শরিফুল ইসলাম // খুলনার শহীদ আবু নাসের মাদরাসা রোড এলাকায় স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত গৃহবধূ খুকুমনি ওরফে মুনি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাষ্টিক সার্জারী ইউনিটে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা শিউলী বেগম বাদী হয়ে জামাই মো. কামরুল ইসলাম স্বাধীনের বিরুদ্ধে গতকাল রোববার আদালতে মামলা করেছেন।
জানা গেছে, নগরীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন আল ফারুক সোসাইটি রোডের মো. হাবিবুল্লাহ’র বাড়িতে শিউলী বেগম ভাড়া থাকেন। ৬ মাস আগে মো. কামরুল ইসলাম স্বাধীনের সাথে খুকুমনির বিয়ে হয়। মেয়ে ও জামাই তার কাছেই থাকতো। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাত ৩টার দিকে মো. কামরুল ইসলাম স্বাধীন তার স্ত্রী খুকুমনিকে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। টের পেয়ে বাড়ির মালিক ও তার স্ত্রী ওই ঘরের দরজায় ধাক্কা দিলে স্বাধীন খুলে দেয়।
আগুনের বিষয়ে সে তাৎক্ষণিক বাড়ির মালিক ও তার স্ত্রীকে জানায় চা বানাতে গিয়ে খুকুমনির গায়ে আগুন লেগেছে। দ্রুত অগ্নিদগ্ধ খুকুমনিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে তার মা ও বাবা খুলনায় এসে পরদিন চিকিৎসকদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাষ্টিক সার্জারী ইউনিটে ভর্তি করেন। অবশেষে শরীরের ৭০ ভাগ পোড়া নিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে গৃহবধূ খুকুমনির মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে এক ভিডিও বার্তায় তার মৃত্যুর জন্য স্বামী মো. কামরুল ইসলাম স্বাধীনকে দায়ী করেন। ঢাকায় ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়ি শরনখোলায় দাফন করা হয়েছে।
নিহতের মা বলেন, গত তিনমাস আগে খুকুমনির সাথে বৈকালী মধ্যপাড়া এলাকার দেলোয়ারের ছেলে কামরুল ইসলাম স্বাধীনের সাথে পরিচয় হয়। এ বিষয়টিও তিনি জানতেন না। এর আগে শিউলী বেগমের মা অসুস্থ হয়ে পড়লে গ্রামের বাড়ি শরণখোলার রায়েন্দা চলে যান। লকডাউনের কারণে সেখানে থাকতে হয় তাকে। এরপর ভাইয়ের অসুস্থতার খবর শুনে পাইকগাছায় চলে যেতে হয় তাকে।
গেল বছরের ডিসেম্বরের প্রথমদিকে খুকুমনি বাড়ি থেকে ছয়দিনের জন্য উধাও হয়ে যায়। অনেক খোঁজ খবর নিয়ে তিনি জানতে পারেন কামরুল ইসলাম স্বাধীন নামে এক ছেলের সাথে মেয়ের বিয়ে হয়েছে। পরে শিউলী বেগম তাদের বিয়েটি মেনে নেয়। পরে খুকুমনিদের ভাড়া বাড়িতে একসাথে বসবাস করতে থাকে তারা। বিয়ের দেড় মাসের মাথায় এসে তাদের মধ্যে ছোটখাট বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিতে থাকে। এ নিয়ে তার মেয়েকে প্রায়ই মারপিট করত স্বাধীন।
এঘটনায় নিহতের মা শিউলী বেগম আদালতের দারস্ত হলে বিষয়টি আমলে নেয় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সোনাডাঙ্গা মো: তরিকুল ইসলাম। আজ সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিবেন ওই আদালতের বিচারক। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী এড. মাসুদুর রহমান।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।