পরেশ দেবনাথ,কেশবপুর,যশোর || থোড়মূখী ধানের জমির ফসল নষ্টকরে কাঁচা রাস্তা নির্মান করায় কৃষকের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সীমানা নির্ধারন করা হলেও নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানান ভুক্তভোগী কৃষকরা।
সরেজমিন দেখা যায়,কেশবপুর উপজেলার গৌরীঘোনা ইউনিয়নের ভরত-ভায়না বিলের সারুটিয়া গ্রামের জেলে পাড়া হতে সন্ন্যাসগাছা বিলকান্দা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার বিলের ভিতর দিয়ে কাঁচা রাস্তা নির্মান কাজ চলছে। কোন কোন কৃষক রাস্তার সীমানা থেকে গরুর খাবার হিসাবে থোড়মূখী ধান কেটে নিয়েছেন। সারুটিয়া গ্রামের ইসলাম মিস্ত্রি, তপন ও বিধানের সম্পূর্ণ জমির উপর দিয়ে রাস্তা করা হয়েছে যেখানে ধানের বাইল বের হচ্ছে।
জীবন সরকার জানান, রাস্তা হলে আমাদের লাভ ছাড়া ক্ষতি হবে না। এই রাস্তা একদিন বিশেষ প্রয়োজন হবে। জমির ধান সহজে বহন করে নিয়ে যেতে পারবে, শ্রমিকরা রোজগারের সুযোগ পাবে।
সারুটিয়া গ্রামের জমির মালিক আবুল হোসেন মোল্যা জানান, এ রাস্তাটি আদৌ প্রয়োজন না। ১৯৮৫ সাল থেকে এ রাস্তাটি দিয়ে সারুটিয়া, ভেরচী, সন্যাসগাছা, গ্রামের জনগণ যাতায়াত করতো। ১৯৯৬ সালে ওয়াপদা কেটে দেওয়ার পর পানির তোড়ে চলাচলের পথ বিলিন হয়ে যায়। ১৯৯২ সালের জরিপে সারুটিয়া মৌজায় বিলের ভিতরে ২০ ফুট চওড়া রাস্তার নক্সা হয়। জমিতে আবাদ করার স্বার্থে বাইরের পানির চাপ ঠেকাতে জমির মালিকরা একটি বেড়িবাঁধ দেন। সারুটিয়া,ভেরচী ও সন্যাসগাছা মৌজা দিয়ে নতুন যে রাস্তাটি নির্মাণ করা হচ্ছে সে সম্পর্কে চেয়ারম্যান সাহেব কৃষকদের ডেকে আলোচনা করেন। এরপর কয়েকদিন ধরে রেকর্ডিও রাস্তার সীমানা নির্ধারণ করার পরও জমির মালিকদের সীমানা ভেড়ি কেটে অধিকাংশ রাস্তা বানানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। রাস্তার দু’পাশ থেকে ১০ ফুট করে মালিকানা জমি কাটা পড়ছে।
ভেরচী গ্রামের নুরজ্জামান মোড়ল জানান, চারিদিকে রাস্তা হওয়ায় আমাদের সুবিধা হয়েছে, এই রাস্তা তেমন প্রয়োজন ছিল না। অনেক মালিকানা জায়গা দিয়ে রাস্তা হওয়ায় কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে। ভরা মোসুমে কৃষকের ক্ষতি হবে জেনেও রাস্তা করা হচ্ছে।
সারুটিয়া গ্রামের আবু তালেব জানান, চেয়ারম্যান সাহেব জমির মালিকদের ডেকে রাস্তা সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। সীমানা নির্ধারনের সময় আমি ছিলাম। কিন্ত বেশ কিছু জায়গায় মালিকানা জমি কেটে রাস্তা করা ছাড়াও থোড়মূখী ধান মারা যাচ্ছে ফলে কৃষকের দারুন ক্ষতি হচ্ছে। ধান ঘরে উঠার পর রাস্তা করলে ভাল হতো।
মফিজ সরদার, আজিজুর সরদার, লিটন সরদার, ইসলাম তারা অভিযোগ করে জানান, সরকারি ম্যাপ অনুযায়ী রাস্তা নির্মান হচ্ছে না। এলাকাবাসীর দাবী, ফললের ক্ষতি না করে ফসল ঘরে উঠার পর নির্ধারিত সীমানা অনুযায়ী রাস্তা নির্মান করা হোক।
তারা জানান,কৃষকের বিলে ক্ষেতভরা ধান থোড় মুখি, আর মাত্র মাস খানেক পরে ধান কাটা যেত। কিন্ত এ সব কথা উপেক্ষা করে ধানের ক্ষতিকরে রাস্তা নির্মান কাজ অব্যাহত রয়েছে। চলমান কাজ বন্ধ রেখে কৃষকের সোনালী ফসল ধান কাটার পর সীমানা অনুযায়ী রাস্তা নির্মান করলে এবং ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের ক্ষতিপূরণ দিলে তাদের কোন আপত্তি থাকবে না। বিষয়টি উর্ধতন কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে গৌরীঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস,এম হাবিবুর রহমান হাবিব মুঠো ফোনে জানান,আমি রাস্তা নির্মানের জন্যে কৃষকদের সাথে আলাপ-আলোচনা করেছি এবং রাস্তার সীমানা বরাবর ধান না লাগানোর কথা বলেছি। তাছাড়া প্রজেক্টের মেয়াদ প্রায় শেষ পর্যায়ে। রাস্তা করতে হলে পাশের জমি থেকে মাটি কাটার প্রয়োজন হয়। সে কারণে রাস্তা নির্মানের স্বার্থে তাদের একটু ক্ষতি মেনে নিতে হবে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।