অতনু চৌধুরী(রাজু)বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি ||
শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে ২৫ বছর বয়সে বিয়ের পিড়িতে বসলেন রামপাল উপজেলার শ্রিফলতলা গ্রামের (খর্বাকৃত) যুবক আব্বাস। অধম্য ইচ্ছা শক্তি থাকায় প্রতিবন্ধকতা দমিয়ে রাখতে পারেনি আব্বাসের (২৫)শিক্ষা জীবনকেও । সংগ্রামী জীবনে শিক্ষা ক্ষেত্রে একের পর এক সফলতা অর্জন করে এবার দাম্পত্য জীবনে পা দিয়েছেন তিনি। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্বেও এ সংগ্রামী জীবনে সঙ্গী হিসেবে আব্বাসকে বেছে নিয়েছেন খুলনার ডাকবাংলা এলাকার সেলিম গাজীর মেয়ে (খর্বাকৃত) সোনিয়া খাতুন (২০)।
তিন ফুট দুই ইঞ্চি,উচ্চতা থাকায় সকলেই হাসি ঠাট্রা করতো তাকে নিয়ে। আব্বাস বর্তমানে রামপাল সরকারি কলেজের ডিগ্রি ১ম বর্ষের ছাত্র।
আব্বাস বলেন,আমি শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় অনেকেই আমাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে কথা বলতো, কিন্তু আমি কখনো কারো কথা নিয়ে মাথা ঘামাই নাই। অনেকজনেই বলেছে আমি বিয়ে করতে পারব না। আমাকে দিয়ে কিছুই হবে না। তবে এখন থেকে প্রায় দেড় বছর আগে আমার পরিবার এই সোনিয়াকে পছন্দ করে রাখছিলো। চলতি বছরের (২০ অক্টোবর) আমার দুই দুলা ভাইসহ আমি সোনিয়াকে দেখতে যাই এবং তাকে আমার পছন্দ হয়।মেয়ের বাড়ির অনুরোধে ওইখানে রেজিস্ট্রি করে আসি।গত বৃহস্পতিবার ২ নভেম্বর আমার গায়ে হলুদ হয় এবং গতকাল শুক্রবার আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে বরযাত্রী নিয়ে বৌ আনতে কনে বাড়ি রওনা হই।
পরিবারের পছন্দতে বিয়ে করেছি আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমরা যেন সুন্দর ভাবে জীবন যাপন করতে পারি।
আব্বাসের মা নাজমা বেগম বলেন,ছোটবেলায় এক হাতে বই আর এক হাতে ছেলেকে নিয়ে স্কুলে গিয়েছি। অনেক কষ্টে মানুষের কথা শুনে ছেলে কে লেখাপড়া শিখিয়েছে। এলাকার অনেক লোকেরা এ নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে বলতো ওকে কে মেয়ে দেবে? ওতো বিয়ে করতে পারবেনা না ও কিভাবে বিয়ে করবে? অনেক কষ্ট করে কথাগুলো সহ্য করতাম। আমার দুই মেয়ে এবং একমাত্র ছেলে আব্বাস। সেই ছেলেকে লেখাপড়া করিয়ে বিয়ে করাচ্ছি আপনারা সবাই দোয়া করবেন ওরা যেন সুখে শান্তিতে থাকতে পারে।
আব্বাসের বোনের ছেলে সাইফুল বলেন,আমার মামার বিয়ে খুব আনন্দ ফুর্তি করতেছি খুব ভালো লেগেছে আমাদের। আমার মামার জন্য সকলেই দোয়া করবেন তাদের দাম্পত্য জীবন যেন সুখের হয়।
রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি),এস. এম. আশরাফুল আলম বলেন,রামপাল শ্রীফলতলা গ্রামের আব্বাস শেখ রামপাল সরকারি কলেজের ডিগ্রী প্রথম বর্ষের ছাত্র। তার একটি বিয়ের সম্বন্ধ হয় মেয়েটিও শারীরিক প্রতিবন্ধী বলে জানতে পেরেছি। তার বিয়েতে সে নিজে থানায় এসে আমাকে দাওয়াত দিয়ে গেছে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।