শরিফুল ইসলাম || খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলররা গণসংযোগ ও প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে বদলে গেছে খুলনা মহানগরীর দৃশ্যপট।
প্রতীক বরাদ্দের পর পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে গোটা নগরী। দুপুর ২টা থেকে শুরু হয়ে মাইকিং চলছে রাত ৯টা পর্যন্ত। দুপুর ২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে শহরের চারদিকে শুধুই মাইকের আওয়াজ। দীর্ঘদিন পর সরগরম এক নগরীতে পরিণত হয়েছে খুলনা। শুধু মাইক সার্ভিসই নয়, প্রতীক বরাদ্দের পর নগরীজুড়ে চোখে পড়ে প্রার্থীদের পোস্টার টাঙানোর দৃশ্য। সবমিলিয়ে কেসিসি নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণার পর নগরীজুড়ে শুরু হয়েছে ভোটের আমেজ।
নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে টাঙানো হয়েছে হাজারো পোস্টার। আর অলিগলি যেন আগেই পোস্টারের জন্য দখলে নিয়েছে কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীরা।
এবারের খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেককে নৌকা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মো. আব্দুল আউয়ালকে হাতপাখা, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী এসএম শফিকুল ইসলাম মধুকে লাঙ্গল ও জাকের পার্টি মনোনীত প্রার্থী এসএম সাব্বির হোসেনকে গোলাপফুল প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়।
অপরদিকে কেসিসির নির্বাচনকে সামনে রেখে বেড়ে গেছে এলাকার বেকার যুবকদের কদর। প্রতিদিন মিছিল, গণসংযোগ, বাড়ি বাড়ি লিফলেট পৌঁছে দেয়া, নির্বাচনী অফিস ও প্রচারণা কাজে প্রয়োজন পড়ছে যুবকদের। এতে স্বল্প সময়ের জন্য হলেও যুবকদের চাহিদা বেড়ে গেছে।
রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্র জানায়, এবারের কেসিসি নির্বাচনে ৩ জন মেয়র প্রার্থী, ১৩৭ জন সাধারণ আসনের কাউন্সিলর এবং ৪৫ জন সংরক্ষিত আসনের প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন।
খুলনা জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে খুলনায় ভোটার ছিল ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। এবার মোট ভোটার ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮২৮ জন, মহিলা ভোটার ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৪ জন।এবারের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ২৮৯টি আর বুথ ১ হাজার ৭৩২টি।
এদিকে কেসিসি নির্বাচনে খুলনা মহানগর বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কিছুসংখ্যাক নেতাকর্মীদের সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমন সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে অভিযুক্ত কয়েকজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে গত বুধবার (৭ জুন) মহানগর বিএনপি প্রদত্ত বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সত্ত্বেও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৯জন কাউন্সিলর প্রার্থীকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।
মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. শফিকুল আলম মনা ও সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন যৌথবিবৃতিতে দলের কোন নেতাকর্মী নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ পেলে তাৎক্ষনিক বিএনপি অফিসের দপ্তরে তাদের নাম, সংগঠনের নামসহ প্রেরণ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।
এবারের কেসিসি নির্বাচনে জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু ২২ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন।
অপরদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মো. আব্দুল আউয়াল ২৮ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। নির্বাচনী ইশতেহারে তিনি খুলনাকে আন্তর্জাতিক মানের এবং আধুনিক ও শান্তির নগরী গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। নির্বাচিত হতে পারলে সিটি করপোরেশনকে দুর্নীতি ও টেন্ডারবাজি মুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন।
পরিকল্পিত, পরিচ্ছন্ন-সুন্দর, স্বাস্থ্যকর, উন্নত স্মার্ট খুলনা গড়ার লক্ষ্যে আ.লীগ মনোনীত ও ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক ৪০ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন।
অপরদিকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে নাগরিক পরামর্শক কমিটি গঠন, তিন মাস পর পর মুখোমুখি অনুষ্ঠান, হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধি না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইশতেহার দিলেন খুলনা সিটি নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান মুশফিক।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।