পরেশ দেবনাথ,কেশবপুর,যশোর || ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য এবং উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে কেশবপুরের বিভিন্ন ইউনিয়নের ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এক মাস রোজা রাখার পর মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ে মুসুল্লিরা এখানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নামাজ পড়তে আসেন। কেশবপুরে সকাল ৮টা থেকে ১০ টার মধ্যে জামাত হয়েছে। মঙ্গলকোট ইউনিয়নে সকাল ৮ টায় জামাত শুরু হয়।
ইউনিয়নের কেদারপুর মদিনাতুল উলুম কওমী মাদ্রাসার ঈদগাহ ময়দানে ঈমামতি করেন, কেদারপুর মদিনাতুল উলুম কওমী মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি নাজমুল হাসান।
ওই ঈদগাহ ময়দানে নামাজ আদায় করেন, কওমী মাদ্রাসার সভাপতি ডাঃ আব্দুস সাত্তার, আনােয়ার আলী মহলদার (৮৫), সাবেক ইউপি মেম্বর অহেদ আলী সরদার (৮২), সাবেক ইউপি মেম্বর মহাতাব উদ্দীন সরদার, সাবেক ইউপি মেম্বর সাজ্জাত আলী সরদার, বর্তমান ইউপি মেম্বর কামরুল ইসলাম, মাস্টার এস,এম শাহিনুর রহমান, চুকনগর ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক আমজাদ হোসেন, জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী মেহেদী হাসান শান্ত (২২), ব্যাংকার ফরহাদ হোসেন, মাজেদুর রহমান, লিয়াকত আলী সরদার, কবির হোসেন, আব্দুল গফুর, আমিনুর রহমান, মজিবর রহমান, ছবেদ আলীসহ প্রায় ছয়শত ধর্মপ্রাণ মুসল্লী।
একমাস কঠিন সিয়াম সাধনার পরে ঈদের আনন্দ ও খুশীতে মুখর হয়ে উঠেছেন মুসল্লীরা। এই উপলক্ষে একে অপরে জানান ঈদের শুভেচ্ছা। সকলে কামনা করেন, পৃথিবী হতে বিদায় হয়ে যাক সকল প্রকার হিংসা-বিদ্বেষ, যুদ্ধ-বিগ্রহ। মানুষের মাঝে ফিরে আসুক অনাবিল সুখ শান্তি আনন্দ। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের রমযান মাসের রোজার ভুলত্রুটির দূর করার জন্যে ঈদের দিন অভাবী বা দুস্থদের কাছে অর্থ প্রদান করা হয়, যেটিকে ফিতরা বলা হয়ে থাকে। এটি প্রদান করা মুসলমানদের জন্য ওয়াজিব।
বাংলাদেশসহ অন্যান্য মুসলিম-প্রধান দেশে ঈদুল ফিতরই হলো বৃহত্তম বাৎসরিক উৎসব। বাংলাদেশে ঈদ উপলক্ষে সারা রমজান মাস ধরে সন্ধ্যাবেলা থেকে মধ্যরাত অবধি কেনাকাটা চলে। অধিকাংশ পরিবারে ঈদের সময়েই নতুন পোশাক কেনা হয়। পত্র-পত্রিকাগুলো ঈদ উপলক্ষে ঈদ সংখ্যা নামে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করে থাকে।ঈদ উপলক্ষে বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলো ঈদের দিন থেকে শুরু করে পরবর্তী কয়েকদিন বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করে।ঈদের দিন ঘরে ঘরে সাধ্যমতো বিশেষ খাবারের আয়োজন করা হয়।বাংলাদেশের শহরগুলো থেকে ঈদের ছুটিতে প্রচুর লোক নিজেদের আদি নিবাসে বেড়াতে আসেন।এ কারণে ঈদের সময়ে রেল,সড়ক, ও নৌপথে প্রচণ্ড ভিড় দেখা যায়।ঈদের দিনে সেমাই সবচেয়ে প্রচলিত খাবার। এবং বিশেষ আরো অনেক ধরনের খাবার ধনী-গরিব সকলের ঘরে তৈরি করা হয়। এ উৎসবের আরো একটি রীতি হলো আশেপাশের সব বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া এবং প্রত্যেক বাড়িতেই হালকা কিছু খাওয়া। এ রীতি বাংলাদেশে প্রায় সবাই-ই মেনে থাকে।
জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি চাঁদ দেখার ঘোষণা দেওয়ার সাথে সাথে মসজিদ,টেলিভিশন চ্যানেল এবং রেডিও স্টেশনগুলো থেকে এই বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হয়।চাঁদ রাতের উৎসব প্রায় তাৎক্ষণিকভাবে শুরু হয় এবং সকালে ফজরের সালাত পর্যন্ত সারা রাত অব্যাহত থাকে। বেশিরভাগ সকল পরিবার স্থানীয় বাজার, মার্কেট এবং শপিংমলগুলোতে তাদের শেষ সময়ের বাজার করতে যায়। মহিলারা সাধারণত স্যালোয়ার-কামিজ, চুড়ি, গহনা এবং ব্যাগ ক্রয় করে থাকেন এবং পুরুষরা বেশিরভাগ জুতা কিনতে মনোনিবেশ করেন।এই রাতে বন্ধুদের জন্য উপহার ও মিষ্টি এবং ছোট বাচ্চাদের জন্য খেলনা নিয়ে যাওয়া হয়। পরের দিনের প্রস্তুতিতে সেলুন এবং বিউটি পার্লারগুলোতে সন্ধ্যায় প্রচুর ভীড় লক্ষ্য করা যায়। মহিলা ও মেয়েরা মেহেদী দিয়েও হাত সাজিয়ে থাকে।
বাজারের পাশাপাশি সরকারী ভবন,ব্যাংক এবংমসজিদগুলোতে আলোকসজ্জা লক্ষ্য করা যায়। চাঁদ রাত সব বয়সী মানুষকে তাদের বন্ধুবান্ধব এবং বর্ধিত পরিবারের সাথে দেখা করার সুযোগ করে দেয়। কেশবপুরের বিভিন্ন ইউনিয়নের ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠানে কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।