্ম যদি তব বঙ্গে! তিষ্ঠ ক্ষণকাল।
পদ্মা সেতু স্থাপিত হওয়ায় এ অঞ্চলের মান আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। কপোতাক্ষকে ঘিরে তৈরি হোক সংস্কৃতির বলয়। এর তীরে স্থাপিত হোক একটি সাধারণ অথবা সাংস্কৃতিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। গড়ে উঠুক সাংস্কৃতিক ও পর্যটন কেন্দ্র। বদলে যাক যোগাযোগ ও আর্থ-সামাজিক অবস্থা। কপোতাক্ষ অববাহিকার এ প্রত্যন্ত এলাকাটিকে নিয়ে এমনটিই প্রত্যাশা ও প্রাণের দাবি এ অঞ্চলের মানুষের।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।