পরেশ দেবনাথ, কেশবপুর (যশোর)// যশোরের কেশবপুর উপজেলার ঘের ও পুকুর থেকে উৎপাদিত মাছ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি এবং বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুরে ৪ হাজার ৬৫৮টি মাছের ঘের বা খামার রয়েছে যার আয়তন প্রায় ৭ হাজার ৪৪৯ হেক্টর। এছাড়া পুকুর রয়েছে ৬ হাজার ৬৪০টি যার আয়তন প্রায় ৬৯৮ হেক্টর। গত বছর এসব জলাশয় থেকে রুই, মৃগেল, কাতল, পাবদা, বাটা, সিলভার কার্প, গ্রাস কার্প, পাঙ্গাশ, তেলাপিয়া, টাকি, কৈ, শিং, বাইম, পুঁটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৩৩ হাজার ৮২০ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়। এছাড়া গলদা চিংড়ি ২ হাজার ১৮০, বাগদা চিংড়ি ২৪৫, কুঁচিয়া শূন্য দশমিক এক ও শুঁটকি দেড় মেট্রিক টন উৎপাদিত হয়। এ উপজেলায় মাছের চাহিদা ৬ হাজার ১০ মেট্রিক টন। অপরদিকে ২৭ মাছ চাষি ৫৪ হেক্টর আয়তনের জলাশয়ে ২ দশমিক ২২ কোটি পোনা উৎপাদন করেন। চলতি বছর সাদা মাছ প্রায় ৩৪ হাজার ৫০০, গলদা চিংড়ি ২ হাজার ২৫০, বাগদা চিংড়ি ২৮০ ও শুঁটকি ৫ মেট্রিক টন উৎপাদিত হতে পারে। কেশবপুর শহরের পাইকারি মৎস্য আড়ত, কাটাখালি ও পাঁজিয়া আড়তে নেওয়া হয় উৎপাদিত এসব মাছ। এছাড়াও যশোরের বারোবাজার, মণিরামপুর, কপালিয়া, খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর, আঠারো মাইলসহ বিভিন্ন আড়তে মাছ পাইকারি বিক্রি করা হয়।
সেখান থেকে এসব মাছ ঢাকা, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম সিলেট, রংপুর, বগুড়া, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ও ভারতে রপ্তানি করা হয়। কেশবপুর খুচরা মাছ বাজারের সভাপতি আতিয়ার রহমান জানান, আড়তের শ্রমিকদের মাধ্যমে মাছ বাজারজাতকরণের উপযোগী করে চাহিদা অনুযায়ী ট্রাকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। এছাড়া আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে সপ্তাহে ৫ দিন প্রায় ২০০ মণ করে মাছ ভারতে রপ্তানি হয়। কেশবপুর পাইকারি মৎস্য আড়তের সভাপতি আবদুল হান্নান বিশ্বাস বলেন, প্রতিদিন এখানকার পাইকারি আড়তের ২২ ব্যবসায়ীর কাছে ঘের ও পুকুরের প্রায় ২ হাজার মণ মাছ আসে। প্রায় দেড় থেকে ২ কোটি টাকার মাছ প্রতিদিন বিক্রি হয়। উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর কবীর বলেন, এ উপজেলায় ৪ হাজার ৬৫৮টি মাছের ঘের ও ৬ হাজার ৬৪০টি পুকুর রয়েছে। মাছ রপ্তানি করে গত বছর আয় হয়েছে প্রায় ৭৫৭ কোটি টাকা। চলতি বছর প্রায় ৮৫০ কোটি টাকার মাছ বিক্রি হতে পারে।
এ উপজেলায় মৎস্যচাষী রয়েছেন প্রায় সাড়ে ১১ হাজার মাছের খামারে খণ্ডকালীন কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার জনের। এছাড়া উপজেলার তিনটি মৎস্য আড়তে প্রায় ৭০০ শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সজীব সাহা বলেন, চলতি বছর এ উপজেলায় মাছ চাষের জন্য ঘের ও পুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়নি।
উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষিদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ প্রদান করে তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ করায় মাছের উৎপাদন বেড়েছে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।